স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জের ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের দশঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ২১ মে ২০২৪ ইং তারিখে জেলা প্রাথমকি শিক্ষা অফিসার বরাবর গ্রামবাসীর পক্ষে মো. ফজল উদ্দিনসহ ৮ জন স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, দশঘর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে বিদ্যালয়ে অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। তার মন পছন্দসই লোক দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করে ব্যাক্তিসার্থ চরিতার্থ করে আসছেন। বর্তমান নতুন কমিটির সভাপতির নামে যৌথ ব্যাংক হিসাব ট্রান্সফার করার নিয়ম থাকলেও তা না করে বিগত কমিটির সভাপতির নামীয় ব্যাংক হিসাবে লেনদেন করে আসছেন বশির উদ্দিন।
বর্তমান সভাপতিকে কোনো কিছু অবগত না করেই অবৈধ স্বার্থ হাসিলের লক্ষে তার মন ইচ্ছাদিন প্রতিষ্টানের অর্থের লেনদেন করে আসছেন। এছাড়াাও প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন বর্তমান সভাপতির অজান্তে বিদ্যালয়েরর একটি পরিত্যাক্ত ভবন প্রকাশ্যে নিলামে ৭৫,০০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করেন। এই টাকা সরকারী ফান্ডে জমা দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গ্রামবাসী জানতে পারেন প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন ২৩,৫০০ টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারী ফান্ডে জমা দিয়েছেন। বাকী ৫১,৫০০ টাকার বিষয়ে গ্রামবাসী জানতে চাইলে তিনি বলেন এসব বিষয়ে আপনাদের জানার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে গ্রামবাসী জানতে পারেন ৫১,৫০০ টাকা প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিনের নিকঠ জমা রয়েছে। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিনকে জানান গ্রামবাসী। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন আমি বিভিন্ন সময় উপজেলা প্রাথমকি শিক্ষা অফিসার (টিও) সহ অনেককেই চপেটাঘাত করেছি এসব আমাকে বলে কোনো লাভ নেই। এ বক্তব্যের একটি ভিডিও চিত্র গ্রামবাসীর কাছে সংরক্ষিত রয়েছে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ¯িøপ ফান্ড, রুটিন মেন্টেইনেন্সের টাকা বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে না লাগিয়ে প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে আসছেন। প্রতি বছর প্রাক প্রাথমিকের বরাদ্দের টাকা আসলেও শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো ধরনের খেলনা সামগ্রী ক্রয় না করেই তিনি টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে গ্রামবাসী জানতে চাইলে বশির উদ্দিন গ্রামবাসীকে মামলা হামলার হুমকী ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলেন উপজেলা শিক্ষা কমিটি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমার চাচাত ভাই হয়। বেশি কথা বলে লাভ নেই। আমাকে কেউ কিছু করতে পারবেন না। এছাড়াও তিনি সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি আইন পেশাযও নিয়োজিত রয়েছেন। এ বিষয়ে বিগত সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এমন কি প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিনের জাতীয় পরিচয়পত্রে তার পিতার নাম হারিছ আলী হলেও শিক্ষক নিয়োগ ও নামজারী মোকদ্দমা নং ২৩৩৬/২০০৮ইং মূলে তার পিতার নাম ইছাক আলী উল্লেখ করা হয়েছে। ইছাক আলী ও হারিছ আলী পৃথকভাবে উল্লেখ থাকায় তার শিক্ষা সনদ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বশির আহমদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহন লাল দাস বলেন, গতকাল (বুধবার) বন্ধ থাকায় অফিসে যাওয়া হয়নি। আগামী রোববার অফিসে গিয়ে বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।