মোঃ কামাল হোসেন প্রধান জেলা প্রতিনিধি নরসিংদী ঃ নরসিংদীর শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তি এবং শিল্পপতিদের নামে বিভিন্ন অভিযোগে আদালতে মামলা দাখিলের কয়েক ঘন্টা না যেতেই সেই মামলার অভিযোগ রহস্যজনক কারণে প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনা ঘটছে। বুধবার নরসিংদীর শীর্ষ পর্যায়ের দুইজন শিল্পপতির নামে সকালে মামলা হয়েছে এবং দুপুরে বিভিন্ন সমঝোতার মাধ্যমে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয় বলে জানা গেছে। এই দুই শীর্ষ শিল্পপতিদের একজন হলেন নরসিংদীর শিবপুরের সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা এবং অপরজন হলেন থামেক্স গ্রুপের মালিক আব্দুল কাদির মোল্লা। এর মধ্যে শিবপুরের ভরতেরকান্দী গ্রামের ষ মৃত মিজানুর রহমান ছেলে মোঃ আরিফ আহমেদ নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে শিল্পপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ও জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নরসিংদীর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদধারী মোট ৪৫ জনকে আসামী করে নরসিংদীর শিবপুর সি.আর আমলী আদালতে একটি মামলার এজাহার দাখিল করেন। শিল্পপতি আব্দুল কাদির মোল্লার নামে একটি হত্যাকান্ডের অভিযোগ এনে মাধবদীর রুবিনা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করেন। এই মামলায় আরো একাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়।এই মামলা দুইটি আদালতে দাখিলের পর রহস্যজনক কারণে মামলা দায়ের করার ঘন্টা তিনেক পরেই মামলা দুইটি প্রত্যাহার করার খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কী কারণে সকালে মামলার এজাহার দাখিল করে দুপুরেই মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ কেউ বলতে পারছেন না। আদালতের আইনজীবীরাও এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
এছাড়া মঙ্গলবার গত ২৭ আগস্ট নরসিংদী থানার দুইজন এসআই এবং ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাদের নামে একাধিক মামলা প্রক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মামলাগুলো আদালতে নথিভুক্ত করার আগেই উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার ঘটনা ঘটছে। টানা গত কয়েকদিন নরসিংদীর আদালতপাড়ায় আওয়ামী লীগের এমন শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ এবং শীর্ষ পর্যায়ের আমলাদের নামে মামলা হওয়া এবং প্রত্যাহার, সমঝোতার ঘটনায় জনমুখে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
গত ২১ আগস্ট সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনসহ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের নরসিংদী জেলা পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের নাম সম্বলিত ১১৪ জনকে আসামী করে হত্যার অভিযোগ এনে একটি এজাহার দাখিল করার পর অজ্ঞাত কারণে মামলাটি উঠিয়ে নেয়া হয়।
শোনা যাচ্ছে, এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। সেই কারণে নরসিংদীর সিনিয়র আইনজীবীরা নুরুল মজিদ হুমায়ুনকে বাদ দিয়ে এজাহার দাখিল করার জন্য বাদীকে বাধ্য করেন। এসব ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে নরসিংদী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কাজী নাজমুল ইসলাম বলেন, বাদী মামলা আদালতে দাখিল করে এবং বাদীই আবার মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। এতে সভাপতি হিসেবে আমার কিছুই করার থাকে না। জনসাধারণ মনে করেন এ সকল মিথ্যা মামলা ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের জন্য করে থাকে।এ ব্যাপারে নরসিংদীর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মঞ্জুর এলাহী বলেন , নরসিংদীর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এর পরামর্শ ছাড়া কোন মামলা করা যাবে না।