1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভোগান্তি ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন পিয়ন ও নার্স, মিষ্টি খাওয়ার জন্য নেন টাকাও - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
গফরগাঁওয়ে কৃষকদলের কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত আশাশুনির কালকী স্লুইস গেট সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হবে মুহাদ্দিস রবিউল বাশার দৈনিক নতুন ভোর প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত শীতার্ত মানুষের মাঝে বিএনপির শীতবস্ত্র বিতরণ নওগাঁয় অসকস বাংলাদেশের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ সম্পন্ন কালিগঞ্জের মৌতলা কৃষকদলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে সরিষাবাড়ীতে ৪’ শতাধিক হতদরিদ্র পেল শীতবস্ত্র কম্বল জামালপুরে ৯ম জাতীয় হাঁটা দিবস পালিত  শেরপুরে বোনকে হত্যার অভিযোগে ভাই গ্রেফতার

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভোগান্তি ডাক্তারের অনুপস্থিতিতে রোগী দেখেন পিয়ন ও নার্স, মিষ্টি খাওয়ার জন্য নেন টাকাও

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

 

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ

নওগাঁর বদলগাছী ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট চলছে। সেই সুযোগে পিয়ন ও নার্স রোগি দেখছেন। ঘটনাটি উপজেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যর পাশাপাশি চরম হতাশা বিরাজ করছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ৬ জন এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ উচ্চতর ডিগ্রি নিতে বা কোর্স করতে চলে গেছেন। এ পর্যায়ে ৮ জন মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট দিয়ে কোন রকম চিকিৎসা সেবা চালানো হচ্ছে। বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপ- সহকারী মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট এর পদ রয়েছে মাত্র ২টি। বাঁকি ৬ জন মেডিক্যাল এ্যাসিটেন্ট । ইউনিয়ন কমিউনিটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে এনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ কারানো হচ্ছে। এতে খুড়িয়ে খুঁড়িয়ে কাজ চল্লেও সেবার মান বাড়ছে না। অপর দিকে ডাঃ শাহাদত হোসেন সেলিম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থপেডিক্স হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মাঝে মাঝে অনুপস্থিত থাকেন। এই সুযোগ কাজে লাগায় সেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী নুরু। নুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ চিকিৎসক শাহাদত হোসেনের অনুপস্থিতিতে তিনি দেখেন রোগী, করেন চিকিৎসা। আবার চিকিৎসা দেওয়ার পর কৌশল হিসেবে রোগীর কাছ থেকে সেই টাকা নেন চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য। এমন অভিযোগে ভিত্তিতে কয়েক দিন সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। প্রায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডা.শাহাদত হোসেনের চেম্বার তালাবন্ধ থাকতে দেখা যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ডাক্তার শাহাদত হোসেন অফিসে আসবেন না। কি কারণে তিনি আসবেন না জানতে চাইলে তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর আউটডোরে ডাক্তার শাহাদত হোসেনের চেম্বারের সামনে দেখা যায় সেবা নিতে আসা আজিরুন বেগম (৬০) নামে একজন হাতভাঙা রোগী বসে আছে। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, গত ২২ দিন আগে রাস্তা দিয়ে হাটতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার কারণে আমার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আমার হাত প্লাস্টার করে দেয়। এবং দশ দিন পর আউটডোরের পাঁচ নং রুমে দেখাতে বলে। দশ দিন পর পাঁচ নং রুমের ডাক্তার আমার হাত দেখে এক্সরে রিপোর্ট করতে বলে। আজকে কিছুক্ষণ আগে রিপোর্ট দেখে আমার হাত আবারো প্লাস্টার করে দিলো। এবং চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য ৪ শত টাকা নিলো এবং আগেও তিন শ টাকা নিছে। এক মাস পর আবার এখানে আসতে বলল।
ওই রুমের ডাক্তার আজকে আসেনি আপনাকে চিকিৎসা সেবা দিলো কে? এমন প্রশ্নের জবাবে সহজ সরল আজিরুন বেগম বলেন, সে নিজে পাঁচ নং রুমে আমার হাত দেখে চিকিৎসা করলো, এক্সরে রিপোর্ট দেখলো। একমাস পর আবার আসতে বললো। ডাক্তার দেখতে কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, ডাক্তারের দাড়ি আছে, একটু খাটো করে ফর্সা। তার মোবাইল নং লিখে দিছে। কোন কিছু হলে ফোন দেওয়ার কথা বলছে। আমি তো ডাক্তার কে চিনি না বাবা। যেই মানুষ আমার হাত দেখলো তাকেই আমি ডাক্তার মনে করছি। এরপর রোগীর কাছ থেকে নেওয়া মুঠোফোন নম্বরে ফোন দিলে অপরপ্রান্ত থেকে অফিস সহকারী পদে হাসপাতালে চাকরি করি বলে জানান নুরু ইসলাম। আউটডোরের পাঁচ নং রুমে আজিরুন নামে কোন রোগীকে শনিবার চিকিৎসা দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শুধু হাতের প্লাস্টার করে দিয়েছি। কোনো টাকা পয়সা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে চা মিষ্টি খাওয়ার জন্য চার শত টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। এবিষয়ে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ শাহাদত হোসেন সেলিম মুঠোফোনে বলেন, এর আগে নুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তখন তাকে আমরা ডেকেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু পাইনি। তবে সে ডাক্তারের সহযোগী হিসেবে সহযোগীতা করে। কারণ আমাদের জনবল একটু কম। আর আমি মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত থাকি। তবে নিয়মিত অফিস করি। অপর দিকে,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগের রোগীদের (এনসিডি)কর্নার নামে ২ নং রুমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে ও ডাক্তার সংকটের নামে মাঝে মধ্যে ওই রুমে একজন সিনিয়র নার্স হাসিনা ডায়াবেটিস ও হৃদ রোগিদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে চিকিৎসা দেওয়া ওই নার্স হাসিনাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ডাক্তার সংকট তাই ম্যাডামের নির্দেশে চিকিৎসা দিচ্ছি। ম্যাডাম কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তার কথা জানান। অন্যদিকে, বেড সংকটের কারনে বারান্দার মেঝেতে ১৪ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গেছে। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় তীব্র গরমের মধ্যে রোগীরা অস্থিরতা বোধ করতে দেখা যায়।কিয়ামত জুলেখাসহ কয়েকজন ভর্তি রোগীরা বলেন, হাসপাতালের খাবার মান একেবারে ভালো না। মোটা চাল, ভাতে খুব গন্ধ। এগুলো খাওয়ার চেয়ে না খাওয়ায় ভালো। কিছু বলার নেই ভাই। জানার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, চিকিৎসক শাহাদত হোসেন এখানে ট্রেনিংএ আছেন। তাঁর অনুপস্থিতে অফিস সহকারী নুরুর চিকিৎসা ও টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনই কথা বলছি এবং কি ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই বিষয়টি দেখছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি