রিপোর্ট : মো. আহসান উদ্দীন
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্তে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের নজির বহন করে। সীমান্তের এই অঞ্চলে বিভিন্ন পন্য, মাদক বা গরু সহ অন্যান্য সামগ্রীর অবাধ চোরাচালান কোন প্রকার বাধা ছাড়া সংঘটিত হলেও বছরের পর বছর স্বর্না দাস, ফেলানী সহ নিরিহ সাধারণ মানুষের জন্য সীমান্ত পারাপার প্রায়শই মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে চরম উদাহরণ হলো ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর গুলিতে নিরীহ মানুষ হত্যার ঘটনা।
সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের গুলিতে নিহতদের অধিকাংশই নিরীহ কৃষক, সাধারণ শ্রমিক, নারী ও শিশু। ২০১০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৫০-এরও বেশি বাংলাদেশি সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হত্যাকাণ্ড হল:
১.ফেলানী খাতুনের মৃত্যু (২০১১):
ফেলানী খাতুনের নাম শুনলেই যে ঘটনা সামনে আসে, তা হলো বিএসএফের নৃশংসতা। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি, ফেলানী তার বাবা নুর ইসলাম সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতে থাকা তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করা। ফেরার পথে, বিএসএফ সদস্যরা ফেলানীকে সীমানা বেড়া পার হওয়ার সময় গুলি করে। তার লাশ কাঁটাতারে ঝুলে ছিল প্রায় ৫ ঘণ্টা। সেসময় ১৫ বছর বয়সী ফেলানীর মৃত্যু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে, কিন্তু এর পরেও বিচার নিয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। ফেলানী হত্যার বিচার চললেও বিএসএফ সদস্যদের দোষমুক্ত করা হয়, যা আরও বেশি ক্ষোভের জন্ম দেয়।
২.স্বর্ণা দাস ও গুলিতে নিহত অন্যান্য নারী:
স্বর্ণা দাসের ঘটনাটি এই সীমান্ত অঞ্চলে বিএসএফের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের আরেকটি উদাহরণ। বিএসএফ প্রায়ই বেআইনি উপায়ে সীমান্ত পারাপারের সময় গুলি করে থাকে। তবে যারা গুলি খেয়ে মারা যায় তাদের অনেকেই হয় নিরীহ সাধারণ মানুষ, যারা পারিবারিক বা সামাজিক কারণে সীমান্ত পারাপার করে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। স্বর্ণা দাস, যিনি নারী, তাকেও এমনই একটি ঘটনা রূপে গণ্য করা যেতে পারে, যেখানে সীমান্ত পারাপারের সময় তাকে বিএসএফের গুলিতে জীবন দিতে হয়েছে।
৩. হাবিবুর রহমান (০৯.০৬.২০১০):
২০১০ সালের ৯ জুন, ২৪ বছরের হাবিবুর রহমান বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। তিনি সীমান্তের একটি গ্রাম থেকে পরিবারের জন্য খাবার আনতে গিয়েছিলেন।
৪. আল আমিন (০৩.০৩.২০১৮):
২০১৮ সালের ৩ মার্চ, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ২০ বছরের আল আমিন নিহত হন।
৫.রোকেয়া বেগম:
২০১৩ সালে, রোকেয়া বেগম নামের একজন গৃহবধূকে সীমান্তে গরু নিয়ে যাওয়ার সন্দেহে গুলি করা হয়, যদিও তিনি তার ঘরে কাজ করছিলেন।
৬. আনোয়ার হোসেন:
২০১৯ সালে বিএসএফের গুলিতে পঞ্চগড় সীমান্তে এক কৃষক আনোয়ার হোসেন নিহত হন।
৭. জয়ন্ত কুমার সিংহ (০৮.০৯.২০২৪):
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে জয়ন্ত কুমার সিংহ (১৫) নামের বাংলাদেশি এই কিশোর নিহত হয়। গতকাল রোববার গভীর রাতে উপজেলার ধনতলা সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ফকিরভিটা বেলপুকুর গ্রামের বাসিন্দা মহাদেব কুমার সিংহের ছেলে। এ ঘটনায় মহাদেব কুমার সিংহ ও নিটালডোবা গ্রামের দরবার আলী নামের আরেক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সমর কুমার চট্টোপাধ্যায় জানান, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভারতের কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের ডিঙ্গাপাড়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। এতে জয়ন্ত ঘটনাস্থলে মারা যায়। বিএসএফের সদস্যরা তার লাশ নিয়ে যান। গুলিতে জয়ন্তের বাবা মহাদেব কুমার সিংহ ও দরবার আলী আহত হন।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের হত্যা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে কথা বলতে গেলে এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু ঘটনার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে না। এই সমস্যা বহুবিধ কারণ এবং প্রেক্ষাপটে বিস্তৃত, যেখানে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক কারণগুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে চোরাচালান এবং অবৈধ পারাপারের ঘটনা সরাসরি যুক্ত থাকলেও, এর গভীরে রয়েছে আরও জটিলতর কারণ।
সীমান্ত এলাকায় হত্যাকাণ্ড ছাড়াও মানবাধিকারের অন্যান্য লঙ্ঘনও ঘটে থাকে। বিএসএফের বিরুদ্ধে সীমান্তে নির্যাতন, ধর্ষণ, এবং অবৈধ আটকানোর অভিযোগও প্রায়শই উঠে আসে। এমনকি অনেক সময় বিএসএফ সদস্যরা সীমান্ত পারাপার করা নারী এবং শিশুদের ওপরও শারীরিক নির্যাতন চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ভারতের সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপরও বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ রয়েছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাবেও এই বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সীমান্ত এলাকায় যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা কৃষক, তাদের জন্যও নিরাপত্তার অভাব প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোরাচালান বন্ধের নামে বিএসএফ প্রায়ই স্থানীয় কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করে, যা কৃষিকাজের জন্য একটি বড় বাধা। অনেক সময় কৃষকরা তাদের ফসল সংগ্রহ করার সময়ও বিএসএফের গুলির সম্মুখীন হয়, যা তাদের জীবিকার জন্য সরাসরি হুমকি।
