নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে ত্রিশাল উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সাগর খান ওরফে সাগর মহুরী (২৪) ও বিএনপির কর্মী নাঈমসহ ১২/১৩ জন সাংবাদিকের বাসায় গিয়ে প্রাননাশের হুমকি দেন।
এ ঘটনায় জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত অনুমান ৯ টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের নাম ভাঙ্গিয়ে ত্রিশাল পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাগর খান ওরফে সাগর মহুরীর নেতৃত্বে ১২/১৩ জনের একদল দূর্বৃত্ত সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বাসায় গিয়ে এমন হুমকি দেওয়া হয়।
সাংবাদিকের পরিবার জানান, তারা প্রথমে এসে সাংবাদিক সাহেবকে খোঁজেন। পরে বার বার বলে, গেইট খুলতে। গেইট না খুলায় বলেন রাস্তায় সাংবাদিককে ধরবো। ওর কত বড় সাহস ডাঃ মাহাবুব চাচা ও সরকারি নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা ম্যাডামের বিরুদ্ধে নিউজ করে। ওরে আজ খুন কইরা পরে যাবো। এ সময় দুজনের সাংবাদিকের পরিবারের সাথে বাক-বিতণ্ডের একপর্যায়ে সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়।
পরবর্তীতে বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে জানাজানি হলে, শুক্রবার (২৯ আগস্ট) ত্রিশাল উপজেলার প্রকৃত শিক্ষার্থীরা এবং যারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে জড়িত তারা এ বিষয়ে জানিয়েছেন রাতে কখনও ছাত্ররা একজনের বাসায় গিয়ে হামলা- হুমকি দেওয়ার মত এমন কাজ করবে না। যারা এমন করেছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আয়তায় আনতে পুলিশকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের এক নেতা বলেন,'আমাদের সাথে প্রথম থেকে শেষ অব্দি ত্রিশাল সংস্করণে এখনো কাজ করছে সকল শিক্ষার্থীর নাম ও নাম্বার উল্লেখ করা হয়েছে। এ ব্যতীত যেকোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড কেউ অন্যায় ভাবে করতে গেলে ত্রিশাল উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা দায়ভার বহন করবে না। প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনারা অন্যায় কিছু দেখলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নিবেন'।
উল্লেখ্য, যেকোনো সাধারণ শিক্ষার্থী শুধুমাত্র শিক্ষার্থী পরিচয় বহন করে আমাদের সাথে যে কোন উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ বিষয়ে সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সাগর খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাকে সরকারি নজরুল কলেজের দুজন ছাত্র ও বিএনপির কর্মী নাঈম সাংবাদিক রফিকের বাসায় নিয়ে যান। আমাদের সাথে আরও অনেক বন্ধু ছিল। তাদের নাম মনে নেই।
এবিষয়ে জানতে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক জানান, আমার ধারনা সরকারি নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা ও তার স্বামী ডাঃ মাহাবুবুর রহমান আমাকে খুন করতে পাঠিয়েছে। কারন তারা আওয়ামী লীগের আমলে কলেজের সরকারি টাকা লুটপাট করে এবং অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা অর্জন করে। আমি এবিষয়ে একাধিক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করি। তারপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের মাধ্যমে আমাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে আমার রাস্তার সাইনবোর্ড ভেঙ্গে দেয়। যা সিসি ক্যামেরায় ডকুমেন্ট রয়েছে। কারন যে ছেলেরা আসছে সবার সাথেই ম্যাডামের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। তারা টাকার বিনিময়ে এমন জগন্য কাজ করেছে।
আমি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানিয়েছি। এবং তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় কে একটি মেইল করে জানিয়েছি। সকল সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে জানিয়েছি। ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। স্থানীয় রাজনীতিবিদদের জানিয়েছি। তবে এই ছেলেদের সাথে আমার পূর্বে কোনো সম্পর্ক বা পরিচয় নেই।
এবিষয়ে ত্রিশাল থানার ওসি কামাল হোসেন জানান, সাংবাদিকের ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ পাঠিয়েছি। বাসার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। যারা এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সাংবাদিক নেতা আজাদুর রহমান জানান, আমাদের একটাই দাবি প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিন। সাংবাদিক সমাজ বসে থাকবে না। প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক আমাদের ভাই। আমরা বসে থাকার সময় নেই।