মো : মুক্তাদির হোসেন।
স্টাফ রিপোর্টার।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে স্বামী কর্তৃক পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পাষন্ড হত্যাকারী মো. মিজানুর রহমান সুমনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১। ঘটনাটি ১৯ মে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পূর্বাচলে ঘটেছে। সুমন কুমিল্লার মুরাদনগর থানা সদরের মফিজুল ইসলামের ছেলে। সে ঢাকার তুরাগ থানার রানাভোলা এলাকায় প্রথম স্ত্রী ও একই এলাকার নয়াপাড়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। সুমন উবারে গাড়ি চালাতেন।
র্যাব-১ থেকে জানানো হয়, প্রথম স্ত্রী শিমু ও দেড় বছরের ছোট মেয়ে এবং মা সহ তুরাগ থানাধীন রানাভোলা নামক স্থানে ভাড়াটে হিসাবে বসবাস করলেও দেড় থেকে দু’বছর পূর্বে গার্মেন্টস কর্মী বিলকিসকে গোপনে বিয়ে করে নয়াপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া করে রাখেন। উবারের গাড়ি চালিয়ে স্বল্প আয়ে তার দুটি সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। গত তিন থেকে চার মাস ধরে দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিস তার কাছে একটু বেশি টাকা দাবি করা শুরু করেন। ফলে উভয়ের মধ্যে তিক্ততা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সুমন তার দ্বিতীয় স্ত্রী বিলকিসকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। গত ১৯ মে দুপুরের পর সুমন বিলকিসকে নিয়ে পূর্বাচলে ঘুরতে যান। পথে চা পান করেন এবং জায়গা ও সুযোগ খুঁজতে থাকেন। বিকেল ৪ টার দিকে ২৪নং সেক্টরের একটি জঙ্গল এলাকায় নিয়ে যান। জায়গাটা খুব নিরিবিলি। এরপর সেখানে গাড়ি থামান। বিলকিস গাড়িতে বসে থাকেন এবং সুমন গাড়ি থেকে বের হয়ে পাইপ দিয়ে পেট্রোল বের করে একটি বোতলে ভরেন। গাড়িটি তখনও চালু অবস্থায় ছিল। কিছুক্ষণ পর বিলকিস গাড়ি থেকে বের হয়। ওই সময় সুমন বোতলের পেট্রোল বিলকিসের গায়ে ছিটিয়ে দেন এবং ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে দ্রুত গায়ে ছুঁড়ে মারেন। আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে। বিলকিস বাঁচার জন্য জোরে জোরে চিৎকার শুরু করেন। কিন্তু সুমন গাড়ি নিয়ে দ্রুত সরে পড়েন। বিলকিসের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং তাকে একটি ড্রেনের মধ্য থেকে উদ্ধার করেন তারা। পরে প্রথমে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন ২০ মে সকালে মারা যান বিলকিস। এ ঘটনার পর সুমন গা ঢাকা দেন। গ্রেফতার এড়াতে তিনি গাজীপুরে চলে যান। মঙ্গলবার (২১ মে) বিকালে গাজীপুর মহানগরের বাসন নাওজোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার (২২ মে) র্যাব-১ এর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান র্যাব-১ অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মোশতাক আহমেদ। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।