উজ্জ্বল কুমার সরকার
আজ ১৮ জুন শিল্পী জাহেদুর রহিম (১৯৩৫–১৮ জুন,১৯৭৮) এর প্রয়াণ দিবস। জাহেদুর রহিমের জন্ম বগুড়া জেলা শহরে। পৈতৃক নিবাস ছিল পাবনা জেলার শাহজাদপুর উপজেলার লোচনাপাড়া গ্রামে।পিতা আবদুর রহিম। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।রহিমের কর্মজীবনের শুরু হয় প্রথমে ফিলিপস কোম্পানিতে।পরে শিক্ষা বিভাগে চাকরিতে যোগদান করেন। কিন্তু সঙ্গীতে আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি শেষপর্যন্তু সঙ্গীত জগতেই প্রবেশ করেন। তার সঙ্গীত শিক্ষার গুরু ছিলেন আতিকুল ইসলাম। বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে তিনি আতিকুল ইসলামের নিকট রবীন্দ্র সঙ্গীতের তালিম নেন। ১৯৬১ সালে এই একাডেমি থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন। পরে তিনি একাডেমিতেই শিক্ষকতা করেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্যামা ও চন্ডালিকা নৃত্যনাট্যের কণ্ঠ সঙ্গীতে অংশ নিয়ে পরিচিতি লাভ করেন।রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী জাহেদুর রহিম ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরে তিনি ছায়ানট, অগ্নিবীণা, মূর্ছনা, আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত নিকেতন, নজরুল পরিষদসহ আরও কয়েকটি সঙ্গীত বিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেন।
১৯৭২ সালে তার গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়। রহিম ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বেতার ঢাকা কেন্দ্রে সঙ্গীত প্রযোজক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে রাশিয়া ও ভারত সফরে যান। ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বেতারের নিজস্ব শিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকার তাকে সেই পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। ১৯৭৮ সালে ঢাকায় ‘জাহেদুর রহিম স্মৃতি পরিষদ’ গঠিত হয় যা পরবর্তিতে ‘জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ’- এ রুপ নেয়। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ২০০০ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবসে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।