স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের বৃহৎ বড়ছড়া, ছাড়াগাওঁ এবং বাগলী কয়লা স্থল শুল্ক স্টেশন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের দিন থেকে বন্ধ থাকায় কয়লা ব্যবসায়ী সহ হাজারো শ্রমিক বিপাকে পড়েছেন। দেশের উত্তর – পূর্বাঞ্চলের তিন স্থল শুল্কস্টেশন দিয়ে গত রোববার পর্যন্ত আমদানী শুরু না হওয়ায় সাত শতাধিক আমদানীকারক ও হাজারো শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, ভারতের মেঘালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন ডিমাহাসাও জেলা ছাত্র ইউনিয়নের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৪ ইং এর ১৭ এপ্রিল ন্যাশনাল গ্রীন ট্রাইব্যুনাল মেঘালয় সরকারের অবৈধ কয়লা খনন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেন। একই বছরের ৬ মে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভাগীয় মুখ্যসচিব এ ব্যাপারে প্রতিটি জেলায় নির্দেশ জারি করেন। এই নির্দেশে গ্রীন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয় মেঘালয়ের জেলা প্রশাসকদের। এ কারণে ২০১৪ ইং এর ১৩ মে থেকে মেঘালয়ের সীমান্ত জেলাগুলোয় কয়লা পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শুল্কবন্দর সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া-চারাগাঁও ও বাগলী এবং সিলেটের শুল্ক স্টেশনের আমদানীকারকদের দুর্দিন যাচ্ছে। রপ্তানীকারকরা আইনী লড়াই করে গত দশ বছরের মধ্যে বছরে এক-দুই মাস কয়লা আমদানী করছেন। বছরের বেশিরভাগ সময় কয়লা আমদানী বন্ধ থাকে বন্দরগুলো দিয়ে। তবে, গেল কয়েক বছর হয় এই তিন বন্দর দিয়ে পাথর আমদানী করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছেন আমদানীকারকরা। গেল ৫ আগস্টের পর এটিও বন্ধ হয়ে আছে।
তাহিরপুর আমদানি কারক সমিতি পরিচালনা কারী সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী কমিটি শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর সমিতির অফিস থেকে সটকে পড়েন। পরে তাহিরপুর কয়লা আমদানী কারক সমিতিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সক্রিয় রাখার জন্য গত তিনদিন আগে আমদানী কারকরা কয়লা ব্যবসায়ী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খসরুল আলমকে আহ্বায়ক ও সবুজ আলমকে সদস্য সচিব করে ১৭ সদস্য নতুন কমিটি গঠন করেন।
এদিকে বড়ছড়া কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা – কর্মচারীরা গত বৃহস্পতিবার থেকে অফিসে যোগদান করেছেন। কিন্তু ভারতের রপ্তানী কারকরা এখনও (সোমবার পর্যন্ত) এই তিন শুল্ক স্টেশন দিয়ে রপ্তানী শুরু করেননি।
তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক সমিতির নবাগত আহ্বায়ক খসরুল আলম জানান, গত শুক্রবার ভারতের মেঘালয়ের এমএলএ ফিউজ মার উইন’এর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি একজন ভারতীয় রপ্তানীকারক। আমরা বলেছি আমাদের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিস করছেন। রপ্তানী শুরু হতে বাংলাদেশের পক্ষ্য থেকে কোন সমস্যা নেই। তিনি ভারতীয় পাথরবাহী ট্রাক নিরাপদে পৌঁছাবে কী না তার কাছে জানতে চেয়েছেন, আমি তাঁকে বলেছি, বড়ছড়া, চারাগাঁও এবং বাগলীসহ পুরো সুনামগঞ্জেই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। তিনি আগামী সোমবার পাথরবাহী গাড়ি বাংলাদেশে পৌঁছাবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
বড়ছড়ার কাস্টমস অফিসার আবুল হোসেন জানান, ঈদের ছুটির আগে পর্যন্ত কয়লা আমদানী হয়েছে। এরপর আর কয়লার গাড়ি আসেনি। ৫ আগস্ট থেকে পাথর আমদানীও বন্ধ হয়ে রয়েছে। ভারতের মেঘালয়ের রপ্তানী কারকরা ট্রাক ছাড়ছেন না। কেন ছাড়ছেন না আমরা বলতে পারবো না। আমরা প্রস্তুত রয়েছি, তারা ট্রাক ছাড়লে এপারে কোন সমস্যা হবে না।