সীমান্তে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের পর বিচার প্রক্রিয়া প্রায়শই অচল হয়ে থাকে। বিশেষ করে বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেও অধিকাংশ সময় তারা দোষী সাব্যস্ত হয় না। ফেলানী খাতুনের ঘটনা বিচারহীনতার এক চরম উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়। ভারতীয় আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে দোষমুক্ত করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা তৈরি করে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি সীমান্ত এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এবং অসহায়ত্বের জন্ম দিয়েছে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের হলেও, সীমান্ত নিয়ে সমস্যা একটি অমীমাংসিত বিষয়। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর থেকেই এই সমস্যা চলছে, যা আরও প্রকট হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর। ভারতের অংশ হিসেবে থাকা রাজ্যগুলো, বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরাম, এই সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। এ অঞ্চলে সামাজিক, ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক মিল থাকায় দুই দেশের মানুষ প্রায়শই সীমান্ত পারাপার করে। তাছাড়া, অর্থনৈতিক কারণেও অনেকে কাজের সন্ধানে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যায়। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই চোরাচালান ও অবৈধ পারাপারকে একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করে এবং এই কারণে উভয় দেশের সরকার সীমান্তে কঠোর নজরদারি চালায়।
তবে রাজনৈতিকভাবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান এখনো মেলেনি। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড, বিশেষ করে বিএসএফের হাতে নিরীহ মানুষের মৃত্যু, দুই দেশের সম্পর্কে প্রায়ই উত্তেজনা সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার ভারতের প্রতি সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানানো হলেও ভারতের পক্ষ থেকে তেমন কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সীমান্তের নিরাপত্তা এবং চোরাচালান রোধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে থেকে গেছে, যা কখনো কখনো মানবাধিকারের উর্ধ্বে স্থান পায়।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা অর্থনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্ত এলাকার মানুষের প্রধান জীবিকা কৃষি হলেও, অনেকে সীমান্ত পারাপার এবং চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ভারতের গরুর মাংসের চাহিদা বাংলাদেশে প্রচুর, এবং বাংলাদেশ থেকে মাদক ও অন্যান্য পণ্য ভারতে পাচার করা হয়। এই অবৈধ ব্যবসা সীমান্ত এলাকার অনেক পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখে। বিএসএফ এবং বিজিবি দুই পক্ষই এই চোরাচালান রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, কিন্তু এর ফলে নিরীহ মানুষও প্রায়ই শিকার হয়।
এছাড়াও, সীমান্তের এলাকাগুলোতে কর্মসংস্থানের অভাব এবং চরম দারিদ্র্যের কারণে মানুষ বাধ্য হয় চোরাচালানে যুক্ত হতে। তাদের জন্য চোরাচালান একটি প্রয়োজনীয় জীবিকা হিসেবে দেখা দেয়। বিএসএফ বা বিজিবির গুলিতে নিহত হওয়া মানুষদের একটি বড় অংশ এই ধরনের অর্থনৈতিক চাপে পড়ে জীবনযাপন করে।
ফেলানীর হত্যাকাণ্ডের পর আন্তর্জাতিক মহলে বিএসএফের কর্মকাণ্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (HRW), এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বিএসএফের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়াও, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডগুলো তদন্ত করে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য জোর দাবি জানিয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বারবার ভারতীয় সরকারের কাছে সীমান্তে হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী সমাধান এখনো অর্জিত হয়নি। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী মাঝে মাঝে মিটিং করে পরিস্থিতি উন্নতির আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি দেখা যায়নি।
সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের নৃশংসতা এবং সীমান্ত হত্যার ঘটনা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, আন্তর্জাতিক মহলের আরও জোরালো চাপ প্রয়োজন, যাতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ হয়। এই সকল হত্যার পেছনে চোরাচালান একটি বড় কারণ হলেও, চোরাচালান ঠেকানোর নামে বিএসএফের যে ধরণে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিরীহ মানুষের মৃত্যু একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, যা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি করছে। সীমান্ত হত্যা বন্ধের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং মানবাধিকারের সুরক্ষার জন্য আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান বন্ধ করতে হলে উভয় দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু তা যেন কোনোভাবেই সাধারণ মানুষের মৃত্যুর কারণ না হয়।
এই সমস্যার সমাধান কেবলমাত্র কূটনৈতিক আলোচনা এবং উভয় দেশের সরকার ও সুশীল সমাজের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্ভব।
প্রথমত, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত সংক্রান্ত আলোচনায় মানবাধিকারের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, সীমান্ত এলাকার মানুষের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা চোরাচালানের মতো অবৈধ কাজে যুক্ত না হয়। সীমান্ত এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে স্থানীয় সরকারগুলোর সাথে মিলে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর সক্রিয় ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
তৃতীয়ত, সীমান্ত এলাকায় সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হলে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন, যা সীমান্ত হত্যাকাণ্ডগুলো তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনবে। এই কমিশনটি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তত্ত্বাবধানে কাজ করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিচালিত হবে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঘটে যাওয়া হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো কেবল দুই দেশের মধ্যকার সীমানা বিরোধের প্রতিফলন নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে আরও গভীর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যা। এসব হত্যাকাণ্ড বন্ধে শুধুমাত্র কঠোর আইন প্রয়োগ নয়, বরং সীমান্ত এলাকায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়নও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এবং সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ প্রশস্ত করতে হবে।
সীমান্ত হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ এবং উভয় দেশের জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।