জামাল উদ্দীন – কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
নাফ নদীর মিয়ানমারের সীমান্তে লালদীয়া (মালদ্বীপ) নামক দ্বীপে কাঁকড়া শিকার করতে গিয়ে মাইন বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত ও দু’জন গুরুতর আহত হয়েছে। তারা সকলে রোহিঙ্গা।
রোববার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় নাফ নদীর লাল দিয়ায় বিষ্ফোরনের এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক হচ্ছেন- মোহাম্মদ জোবায়ের (১৯)। সে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের মোহাম্মদ হামিদের ছেলে। আহতরা হলেন- লেদা ২৪ নম্বর ক্যাম্পের কামাল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ জাবের ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পের মোহাম্মদ শুক্কুর। তারা পেশায় কাঁকড়া শিকারি। তারা দুপুরের দিকে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে ওই স্থানে কাঁকড়া শিকার করতে গিয়েছিলেন।
রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এ হামলা করেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওসমান গণী নৌ পুলিশের বরাত দিয়ে বলেন, তারা ওখানে কাঁকড়া শিকার করছিলেন তিনজন। মাইন বিস্ফোরণে তিনজনই গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে আনার সময় মোহাম্মদ জুবায়ের মারা যান। কারা হামলা করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ছাড়াও আরো বিস্তারিত বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশিকুর রহমান বলেন, নিহত ব্যক্তি মো জুবাইর, গুরুতর আহত জাবেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সুত্রে জানা যায়, ৭ জুলাই দুপুর ১২ টারদিকে হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকা থেকে নিহত মোঃ জুবায়ের( ১৯), আহত শাহ আলম ও শুকুর লালদিয়ায় কাঁকড়া শিকারে যান। একইদিন বিকাল অনুমান আড়াইটার দিকে সপখানে মাইন বিস্ফোরণে জোবায়ের এর ডান পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত উড়ে যায়। বাম পায়ের কিছু কিছু জায়গায় ক্ষত সৃষ্টি হয়। তাহার সঙ্গীয় শাহ আলম ও শুক্কুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মাইন বিস্ফোরণের কারণে আহত হয়। শাহ আলম ও শুক্কুর দ্রুত ফিরে আসলে আত্মীয়-স্বজন তাহাদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। মোঃ জোবায়ের না আসায় জোবায়েরের ভাই মোহাম্মদ আয়াজ ঘটনাস্থলে গিয়প জোবায়েরকে আহত অবস্থায় বাড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে মোঃ জোবায়ের মৃত্যু হয়।
টেকনাফ নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তপন কুমার বিশ্বাস জানান- খবর পেয়ে তারা নিহত ও আহতদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। আইনী প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহ দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, তারা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা হলেও ক্যাম্পের বাইরে ভাড়াবাসা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দমদমিয়া গ্রামে বসবাস করে আসছে। সেখান থেকে নাফ নদীতে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করতো।
অপরদিকে গতকাল সোমবার সন্ধা থেকে দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে প্রচন্ড বোমা ছুঁড়েছে। এ বোমার শব্দে এপারের বাড়ি-ঘর থরথর করে কেঁপে ওঠে। আতংকিত হয়ে পড়েছে শিশু থেকে আবাল বৃদ্ধরাও।