রমজান আলী, বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি
মঙ্গলবার চার মামলায় জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার ৩২ জনকে জামিন দেওয়ার পর সেই আদেশেই তাদের জামিন বাতিল করেছেন জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন। জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিনের সই করা এক আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশে লেখা হয়েছে, আসামিদের পক্ষে যে জামিননামা দাখিল করা হয়েছেন, সে জামিননামা পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, প্রত্যেক আসামির জামিনদার একই ব্যক্তি। তার নাম ইমান হোসেন, সে বান্দরবান সদরের থানা কোয়ার্টারের মো. খলিলের ছেলে। অথচ প্রত্যেক আসামি ভিন্ন ভিন্ন জেলার হলেও তাদের এলাকার কোনও জামিনদার নেই। এদিকে, ৪টি মামলার জামিনদার একই ব্যক্তি এবং তার বাড়ি বান্দরবান। অথচ কোনও আসামির বাড়িই বান্দরবান নয়।
জামিনের শর্ত অনুযায়ী আসামিদের স্ব স্ব এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিকে জামিনদার হিসেবে প্রদান না করায় জামিনের শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। এ কারণে জামিননামা গ্রহণ করা হলো না এবং আসামিদের দেওয়া জামিন বাতিল করা হলো।
এর আগে, মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মোট চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো এই ৩২ জনকে জামিনের আদেশ দেন বান্দরবানের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন।
এদের মধ্যে বান্দরবানের থানচি থেকে ২১ জন, রুমা থেকে ৪ জন, নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ২ জন ও বান্দরবান সদর থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের বিরুদ্ধে কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেওয়া ও বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি তৎপরতা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। কেএনএফ-এর সন্ত্রাসী তৎপরতা দমনে পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে সে সময় র্যাব অভিযান চালিয়ে এদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারদের মধ্যে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া জঙ্গি সংগঠনের প্রশিক্ষক ও অর্থ শাখার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিও ছিল বলে সে সময় র্যাব গণমাধ্যমকে জানায়।
যারা জামিন পেয়েছিলেন তারা হলেন সিলেটের মাকসুদুর রহমান, কুমিল্লার সালেহ আহমদ, সিলেটের সাদেকুর রহমান, কুমিল্লার বায়েজিদ ইসলাম, নোয়াখালীর নিজাম উদ্দিন হিরন, মাদারীপুরের আবুল বাশার মৃধা, কুমিল্লার ইমরান হোসেন, নারায়ণগঞ্জের আল আমিন সর্দার, কুমিল্লার দিদার হোসেন, সিলেটের তাহিয়াত চৌধুরী, ঝালকাঠির হাবিবুর রহমান, কুমিল্লার সাখাওয়াত হোসেন, পটুয়াখালীর মিরাজ সিকদার, পটুয়াখালীর আল আমিন ফকির, বরিশালের আবদুস সালাম, পটুয়াখালীর ওবাইদুল্লাহ হক, বরিশালের মাহামুদ ডাকুয়া, পটুয়াখালীর জুয়েল মুসল্লি, পটুয়াখালীর শামীম, মুন্সিগঞ্জের রিয়াজ শেখ, বরগুনার সোহেল মোল্লা, টাঙ্গাইলের ইলিয়াছ রহমান, কুমিল্লার জহিরুল ইসলাম, চট্টগ্রামের আবু হোরায়রা, কুমিল্লার দিদার হোসেন মাসুম, চট্টগ্রামের ইমরান হোসেন, কুমিল্লার আহাদুল ইসলাম মজুমদার, কুমিল্লার আনিছুর রহমান, গাইবান্ধার শামীন মাহফুজ ও কুমিল্লার আসসামী রহমান।