1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
ঋণ পরিশোধ করে খারাপ ব্যবসা বন্ধ করে দিবো : রিসোর্ট পরিচালক - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২:১৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
নড়াইল ডিবি কর্তৃক ৩০(ত্রিশ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার ০১ নন্দীগ্রামে সাংবাদিকদের সাথে জামায়াতের এমপি প্রার্থী ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ’র মতবিনিময় ভারত সভার দেড়শো বছর পূর্তি অনুষ্ঠিত হয়, একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে রাজাপুরে ব্যাক্তি উদ্যোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে পাকা সড়ক পুনর্নির্মাণ চট্টগ্রাম নগরীর ৩০ স্পটে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি জামালপুর ডি’ভি পুলিশের অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ৩ মাদক কারবারি গ্রেফতার ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট’সহ এক নারী আটক দেড় যুগেও উন্নয়নের কোনো ছোয়া লাগেনি মেহেরুন্নেছা মহিলা কলেজে বহড়ুক্ষেএ গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবগদের উপস্তিতে বহরু হাসেমপুর হিউম্যান ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে কোর্স ফ্রি ছাড়া কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন খাগড়াছড়িতে প্রতিপক্ষের গুলিতে গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কর্মী নিহত

ঋণ পরিশোধ করে খারাপ ব্যবসা বন্ধ করে দিবো : রিসোর্ট পরিচালক

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

 

> রিসোর্টের অনুমতি নিয়ে পতিতাবৃত্তি

> স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের রুমভাড়া

> ১০ বার অভিযানে প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন

> কৌশল পরিবর্তন

> প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকায় স্থানীয়দের ক্ষোভ

মোঃ মোবাশ্বির হোসেন হৃদয়

দীর্ঘদিন যাবত গাজীপুরের পুষ্পদাম রিসোর্টে দেহব্যবসা করছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশল পরিবর্তন করে প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের ম্যানেজ করেই চলছে এ ব্যবসা। দেহব্যবসার বিষয়টি ইতিপূর্বে কখনোই স্বীকার করেন নি কর্তৃপক্ষ, তবে এবার কর্তৃপক্ষের একজন দেহব্যবসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরিচালনার দায়িত্বে থাকা (মালিকের বোনজামাই) নজরুল ইসলাম বলেন,
“রিসোর্টে দেহব্যবসা চালু রাখলে মানুষ খারাপ বলে, আমি ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, এসব খারাপ ব্যবসা বেশিদিন করবো না। কিছু ঋণ আছে রিসোর্টের, এগুলো পরিশোধের পর এসব খারাপ ব্যবসা বন্ধ করে দিবো’।

শুক্রবার ‘৩১ মে ২০২৪’ সারাদিনব্যাপী গাজীপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত পুষ্পদাম রিসোর্টে ২৯ জোড়া যুবক-যুবতী ও কিশোর কিশোরী প্রবেশ করে। তাদের সবাইকে রুমভাড়া দেয় রিসোর্টটির পরিচালক নজরুল ইসলাম। প্রত্যেকের থেকে রুমভাড়া বাবদ নেয়া হয় সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা। এভাবে রুমভাড়ার মাধ্যমে এলাকার এবং বহিরাগত যুবক-যুবতী ও কিশোর-কিশোরীদের অবৈধ মেলামেশায় সহায়তা করছে রিসোর্টটির কর্তৃপক্ষ।

> কৌশল পরিবর্তন:

অন্যান্য সময়ের চেয়ে এবার কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন পরিচালক নজরুল ইসলাম। এর আগে প্রশাসনের অভিযানের খবর পেলে পেছনের গোপন দরজা দিয়ে বের করে দেয়া হতো। প্রবেশ করানো হতো পেছনের দরজা দিয়েই। এবার রিসোর্টটির মূল ফটকে বন্ধ রাখার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেস্টুরেন্টের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করাতে দেখা গিয়েছে। বের করা হচ্ছে পেছনের দরজা, মূল ফটক এবং রেস্টুরেন্টের ভেতর দিয়ে। পরিবেশ বুঝে তারপর সুবিধামতো স্থান দিয়ে বের করা হচ্ছে।

> রিসোর্টের অনুমতি নিয়ে পতিতাবৃত্তি:

১৯৮৮ সালে নির্মিত এই রিসোর্টটির রিসোর্টের অনুমতি রয়েছে। তবে পতিতাবৃত্তির কোনো অনুমতি নেই। তবে নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা না করেই প্রশাসন এবং গণমাধ্যমকর্মীদেরকে উৎকোচ দিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। রিসোর্ট কর্তৃপক্ষের রয়েছে নিজস্ব যৌনকর্মী। খদ্দেরদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনা করে বাইরে থেকে তাদেরকে ফোন করে আনা হয়। পুষ্পদাম রিসোর্টের অনুমতি নিয়ে পতিতাবৃত্তি সম্পূর্ণ অবৈধ।

> স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের রুমভাড়া:

বাহিরের খদ্দের এবং পতিতাবৃত্তিতে সহায়তা ছাড়াও উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের নিয়মিত রুমভাড়া দিচ্ছে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। এতে সামাজিক অবক্ষয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে অপরাধ।

> এক যুগে ১০ বার অভিযানে প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন:

রিসোর্টের মালিকের নাম শামসুল আলম চৌধুরী (বাবুল)। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচালক রেখে অবৈধ ব্যবসা অব্যাহত রেখেছেন। রিসোর্টটিতে গত ১ যুগে প্রায় ১০ বার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রত্যেকবার অভিযানে অসামাজিক কার্যকলাপের প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন।

গত (১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) তারিখে ভালোবাসা দিবসে পুষ্পদাম রিসোর্ট থেকে ৫ পতিতা ও ৫ খদ্দেরকে গ্রেফতার করেছিল জয়দেবপুর থানা পুলিশ। ওই সময় জয়দেবপুর থানার এসআই বাছেদ মিয়া গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নামে মামলা দিয়ে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ সন্ধ্যায় গাজীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জয়দেবপুর থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল কোর্ট টিম একটি অভিযান পরিচালনা করেন। মোবাইল কোর্টের উপস্থিতি টের পেয়ে পুষ্পদাম রিসোর্টের ভেতরের বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয় রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে পুরো রিসোর্ট এলাকায় অন্ধকার নেমে আসে। এই সুযোগে রিসোর্টে কর্মরত লোকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে মোবাইল ফোনের ফ্লাশলাইট ব্যবহার করে রিসোর্টের ভেতরে থাকা আবাসিক ভবনগুলোতে পুলিশ তল্লাশি চালায়। এ সময় ভবনের বিভিন্ন কক্ষে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা ৪ জন ছেলে এবং ৪ জন মেয়েসহ মোট ৮ জন হাতেনাতে আটক হয়।

এর আগে (২৯ মে ২০২০) তারিখে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে জয়দেবপুর থানা পুলিশ পতিতা ও দালালসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করে। ওই সময় পুলিশের ভাষ্য ছিল, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জয়দেবপুর থানা পুলিশের একটি দল পুষ্পদাম রিসোর্টে এ অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৪ জন নারী এবং ৩ জন দালাল রয়েছে। তাদের সবাইকে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তাদের এই অবৈধ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা কর্মী ও একজন কর্মচারী।

> প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকায় স্থানীয়দের ক্ষোভ:

একাধিক অভিযান, মামলা এবং অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ার পরও প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এতে পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যরা। রিসোর্টটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সেইসঙ্গে পুলিশের যেসব সদস্যরা মদদ দিচ্ছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে বিভাগীয় শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানান তারা।

এসব বিষয়ে পুষ্পদাম রিসোর্টের মালিক শামসুল আলম চৌধুরীকে (১ জুন ২০২৪) দুপুরে মুঠোফোনে একধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেন নি, ক্ষুদে বার্তা পাঠানোর পরও কোনো উত্তর দেন নি।

এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইবরাহিম খলিল বলেন, ‘পুষ্পদাম রিসোর্টে আগে এক সময় অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। আমি যতটুকু জানি, বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। সবসময় আমাদের পুলিশ সদস্যরা নজরে রাখেন। আপনি অবগত করেছেন, আমি পুলিশ পাঠিয়ে তল্লাশি চালাবো।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি