মো সুমন মোল্লা ভাংগা প্রতিনিধি
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় নেশাগ্রস্ত ছেলের মানসিক চাঁপে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন প্রবাসী বাবা মতিয়ার কাজী(৫২)। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে উপজেলার হামিরদি ইউনিয়নের মাঝিকান্দা গ্রামে।
নিহত মতিয়ার ওই গ্রামের মৃত্যু ওদুদ কাজির ছেলে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত মতিয়ার কাজি সৌদি আরবে ছিলেন দুই যুগ ধরে। তার তিন ছেলে। বড় ছেলের বয়স ১৭ বছর নাম মুন্না।
বড় ছেলের বয়স যখন এক বছর তখন ওকে ফেলে ওর মা অন্যত্র চলে গিয়ে বিয়ে করেন। পরে মতিয়ার ছুটিতে বাড়ি এসে দ্বিতীয় বিয়ে করেন, নাম লাকি বেগম। তিনি বুঝতে দেননি মায়ের ঘাটতি। নিজ ছেলের মতোই এ পর্যন্ত বড় করেছেন দ্বিতীয় স্ত্রী। ছেলেটি আদর আহ্লাদে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে বলে এলাকাবাসী জানান। প্রায়ই বাবাকে মোটরসাইকেল কেনার জন্য চাপ দেন এবং নেশা করতে টাকার জন্য বাবাকে চাপ প্রয়োগ করত। মতিয়ার ভালো থাকা অবস্থায় দুই যুগ পর্যন্ত সৌদি আরবে অবস্থান করে গত বছর হার্টে অসুখ নিয়ে বাড়ি ফিরেন। আর যেতে পারেননি। বাড়িতেই এক বছর ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বহু খরচ সংসারে হিমসিম খাচ্ছিলেন মতিয়ার। তার উপর মাঝেমধ্যে ছেলের চাপ প্রয়োগ নেশার টাকার জন্য এদিকে আবার অসুস্থ।
গতকাল বুধবার রাতে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দেন মুন্না। এ নিয়ে বাবার সঙ্গে ঝগড়া হয় মুন্নার। এ নিয়ে বাবা ছেলের সঙ্গে অভিমান করে আজ বৃহস্পতিবার( ৪ঠা জুন) ভোরে পরিবারের অজান্তে তার নিজ বসত ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা থানা পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান।
ওই রুমে তার সাত বছর বয়সী ছোট ছেলে মুস্তাকিম ঘুমানো ছিল, স্ত্রী পাশের রুমে ছিলেন। ঘুম থেকে ছোট ছেলে জাগ্রত হয়ে বাবাকে ঝুলতে দেখে চিৎকার দেন। পাশের রুমে স্ত্রী দৌড়ে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় মতিয়ারের মরদেহ নামানো হয়। ততক্ষণে বেঁচে ছিলেন না। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ সকাল ৯ টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌছে নিশ্চিত হন।
এ ঘটনায় তদন্তকারী অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন জানান, নিহত মতিয়ার ছেলের সঙ্গে অভিমান করেই নিজেই আত্মহত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ও পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ বিনা ময়না তদন্তে দাফনের জন্য দেওয়া হয়েছে।