বিশেষ প্রতিনিধি: এস এম তাজুল হাসান( সাদ)
সাতক্ষীরার নওয়াবেঁকী গণমূখী ফাউন্ডেশন (এনজিএফ) এর অনিয়ম দূর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহক ও স্থানীয়রা।সোমবার (২৪ জুন) সকাল ১১ টায় কৃষ্ণনগর বাজারে এনজিএফ এর শাখা অফিসের সামনে কালিকাপুর রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে মাও: আইয়ুব হোসেনের সঞ্চালনায় বানিয়াপাড়া গ্রামের আ: সালামের স্ত্রী ভুক্তভোগী গ্রাহক ফিরোজা পারভীন বলেন ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে তিনি এনজিএফ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ৮ কিস্তি পরিশোধের পর অবশিষ্ট ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫শ’ টাকা এক কালিন এনজিএফ এর কৃষ্ণনগর শাখা অফিসে পরিশোধ করেন কিন্তু ঋণের ফাইলে থাকা ৩শ’ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ব্যাংক হিসাবের চেক এবং জামিনদার হিসেবে স্বামীর ইসলামী ব্যাংক কালিগঞ্জ শাখার চেক ফেরত চাইলে শাখার ম্যানেজাার আকবার হোসেন শাখায় অডিট চলছে জানিয়ে ওইদিন বিকেলে স্ট্যাম্প ও চেক পৌছে দেবেন বলে জানান। কিন্তু ফাইলের কাগজপত্র ফেরত না দিয়ে উল্টো সঞ্চয় হিসেবে জমা থাকা ২৮ হাজার ৮২ টাকা থেকে ২৬ হাজার ৫০ টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। একপর্যায়ে মাঠকর্মী মোকাররম হোসেন তৈয়েবুর শাখা থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান এবং শাখার ম্যানেজার বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন।
পরবর্তীতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এনজিএফ’র পরিচালক লুৎফর রহমানের কাছে গেলে তিনি বিষয়টি দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি সমাধান করেননি উল্টো এনজিওর কাছে থাকা চেক ডিজঅনার করে তার বিরুদ্ধে তারা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরেক ভুক্তভোগী গ্রাহক ফিরোজ মোড়লের স্ত্রী সেলিনা পারভীন তার বক্তব্য বলেন তিনি এনজিএফ থেকে ৯০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন ৬টি কিস্তি পরিশোধের পর সম্পূর্ণ টাকা এককালীন পরিশোধের জন্য ৬২ হাজার ৬শ’ টাকা দিয়েছেন কিন্তু সেলিনা পারভীনের ডকুমেন্টস ফেরত না দিয়ে এখন আবারও ৬৮ হাজার টাকা দাবি করা হচ্ছে। সেলিনা পারভীনের সঞ্চয়ের ১৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা ইতোমধ্যে অবৈধ পন্থায় উত্তোলণ করেছে এনজএফ কতৃপক্ষ। আবার ৬৮ হাজার টাকা না দিলে মামলা করবে বলে হুমকি দিচ্ছেন তারা। এছাড়া বানিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল গফফার গাজীর স্ত্রী ছখিনা খাতুন বলেন তার সঞ্চয় ছিল ১২ হাজার টাকা। তিনি এনজিএফ থেকে ঋণ না নিলেও তার নামে মাঠকর্মী ও ম্যানেজার যোগসাজশে ৩০ হাজার টাকা ঋণ তুলে নিয়েছেন। বিষয়টি তিনি জানতে পেরে ম্যানেজারকে জানালে সঞ্চয়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার পরিবর্তে উল্টো তার নামে তুলে নেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হবে হুমকি দিচ্ছেন শাখা ব্যবস্থাপক আকবার হোসেন। আরেক ভুক্তভোগী গ্রাহক বানিয়াপাড়া গ্রামের সোহরাব মোড়লের মেয়ে ফতেমা তার বক্তব্য বলেন তিনি ১৫ হাজার টাকা মৌসুমী ঋণ গ্রহণ করেন যা ৬ মাস মেয়াদ শেষে এককালীন ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু ওই ঋণটি পরিষোধ না দেখিয়ে একই কেন্দ্রের আরেক সদস্য জেসমিন সুলতানার নামে পুনরায় দেখানো হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা নওয়াবেঁকী গণমূখী ফাউন্ডেশনের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে দু:সহ জীবনযাপন করছেন বলে জানান।
এ ছাড়া মানব বন্ধনে বক্তব্য প্রদান করেন স্থানীয় বাসিন্দা রওশান আলী কাগুজী, সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে বক্তারা এনজিএফ এর অনিয়ম দূর্নীতি ও গ্রাহক হয়রানী বন্ধে যযথাযথ কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও আশু কামনা করেন।