নাজিম উদ্দীন ,কেশবপুর, যশোরঃ
কেশবপুরে ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধক এইচপিভি টিকাপ্রদান উপলে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সভা কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলায় ১০ হাজার ৬ শ ৩২ জন কিশোরীকে এই টিকা প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন।
মেডিকেল অফিসার সৌমেন বিশ্বাসের পরিচালনায় বক্তব্য দেন, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ডালিম, উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রশিদ, কেশবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আছাদুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আলমগীর হোসেন, কেশবপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফ উজ জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, সুফলাকাটি ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মনজুর রহমান, কেশবপুর পাইলট গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান প্রমুখ।
কর্মশালায় বলা হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার (সার্ভিক্যাল ক্যান্সার) ভাইরাস জনিত একটি প্রাণঘাতী প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ। এই রোগ বাংলাদেশের নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে দ্বিতীয়। অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত রক্ত স্রাব, শারীরিক মিলনের পর রক্তপাত, মাসিক বন্ধ হওয়ার পর পুনরায় রক্তপাত, কোমর, তলপেট, উরুতে ব্যাথা ইত্যাদি এই রোগের লণ। তবে বাল্যবিবাহ, ঘন ঘন সন্তান প্রসব, একাধীক যৌনসঙ্গী, ধূমপায়ী, এইডস রোগী, প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন নন এমন নারীরা এই রোগের ঝুঁকিতে থাকে। তাই কিশোরী বয়সে এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) টিকা নিলে নারীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়।
এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নয় এমন ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের এক ডোজ এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে ১৮ দিনব্যাপী কেশবপুরে ১০ হাজার ৬ শ ৩২ জন কিশোরীকে টিকা দান কর্মসূচি চলবে। টিকা নিতে ছাত্রীদের রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।
এইচপিভি টিকা পাওয়ার যোগ্য ছাত্রী বা কিশোরীরা বিদ্যালয়ের ক্যাম্পিং থেকে এবং যারা অধ্যায়নরত নয় তারা নিকটস্থ টিকা কেন্দ্র এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টিকা নিতে পারবে।
তবে এইচপিভি টিকা অত্যান্ত নিরাপদ। যা বিশ্বব্যাপী পরীক্ষিত। তারপরও টিকার স্থানে লালচে ভাব বা ব্যাথা বা ফুলে যাওয়া হলে এমনিতেই ভাল হয়ে যায়। কোন ধরণের ভয় বা আতঙ্কের কিছু নেই।
ইতোপূর্বে গাজীপুর, ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে এই টিকা প্রদানে কোন প্রকার সমস্যা দেখা যায়নি। টিকা দেয়ার পর যে কোন সমস্যা বা অসুবিধা হলে সাথে সাথে স্বাস্থ্যকর্মীকে খবর দিতে হবে। প্রয়োজনে ছাত্রী বা কিশোরীকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। টিকা নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে সরকার সবধরণের চিকিৎসার খচর বহন করবে। এইচপিভি টিকা দেয়া শেষ হলে টিকা কার্ডটি যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করতে হবে। ভবিষ্যতে বিদেশযাত্রা সহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা এবং টিকা পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ টিকা কার্ডটি প্রয়োজন হতে পারে বলেও জানানো হয়।