আজ ১৬ই সেপ্টেম্বর সোমবার, রাত পোহালেই বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতে উঠবে কলকারখানা থেকে শুরু করে পাড়ার গ্যারেজ ও বাস মালিকেরা এবং বাস কর্মীরা। তোড়জোড় চলছে একদিকে গাড়ি ধোয়ার কাজ, অন্যদিকে কলকারখানা পরিষ্কার ও রং করার কাজ। কোথাও কোথাও চলছে কলকারখানার সামনে প্যান্ডেলের কাজ। বিশ্বকর্মাকে পুজো করার জন্য। রাত থেকেই মেতে উঠবে পুজোর আনন্দে।
কুমারটুলি পাড়াতেও দেখা গেল একদিকে যখন প্রতিমা শিল্পীদের তোড়জোড়, তেমনি অন্যদিকে পূজা উদ্যোক্তারা প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার তোরজোড়, আবার কেউ কেউ প্রতিমা পছন্দ করতে ব্যস্ত, কিন্তু প্রতিমা থেকে শুরু করে, অন্যান্য শোলার ডাকের গয়না, চালচিত্রর দাম শুনে মাথায় হাত। অনেকেই থমকে পড়ছেন প্রতিমা পছন্দ হলেও।
উদ্যোক্তারা জানালেন, যে প্রতিমা আগের বছর আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায় কিনে নিয়ে গেছি, এই বছর তার দাম পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।, প্রতিমা শিল্পীদের কাছে বারোশো টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমা রয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তারা তাদের সাধ্যের মধ্যে কিনতে গিয়েও থমকে পড়ছেন, বাজেটে কুলাচ্ছেনা। করার চেষ্টা করছেন কোনভাবে পুজো করার।
অন্যদিকে বিস্ময়কর সৃষ্টি করল স্কুল পড়ুয়া একটি ছোট্ট মেয়ে, ক্লাস সেভেন এইট এ পড়াশোনা করে, বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য, স্কুল থেকে ফিরেই, বাবার সাথে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, বলে কি করব, বাবা তো অত টাকা দিয়ে লেবার রাখতে পারবেনা, তাই আমি পড়াশোনার ফাঁকে যখনই সময় পাই , ছুটে আসি বাবার পাশে।, তার ইচ্ছে ভবিষ্যতে বাবার এই প্রতিমা তৈরীর কাজ করবেন। এমনটাই জানালেন ছোট্ট স্কুল পড়ুয়া মেয়ে, শুধু তাই নয় ছোট্ট মেয়েটি জানায় আমি এই প্রতিমা তৈরি করি বলে স্কুলের অনেক বন্ধু-বান্ধব শুনে হাসে, কিন্তু আমি পিছুপা হইনা , আমি বাবার হাত ধরে বড় হতে চাই, বাবার পাশে থেকে শিখতে চাই, তাই স্কুল থেকে ফিরেই , আবার কখনো টিউশনি থেকে ফিরেই, আমি ছুটে আছি বাবার কাছে। বাবার সাথে কাজে হাত লাগাই।
মেয়েটির বাবা ও জানালেন, কি করবো বলুন, দিনকে দিন যা লেবারের দাম বাড়ছে, পুষিয়ে উঠতে পারছি না, তাই আমার মেয়ে এসে আমাকে অনেকটাই সহযোগিতা করে। ওর আগ্রহ আমাকে সাহস যোগিয়েছে, এখনকার দিনে বুঝতেই পারছেন মেয়ের পড়াশুনা করে চালানোটা খুব কষ্টকর, তাই কাজে আমার মেয়েকে পাশে পেয়ে আমি খুশি। ও বড় হয়ে এই শিল্পকে ধরে রাখুক।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস, কলকাতা