শফিয়ার রহমান বিশেষ প্রতিনিধি
যেকোন দুষ্কৃতিকারী/পেশাদার অপরাধী লোক ধরতে আমি শ্রম দিয়ে থাকি হয়তো একদিন /একবেলা/দু এক ঘন্টা। ধরতে পারলে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায়/ মামলা পরবর্তী বিজ্ঞ আদালতে সোপার্দ হবে, এরপর তার ১ দিন থেকে ৬ মাস বা তারও বেশি কারাগারে হাজতবাস হবে, জামিনে বের হয়ে ৩ থেকে ১০ বছর কোর্টে হাজিরা দিবে, অনেক অর্থ খরচ করে মামলা চালিয়ে একসময় সে দোষী বা নির্দোষ হবে। দোষী হলে মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন, কারাদণ্ড, অর্থদন্ডসহ যেকোন মেয়াদের সাজা ভোগ করবে।
আমার ১৯ বছর চাকরীকালে উর্ধতন কর্মকর্তার দিক নির্দেশনায় সিনিয়র অফিসার ও দক্ষ পরিশ্রমী সহকর্মীদের সমন্বয়ে আমি নিজ উদ্যোগে আজ-অব্দি কত চোর, ডাকাত, মাদককারবারি, ছিনতাইকারী, সন্ত্রাসী,প্রতারক ইফটিজার,ভবঘুরে গ্রেফতার করে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করেছি তার সঠিক হিসাব জানা নাই।
সাম্প্রতি ঝিকরগাছা থানা এলাকা থেকে যারা গরু চুরি করেছে সেই গরুচোর চক্রের ফেলে যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে চোর চক্র সনাক্ত করে অফিসার ইনচার্জ ঝিকরগাছা থানা স্যারের দিকনির্দেশনায় সিনিয়র অফিসার ও কনষ্টেবলের সমন্বয়ে খুলনা ও বাগেরহাট জেলাসহ বেনাপোল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ জন সক্রিয় গরুচোর চক্রের সদস্যকে আটক ও গরু বিক্রির ৭২,০০০ টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। সূত্র ১)ঝিকরগাছা থানার মামলা নং ২২ তারিখ ১৬/৬/২০২৪ ইং ২)ঝিকরগাছা থানার মামলা নং-৩১ তারিখ ২৮/৬/২০২৪ ইং
আলহামদুলিল্লাহ পুলিশিং পেশার মাধ্যমে হয়তো আমার ও আমার পরিবারের রিযিকের ফয়সালা হয়েছে আমি আমার মেধা শ্রম দিয়ে সামান্য কিছু মানবিক ও প্রশাসনিক পুলিশিং কর্মকান্ডে সাধারন মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা আর সম্মান পেয়েছি অন্য কোন পেশায় কর্মরত থাকলে হয়তো পেতাম না।
পুলিশিং পেশা অত্যান্ত কষ্টের, ধৈর্যের ও রিক্সের পেশা। সারাদিন বিবিধ কর্মব্যাস্ততাই দিন পার হলেও রাতে এলাকায় চুরি ডাকাতি সহ যেকোন অপৃতিকর ঘটনা প্রতিরোধে মাসের বেশির ভাগ রাতই কাটাতে হয় যার যার দায়িক্তাধীন এলাকার শহর, বাজার, রাস্তাঘাট,পাড়া মহল্লায়।
উত্তপ্ত রোদ গরমের দিনে সারাদিন রুলস ডিউটি করে রাতে বাসায় এসে সন্তান কাছে নিয়ে দু এক কথা শোনার আগেই যখন শরীর ক্লান্ত হয়ে ঘুমে চোখ বুজে আসে ঠিক তখনি সোর্স মোবাইল দিয়ে যখন কোন দুষ্কৃতিকারী/অপরাধীর অবস্হান জানায় তখনি তাকে গ্রেফতার করতে সব ক্লান্তি পেছনে ফেলে কলিজার সন্তানদের মায়া ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়ি অভিযানে” বাবা তুমি তো কেবল আসলে এখন যেতে দিবোনা ” বাচ্চার এমন আর্তনাদ কান্না আর চোখের পানিতে একটুও মন গলেনা । সশস্ত্র পেশাদার অপরাধীদের আটক করা কতটা রিক্সের সেটা উপরে আল্লাহ জানে আর আমরা জানি। তারা গ্রেফতার এড়াতে যেকোন মুল্যে প্রয়োজনে অন্যের প্রানহানি ঘটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। জীবনের রিক্স নিয়ে সেই পেশাগত অপরাধী/ সন্ত্রাসী ধরে বিজ্ঞ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা অনেক দুরূহ কাজ।
প্রতিটা কাজের সফলতার পেছনের পাতা হয়তো কেও দেখেনা, কাদামাটি মেখে গোসল করে পরের বাড়ি থেকে পরনের লুঙ্গি চেয়ে নিয়ে আসতে হয়! থাক ওসব কথা !
বুকে হাত রেখে বলতে পারি আজ পর্যন্ত কোন পেশাদার অপরাধী বা দুষ্কৃতকারী লোককে ছাড় দিয়ে কোনরকম সুবিধা নেইনি।
সবাইকে একটাই পরামর্শ দিই অপরাধকর্ম ছেড়ে ভালো হয়ে যান দৃশ্যমান কাজকর্ম করে খান তাতে জীবনটা বাচবে।
এ পর্যন্ত শতাধিক চোর ডাকাত মাদক কারবারি / পেশাদার অপরাধী তাদের অপরাধকর্ম ছেড়ে দিয়ে দৃশ্যমান স্বাভাবিক কাজকর্ম করে খাবে বলে লিখিত অঙ্গীকার নামা দিয়েছে, অঙ্গীকারনামা গুলো ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি। আমি ভালো না হলেও আমার পরামর্শে ভালো হয়েছে তার অসংখ্য উদাহরণ আছে। তারা দৃশ্যমান কাজকর্ম করে খাচ্ছে এমন উদাহরণ আছে অনেক।
সত্যি বলতে কারোর ধন্যবাদ পাওয়ার জন্য জীবনের রিক্স নিয়ে এমন কাজ করিনা। কাজ করতে আমার ভালো লাগে কারন আমার একদিনের শ্রমে কোন দুষ্কৃতিকারী বা পেশাদার অপরাধীর হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদন্ড।
সংগৃহিতঃ পোস্ট – “পুলিশিং কর্মকান্ড” এএসআই (নিঃ)মোঃ গোলাম রসুল ঝিকরগাছা থানা যশোর।