হারুন শেখ বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি।।
ভারি বর্ষনে বাগেরহাট শহরের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। শহরের প্রধান
প্রধান সড়ক তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা,
জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। শনিবার (২৫আগস্ট) রাত থেকে রবিবার (২৫ আগস্ট) সকাল ১০টা পর্যন্ত মুশলধারায় বৃষ্টিতে এই পরিস্থিতি
সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের পাশাপাশি জেলার নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সঠিকভাবে বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় ভোগান্তিতে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ।
খোজ নিয়ে জানাযায়, বৃষ্টির পানিতে বাগেরহাট সদর, রামপাল, মোরেলগঞ্জ,
শরণখোলা, মোংলা, কচুয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিতে অনেকের পুকুর
ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।
বেলা ১১টার দিকে শহর ঘুরে দেখা যায়, বাগেরহাট শহরের খানজাহান আলী রোড,রেল রোড, সাধনার মোড়, শালতলা, পিটিআই মোড়, খারদার স্কুল রোড, জেলা হাসপাতাল মোড়, সরকারি স্কুল, জেলা ডাকঘরের সামনে, বাসাবাটি,
মিঠাপুকুরপাড় মোড়, জাহানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সড়ক, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পেছনসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এক ফুটের বেশি ভাগ পানি রয়েছে পৌরসভা কম্পাউন্ডের মধ্যে। পৌরভবনের সামনের রাস্তায় অনেক পানি দেখা যায়। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে গেছে। সড়কে পানি জমে থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। পানিবন্দি পরিবারগুলো এখন দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে।এদিকে টানা বৃষ্টির ফলে পেটের টানে রাস্তায় বের হওয়া রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক চালকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। যাত্রী না থাকায় যেমন আয় নেই, তেমনি পানিতে নিমজ্জিত রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেকে।
আমির খান রিকশাচালক বলেন,৪ জনের সংসার চলে আমার পায়ের ওপর। তাইতো সকালে বৃষ্টি মাথায় রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু লোকজন নেই। ১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ১০০ টাকা হইছে। কি আর করা, একেতো বৃষ্টি তার উপর রাস্তাগুলো পানিতে ডুবে গেছে, মানুষ বের হয়ে কোথায় যাবে,অটো চালাক আকার বলেন, শহরের রাস্তাগুলো ভাঙা, এরইমধ্যে লাগাতার বৃষ্টি ।
বৃষ্টি হলেই শহরের অধিকাংশ রাস্তায় জমে থাকে হাঁটু পানি। যাত্রী পাওয়া যায়
না। ইনকাম করতে কষ্ট হয়। তে আমাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
পুরাতন বাজার বাসিন্দা রাবেয়া নামের এক নরী বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের
মেঝেতে পানি উঠে যায় । আমাদের এখানকার ৬টি পরিবাবের একই অবস্থা। পানি নিষ্কাশন না হওয়া পর্যন্ত আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাব না,পথচারী হাবিবা খাতুন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন পরিষ্কার না করায় বৃষ্টির
জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হাঁটু সমান ময়লা পানির মধ্যেই চলাচল করতে হচ্ছে।আমরা দুরত এ সমস্যার সমাধান চাই।
তবে জলাবদ্ধতার বিষয়ে কথা বলার জন্য পৌরসভার মেয়রসহ দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায় না ,মাস খানেক আগে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী রেজাউল করিম রিজভি বলেছিলেন, শহরে ৫ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। ড্রেনের কাজ শেষে
৫টি খাল খনন কাজ শুরু করা হবে। খালের কাজ শেষ হলে পৌরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
এদিকে গেল তিনদিন ধরে জোয়ারের পানিতে দিনে দুইবার প্লাবিত হচ্ছে বিশ্ব
ঐতিহ্য সুন্দরবন। তবে এতে বন্য প্রাণিদের কোন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির।