মো লুৎফুর রহমান রাকিব সৌদি আরব জেদ্দা থেকে।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে অধিকতর স্বচ্ছতা, শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক উন্নয়ন, মালিক ও শ্রমিক উভয়পক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার জন্য সৌদি সরকারের সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সাথে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি সরকার। আজ সৌদি মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী উপমন্ত্রী ফয়সাল আল দাফায়ান তাঁর কার্যালয়ে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান মোঃ আবুল হাসান মৃধার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও ওয়ার্কশপে আলোচনায় এই আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে সৌদি আরবে কর্মরত বিদেশী শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যাই সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম ও কাজের প্রতি আন্তরিকতার কারণেই সৌদি শ্রম বাজারে তাদের চাহিদা বাড়ছে।
সহকারী উপমন্ত্রী বলেন ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে যে সকল প্রকল্প হাতে নিয়েছে তাতে বাংলাদেশের বিশাল এই জনশক্তি সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বলে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন। তিনি বাংলাদেশী প্রবাসী কর্মীদের তাদের গৃহীত বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমের সাথে পরিচিত করতে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন। ওয়ার্কশপে বিভিন্ন সেবার ডিজিটালাইজড সিস্টেমে কি কি সুবিধা সুবিধা রয়েছে এবং তা থেকে প্রবাসী কর্মীগণ কিভাবে সেই সকল সুবিধা কাজে লাগিয়ে উপকৃত হতে পারেন সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সভায় সৌদি আরবে বাংলাদেশী কর্মীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও তাদের দেখভালের জন্য মিশন উপপ্রধান সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কাজ ও ইকামার নিশ্চয়তাসহ ভিসা ইস্যুকরণ, চুক্তি শেষে নারী কর্মীদের ফেরত প্রেরণ, ইকামার মেয়াদ শেষ হওয়া কর্মীদের দ্রুত দেশে প্রত্যাবর্তন এবং মুসানিদ সিস্টেমে বাংলাদেশী রিক্রুটিং এজেন্সির অভিযোগ নিষ্পত্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সৌদি আরবের সহযোগিতা কামনা করেন। ওয়ার্কশপে সৌদি সৌদি মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে সহকারী উপমন্ত্রী আরো জানান সৌদি শ্রম বাজারে আরো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য সৌদি সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শ্রমিকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি ১২০০ শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যারা ২০২৩ সালে প্রায় ১০ লক্ষ অভিযোগের সমধান করেন মর্মে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, সৌদি সরকার সৌদি আরবকে একটি আধুনিক শ্রম বান্ধব দেশে উন্নীত করতে শ্রমিকদের নিয়োগ সহ পুরো প্রক্রিয়াকে অটোমেশন করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের গৃহীত এসব উদ্যোগে বাস্তবায়নে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করলে হাসান মৃধা বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেনা। এছাড়াও তিনি শ্রমিকদের সমস্যার তাৎক্ষনিক সমাধানের জন্য সৌদি মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পয়েন্ট নির্ধারন করতে অনুরোধ জানালে সহকারী উপমন্ত্রী সহমত প্রকাশ করেন।
উক্ত ওয়ার্কশপে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সিলর(শ্রম) মুহাম্মদ রেজায়ে রাব্বী, কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং দ্বিতীয় সচিব(প্রেস) আসাদুজ্জামান খান উপস্থিত ছিলেন।