উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ
নওগাঁ সদরের চোয়ারপুর ঘোষপাড়া এলাকায় শ্রী শ্রী কালী মন্দিরের কালী প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দ্রুত প্রতিমা বিসর্জন দিতে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পুুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রতিমা ভাংচুরের দ্রুত বিচার দাবি জানানোর পাশাপাশি সনাতনীলম্বীদের (হিন্দু) মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও মন্দির কমিটির নেতারা বলেন, সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর ইউনিয়নের চোয়ারপুর মোড়ে চেয়ারপুর সার্বজনীন শ্রী শ্রী কালীমন্দিরে রোববার রাতের আঁধারে কে বা কারা মন্দিরের বাঁশের বেড়ার দরজা সরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে কালী প্রতিমা ভাঙচুর করে। দুর্বৃত্তরা কালী প্রতিমার গলার অংশ থেকে মাথা কেটে নিয়ে চলে গেছে। সোমবার সকালে স্থানীয় এক নারী মন্দিরে পূজা দিতে এসে প্রতিমা ভাঙচুর দেখতে পেয়ে মন্দির কমিটির লোকজনকে জানান। পরে মন্দিরে এসে সবাই এ ঘটনা দেখতে পান। তবে কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তা শনাক্ত করতে পারেনি কেউ।
চোয়ারপুর কালী মন্দির কমিটির সভাপতি ভবেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা তা জানি না। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার জানার পরপরই সোমবার সকালে বিষয়টি আমরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশকে জানিয়েছি। ঘটনা জানার পর ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে গতকাল সোমবার সারা দিন এ ব্যাপারে পুলিশকে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। পুলিশের কেউ মন্দির পরিদর্শনেও আসেনি। তবে আজকে ঘটনাটি স্থানীয় কিছু গণমার্ধমকর্মীরা জানার পর প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফোন দিলে আজ মঙ্গলবার দুপূরে পুলিশের কয়েকজন সদস্য এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার চাপ দিয়েছেন। থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
কীর্তিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় হিন্দু-মুসলিম ভাই ও বোনেরা সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করে আসছে। সেই সম্প্রীতিকে নষ্ট করার অপপ্রয়াসের অংশ হিসেবে প্রতিমা ভাঙচুর করে থাকতে পারে কোনো চক্র। ঘটনা জানার পরপরই আমি থানা পুলিশকে অবহিত করেছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।’
নওগাঁ জেলা পূজা উদযাপন কমিটি সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিভাস মজুমদার জানান, ঘটনাটি কিছুই জানা নেই। ঘটনা জেনে বিস্তারিত বলতে পারবো ।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক চাপ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে সেখানে দুইজন পুলিশ সদস্যকে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান পরিচালনা করা হবে।