হৃদয় হাসান (স্টাফ রিপোর্টার)
এলাকায় প্রভাব বিস্তার, জমি দখল, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়াসহ নানা অপকর্মে জড়িতের অভিযোগ থাকায় যশোরের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে অনুপস্থিত রয়েছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বার। এসব অনুপস্থিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের তালিকা করছে যশোর জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে যশোরের ৮টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো: রফিকুল হাসান।
গত ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর যশোরের ৯৩টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মধ্যে বেশিরভাগ আত্মগোপনে চলে যান। এ সকল চেয়ারম্যানদের ৯০ শতাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব দিক বিবেচনা করে অনেকেই জনরোষের ভয়ে আত্মগোপনে আছেন। আবার অনেকে শুধু উপজেলা পরিষদে এসে দৈনন্দিন কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যানদের অবর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের সেবামূলক কার্যক্রম তাই মুখ থুবড়ে পড়েছে।
এদিকে প্রায় দুই মাস ধরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা লাপাত্তা থাকলেও তাদের অপসারণ করে সেখানে নতুন করে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে ইতিমধ্যে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পলাতক ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা প্রস্তুতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে যশোর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, অনুপস্থিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে তালিকা হাতে আসবে। তালিকা পেলে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, অনুপস্থিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হবে।
অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী বলেন, আমি সবে মাত্র এই উপজেলায় যোগদান করেছি। এখনও কতজন চেয়ারম্যান ও মেম্বার অনুপস্থিত আছেন সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও কিছু অনুপস্থিত আছে সঠিক। দু’একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে তালিকা প্রস্তুত করা হবে।
বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার জানান, তার উপজেলায় কোনো অনুপস্থিত চেয়ারম্যান ও মোম্বর নেই। ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা সার্বক্ষণিক দায়িত্বপালন করছেন। তবে স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, এর মধ্যে অনেক চেয়ারম্যান, মেম্বার ইউনিয়ন পরিষদে না গিয়ে উপজেলা পরিষদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন।