এস এম রমজান আলী,স্টাফ রিপোর্টার
মানুষের জন্য মত, মানুষের দল মানুষের জন্য রাজনীতি।
আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থায় মত প্রকাশে স্বাধীনতা প্রায় দেশে সংবিধান সম্মত। মত প্রকাশের বৃহত্তর ভিত্তি হল রাজনৈতিক দল। আর রাজনৈতিক দলের মূল্য উদ্দশ্য হলো – সংঘঠিত ব্যক্তিদের সামষ্ঠিক ক্ষমতা অর্জন ও ব্যবহার। তবে রাজনৈতিক দলের আর্দশ,লক্ষ্য কি হবে, কিভাবে সংঘটিত হবে,তারা এজেন্ডা ঠিক করে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা লাভের দুই বছর পর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পাকিস্তানের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ আত্মপ্রকাশ করে। পরে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভেরর আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির স্বতন্ত্র জাতি-রাষ্ট্র ও আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার সুমহান ঐতিহ্যের প্রতীক মনে-প্রাণ বিশ্বাস করে। এ আর্দশ ধারণ করে ১৯৭১সালে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামে অবর্তীণ হয়। তাতে সফল হয়, একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পায় বাংলাদেশ। দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও মেলে, নতুন এক পরিচয়ে বাঙ্গালি জাতি বা যাদের জনগণকে জাতীয়তা হয় বাংলাদেশী।
৪৭ হাজার বর্গমাইলে বাংলাদেশে বিভিন্ন সংস্কৃতি,ধর্ম ও জাতি গোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। কোন মত, দলকে ,অপরাধী কার্যক্রমের নিষিদ্ধ করা জরুরি, তা সার্বজনীন স্বীকৃত।
কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানের পর নাৎসিকে নিষিদ্ধ করা হয়।
১৯৪৫ সালে জার্মানিতে হিটলারের পতন ঘটেছে। তবে জার্মান রাজনীতিতে তাঁর নাৎসিবাদী চিন্তাচেতনার ভূত বারবার ফিরে আসছে। ২০১৩ সালে গঠিত অলটারনেটিভ ফর জার্মানি দলটির কার্যক্রম জার্মানির রাজনীতিকে বিষাক্ত করে তুলছে।
গত কয়েক বছের জার্মানির বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভও করছে। তাদের দাবি, চরম রক্ষণশীল নাৎসিবাদী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টে রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন অভূতপূর্ব এক বিপ্লব সাক্ষী হয়ে গেছে।
এবার সফল হবার দিনক্ষণ সামাজিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ভিত্তিতে জাতিকে পুনর্গঠন করা।
দেশের চলমান রাজনৈতিক দলগুলো থেকে বিপ্লব বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ দাবি উঠা স্বাভাবিক। এতে হতবাক হওয়ার কিছু নেই। আওয়ামীলীগ তাঁর সহযোগী সংঘঠন তাদের জোটবদ্ধ দলগুলো দীর্ঘ ১৬ বছরের দূর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘনে টু শব্দ উচ্চারণ করেনি। উল্টো ক্ষমতার মসনত ভাগাভাগি করা রীতিমত প্রযোগিতা করার মাধ্যমে বিরোধী মতাদর্শকে দমনকে হাতিয়ার বানিয়েছে। গনতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানসমূহকে নিপিড়নের যন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়াত করার মানসে ভারতীয় উপনিবেশবাদের মত আচরণ জনগণকে ক্ষুদ্ব করে তোলে।
এতে জনগণ ক্ষোভ ফেটে পড়লে দমন-পীড়নে টু শব্দ করতে পারেনি। মিডিয়ার স্বাধীনতা কেবল টেলিভিশন শো-তে সীমাবদ্ধ ছিল। তাঁরপরও সরকারি দলের মতাদর্শের কাউকে দৃশ্যমান শাস্তি আওতায় আনা হয়নি।
১৯৭১ সালের দীর্ঘ নয় মাসে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের কৃতিত্বের আওয়ামী লীগ সেই চেতনাক ধরে রাখতে পারেনি, তার উচ্চ বিলাসী মনসানিকতা,দূনীর্তি, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম সাধরাণ মানুষকে বিষিয়ে তোলে।
২০২৪ সালে বৈষম্য বিরুদ্ধে ছাত্রদের ব্যানারে এক বিপ্লবে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। জুলাই থেকে আগস্টের ঘটনা প্রবাহ ক্ষমতাসীনের স্বৈরাচারী মনোভাব ঘোষণা দিতে দমন, হত্যা স্পষ্ট প্রমাণ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এমনকি এ আন্দোলনে তাদের জোটবদ্ধ বল প্রয়োগের সিদান্তে মতদত দানের জন্য বিচার করা যেতে পারে।
এতে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিচারে ফাঁসি এবং কারাবন্দী হতে হবে।
স্বাধীনতার যুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্ব হলে তাঁর পরিবার হাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে চলে আসে। দলটি পারিবারিক দল মত ছিল, এমনকি দলীয় গণতন্ত্র হারিয়েছিল ৭১ সালের নেতৃত্ব থাকা নেতাকর্মীরা।
ফলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাত্র চরমে পৌঁছায়, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ গা ঢাকা দিয়েছে।
কেউ অর্জনকৃত সম্পদ নিয়ে বিদেশি পালিয়ে অনেকে আগেই। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তাঁর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য কিছু বলে যেতে পারেনি, দ্বিতীয় কাউকে তাঁর সঙ্গী হিসেবে নিয়ে যায়নি।
নিজের মাধ্য ক্ষোভ, পালিয়ে বেড়ানো তাঁর জীবনকে বিষিয়ে তোলেছে। ফলে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যতে অন্ধকারাচ্ছন্ন।