বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি।।
বরিশালের বাকেরগঞ্জে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আমলে এমপি মন্ত্রীদের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখলসহ নানা অভিযোগ এনে আওয়ামী মহিলালীগ নেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার মুন এর বিরুদ্ধে ২ অক্টোবর বাকেরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নলুয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আফালকাঠি গ্রামের মো: জুলফু, মো: সালাউদ্দিন, মো: সুমন মৃধা মো: মিজান, মো: মামুন সিকদার, রাসেল সিকদারসহ স্থানীয়রা ভুক্তভোগীরা।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ পাঠ করে জানান, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের আফালকাঠি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মৃধার কন্যা ফেরদৌসী মজুমদার মুন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী মহিলালীগের সদস্য এবং ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানার সহ-সভাপতি পদে থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ প্রভাবশালী এমপি মন্ত্রীদের সাথে সাক্ষাৎ সম্পর্ক গড়ে তুলেন। আর ঐ সকল এমপি মন্ত্রীদের সাথে একাধিকবার স্বাক্ষাত করে ছবি তুলে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে বাকেরগঞ্জের নলুয়ায় প্রভাব বিস্তার করে রাম রাজত্ব কায়েম করে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম ভাঙ্গানো আর তদবির বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিজ এলাকা অফালকাঠি গ্রামে ২০২০ সালে মমতাজ মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্ডেন ও প্রতিবন্ধী স্কুল নির্মাণ করে বিভিন্ন প্রতারণার জাল ছড়িয়ে লাখ লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে ওপরে উঠে আসেন ফেরদৌসী মজুমদার মুন। ঢাকার যাত্রাবাড়ী সহ নিজ এলাকার আফালকাঠি গ্রামে গড়ে তোলেন প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। আর এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দেয় ফেরদৌসী মজুমদার মুনের আপন বড় বোন হেলেনা বেগম। নলুয়া ইউনিয়নের কারখানা নদীর চর দখলসহ এলাকায় অসহায় দরিদ্রদের জমি দখল ছিল এই সিন্ডিকেটের প্রধান কাজ। ফেরদৌসী মজুমদার মুনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি সৎ ভাই সুমন, সুজন,মিঠু সহ সৎ বোন লাভলি আক্তার। ক্ষমতার দাপটে তাদের জমি জমা দখলে নিয়ে সেই জমিতে দুতলা ভবন নির্মাণ করেছেন ফেরদৌসী মজুমদার মুন ও তার বোন হেলেনা বেগম।
বিভিন্ন স্থানে সুবিধাজনক পরিচয় দিতেন কখনো তিনি নিজেকে রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী-নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার কথা বলেও এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। চাকরি না পেয়ে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এই টাকা ফেরত চাইতে গেলেই তারা হামলা মামলার শিকার হয়েছে। নলুয়া আফালকাঠি গ্রামে প্রতিবন্ধী,শিশু ও বয়স্ক গনশিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতির দায়িত্ব থেকে চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন জনের থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী মুন।
সংবাদ সম্মেলনে আফালকাঠি গ্রামের নুরু মুন্সি বলেন, আমার মেয়ে প্রতিবন্ধী স্কুলে চাকরি করতেন তার চাকরি সরকারি করে দেওয়ার নামে এক লাখ টাকা নিয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার মুন। ৭ নং ওয়ার্ডের জাকির হাওলাদার ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইমরান আলী মৃধার কাছ থেকেও দুই লাখ টাকা নিয়েছেন চাকরি দেয়ার নামে। সংবাদ সম্মেলনে সুমন মৃধার বলেন, আমার বাড়িঘর লুটপাট করে জমি দখলে নিয়েছে ফেরদৌসী মজুমদার মুন। ফেরদৌসী মজুমদার মুনের এইসব অন্যায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলার হয়রানির শিকার হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তার আরো বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশত্যাগ করলে আত্মগোপনে চলে যায় এই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার মুন। তবে তার আপন বোন হেলেনা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফলে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ফেরদৌসী মজুমদার মুন সহ তার বোন হেলেনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহ দুর্নীতি দমন কমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।