জামাল উদ্দীন – কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের পেন্ডলপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে করে ৪০ হাজার ইয়াবা ও একটি প্রাইভেটকার জব্দ করেছে র্যাব-১৫ এর সদস্যরা। এসময় একজন নারী মাদক কারবারীকে আটক করা হয় ।
আটককৃত মাদক কারবারী হলেন, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পেন্ডল পাড়ার ফরিদ আহম্মদের মেয়ে ও আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার (২২)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া)
মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান,রবিবার (৯ জুন) রাতে র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী মাদকদ্রব্যসহ প্রাইভেটকার যোগে টেকনাফ বাজার থানা মোড় হয়ে সাবরাং বাজারের দিকে যাচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, সিপিসি-১ টেকনাফ ক্যাম্পের আভিযানিক দল প্রাইভেটকারটি সনাক্তকরণসহ মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের আটকের জন্য গাড়িটি’কে থামানোর লক্ষ্যে বারংবার সংকেত দিতে থাকে। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে গাড়িটি দ্রুত গতিতে চালানো এবং একপর্যায়ে টেকনাফ থানাধীন সাবরাং ইউনিয়নের পেন্ডলপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা প্রাইভেটকারটি রেখে পালানোর চেষ্টাকালে বাচ্চাসহ একজন মাদক কারবারীকে আটক করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত ব্যক্তি তার নাম ঠিকানা প্রকাশসহ তার অপর ৩ সহযোগী গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত পালিয়েছে মর্মে স্বীকার করে। এছাড়াও উক্ত প্রাইভেটকারের পিছনের সিটের ভিতর মাদকদ্রব্য ইয়াবা লুকায়িত অবস্থায় রয়েছে বলে জানায়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে বিধি মোতাবেক আটককৃত ব্যক্তির দেহ ও প্রাইভেটকারটি তল্লাশী করে প্রাইভেটকারের পিছনের সিটের ভিতর থেকে সর্বমোট ৪০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং মাদক পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি (যার রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো-গ ৩১-০১৩৩) জব্দ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, আটককৃত এবং পলাতক মাদক কারবারী দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত । তারা পরস্পর যোগসাজসে মাদকদ্রব্য ইয়াবা পার্শ্ববর্তী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করে নিজেদের হেফাজতে মজুদ করে থাকে। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আটক এড়াতে মজুদকৃত ইয়াবার চালান এক স্থান হতে অন্যত্র নিয়ে বিক্রির জন্য মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন যানবাহনের ব্যবহার করতো। চক্রটি নিজেরা আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ার জন্য নানাবিধ অভিনব পন্থা অবলম্বন করে দীর্ঘদিন যাবত কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ইয়াবা বিক্রয় করে আসছিল বলে জানায়।
উদ্ধারকৃত ইয়াবাসহ আটককৃত এবং পলাতক মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইয়ার বহনকারী সাদিয়া আটক হলেও মূল গডফাদার আবুল মনজুর আটক হয়নি, এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখ দিয়েছে।
র্যাবের হাতে চুনুপুটি সাদিয়া আকতার (২২) নামে একজন মহিলা মাদক নিয়ে আটক হলেও ইয়াবার মুল গডফাদার আবুল মনজুর(৩৩) এখনও আটক হয়নি। উপজেলার সাবরাং পেন্ডল পাড়ার বাসিন্দা ইয়াবা বহনকারী সাদিয়া আকতার গত ৯ জুন র্যাবের হাতে আটক হয়। উল্লেখ্য যে র্যাব দীর্ঘদিন যাবৎ আবুল মনজুর কে আটক করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন । কিন্তু সে কৌশলে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করতে সক্ষম হয়নি। সে দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা কারবারের সাথে জড়িত রয়েছে বলে সুত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, মনজুর বারংবার ইয়াবার বড় বড় চালান নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে পুনরায় ইয়াবা কারবার চালিয়ে আসছিল।সে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্র ছায়ায় এ কারবার চালিয়ে আসছে। তার পুরো পরিবারের সদস্য যথাক্রমে আবু সিদ্দিক, আনোয়ার ইয়াবা কারবারে জড়িত। তাদের কে অনতি বিলম্বে আটক করা না গেলে এলাকার যুব সমাজ ছাত্র সমাজ ধবংসের দ্বার প্রান্তে চলে যাবে। এনিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ বলে এলাকার সচেতন লোকজন জানিয়েছেন।