মো: লিটন উজ্জামান কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :-
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের কমলাপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের শামীম হুজুর। কয়েক বছর আগেও তাকে এলাকার সবাই এ নামেই চিনতেন। তার নাম এখন শামীম কবিরাজ। এক ‘ফু’ দিয়েই জটিল ও কঠিন রোগসহ নানা রোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফি নয়, কিন্তু হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন শামীম কবিরাজ।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় কমলাপুর পশ্চিমপাড়া নদীর ধারে। তার বাড়ি সামনে ও ভিতরে মানুষের ভিড়। সবাই কবিরাজের সামনে দাঁড়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
এদিকে কবিরাজ শামীম সাদা পাঞ্জাবি, লুঙ্গি পড়ে চেয়ারে বসে আছেন। আর তিন পাশে বসে আছেন তার কয়েকজন লোক। সামনে রোগীরা দাঁড়িয়ে আছেন, ফু দিচ্ছেন কবিরাজ। রোগীরা টাকা দিচ্ছেন এবং শামীম হুজুরের পা ধরে সালাম করে চলে যাচ্ছেন। এরপর কবিরাজের লোকজন টাকাগুলো ভাঁজ করে বান্ডিল করছেন। এভাবেই চলছে ভণ্ড কবিরাজ শামীম হুজুরের চিকিৎসা।
নারী-পুরুষকে সামনে নিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে প্রায় কয়েক বছর থেকে সর্বরোগের চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে কবিরাজের বিরুদ্ধে। তার বাড়িতে প্রতিদিন গড়ে ২০০- ৩০০ লোকের সমাগম হয়।
কবিরাজের সহকারি জানান গত দুবছর ধরে তিনি আল্লাহর আশির্বাদে বাড়িতে বসে এমন চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। ‘ফু’ দিয়ে তিনি যৌন রোগ, নিঃসন্তানে ডায়াবেটিস, কিডনি,ব্যথাসহ জটিল ও কঠিন রোগ ভালো করছেন। তিনি চিকিৎসা বাবদ কোনো টাকা নেন না। তবে খুশি মনে যে যা পারেন তাই কবিরাজকে দেন।
স্থানীয়রা জানান, তিনি বিভিন্ন এলাকায় দালাল সেট করেছেন। তাদের মাধ্যমে সর্বরোগের চিকিৎসার কথা প্রচার চালাচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নিজেরাই তার কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও প্রচার করছেন। এসব কথা শুনে বিশেষ করে কুষ্টিয়া জেলা সহ অনেক জেলা ও থেকে উপজেলার সহজ-সরল মানুষগুলো ছুটে আসেন শামীম হুজুরের কাছে। তার রোগীদের বেশিরভাগই নারী। সুযোগ বুঝে তিনি টাকা হাতিয়ে নেন।
কবিরাজ শামীম বলেন, আল্লাহর দয়ায় আজ আমি কবিরাজ হয়েছি। জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা দিচ্ছি। সবাই আমার চিকিৎসা নিয়ে ভালো হচ্ছেন। প্রতিদিন রোগীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যে যা দেয় তা হাত দিয়ে ধরি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আসলে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।