মো:সুজন আহমেদ
বিশেষ সংবাদদাতা
ঢাকা জেলার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় এক নারী পোশাক শ্রমিকের ২ লক্ষ টাকা কোম্পানি থেকে পাইয়ে দেয়ার কথা বলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স (ইউএফজিডব্লিউ) নামক একটি শ্রমিক সংগঠনের সাভার-আশুলিয়ার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা ইমন শিকদারের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজিব। এর আগে গেল শুক্রবার রাতে প্রতিকার ও এই ঘটনার সঠিক বিচার চেয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ডেকো ডিজাইনস লিমিটেড কারখানা থেকে চাকুরীচ্যুত ভুক্তভোগী নারী পোশাক শ্রমিক রুনা বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত কারখানায় জুনিয়র সুইন মেশিন অপারেটর পদে বিগত ৫ বছর তিন মাস যাবৎ চাকরি করেন ভুক্তভোগী রুনা বেগম। উক্ত কারখানার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এপিএম শাহআলম, এডমিন হাফিজ ও হাসান গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ২৮ তারিখে কোন পূর্বের নোটিশ ছাড়াই এমনকি চলতি মাসের বেতন পরিশোধ না করে জোর পূর্বক রিজাইন লেটারে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে চাকুরী হতে অব্যাহতি দিযে দেয়। পরবর্তীতে কারখানায় সকল পাওনা টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন তালবাহানা করে ঘুরাতে থাকে। পরবর্তীতে কারখানা থেকে নায্য পাওনাদি উত্তোলনের জন্য ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স (ইউএফজিডব্লিউ) নামক একটি শ্রমিক সংগঠনের সাভার-আশুলিয়ার আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা ইমন শিকদারের নিকট একটি অভিযোগ দায়ের করেন করেন ভুক্তভোগী রুনা বেগম। অভিযোগের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন সমাধান পাইনি ভুক্তভোগী নারী শ্রমিক উল্টো শ্রমিক নেতা ধারা হুমকির শিকার তিনি।
ভুক্তভোগী নারী শ্রমিক রুনা বেগম বলেন, আমি একজন সাধারণ শ্রমিক আমাদের কোন সমস্যা হলে আমরা শ্রমিক সংগঠনে যাই কিন্তু তারা আমাদের রক্ষার নামে আমাদের টাকা লুটে খাচ্ছে মালিকের দালালি করছে আমরা যাবো কোথায়? কার কাছে বিচার চাইবো? আমি চাকুরী হারিয়ে সঠিক পাওনা আদায় করার জন্য আশুলিয়ার শ্রমিক নেতা ইমন শিকদারের কাছে অভিযোগ করি তিনি আমাকে শ্রম আইনের ২৬ ধারা মোতাবেক কারখানা থেকে ২ লক্ষ টাকা তুলে দেয়ার কথা বলে আমাকে ৬ মাস যাবৎ ঘুরাচ্ছে। সে আমার করা অভিযোগের কথা বলে কারখানা থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এসে আমাকে ১২ হাজার টাকা নিতে জোর করছে যা আমার রানিং পাওনা বেতনও হয়না। আমি ৫ বছরের বেশি চাকরি করেছি সেখানে আমি অনেক টাকা পাওয়ার কথা। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুলিয়ার একাধিক শ্রমিক নেতা জানান, এই শ্রমিক নেতা ইমন শিকদার অল্প দিনেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। শ্রমিক নেতৃত্বে তেমন কোন ইনকাম নাই তারপরও তিনি শ্রমিক রাজনৈতিতে এসেই আশুলিয়ার মত এলাকায় বাড়ি গাড়ির মালিক বনে গেছেন। এর পর থেকেই সে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তার এই আয়ের উৎস শ্রমিকদের ঠকিয়ে মালিকের দালালি করে টাকা ইনকাম করা।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা ইমন শিকদার বলেন, শ্রমিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমি কাখানায় গিয়ে কথা বলি তারা পাওনাদি বাবদ ২৬ হাজার টাকা দিতে চায় তখন শ্রমিক তা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর থেকে সে আমার সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। তাছাড়া ওই নারী শ্রমিক যে টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন আমি ওই কারখানা থেকে কোন টাকা আনিনি। অভিযোগের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কেন তিনি শ্রম আদালতে মামলা করানো বা পরবর্তীতে কোন সহযোগিতা করেননি সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেননি।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজিব জানান, উক্ত বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।