মোঃ আব্দুল গফুর শিকদার
ভোলা জেলা প্রতিনিধ
দ্বীপ জেলা ভোলার মনপুরা উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন ৫ নং কলাতলী ইউনিয়ন বাসী চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে | বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে | মেঘনার বুকে জেগে উঠা চরে প্রায় ২০ বছর আগে বিস্তৃন্ন অরণ্য কেটে বসতি স্থাপন করে মনপুরার মানুষ | মনপুরার তীব্র নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে অসহায় মানুষ দ্রুত বসতি স্থাপন করে চর কলাতলীতে | কালক্রমে তা ঘন বসতিতে রুপ নেয়, বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস প্রায় ১৮ বর্গ কি মি. আয়তনের এ দ্বীপে |
চির অবহেলিত চর কলাতলী ১নং মনপুরা ইউনিয়নের ১,২,ও ৩ নং ওয়ার্ড এর অন্তর্গত থাকলেও পায়নি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া | সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে চর কলাতলী , ঢালচর ও কাজীর চর নিয়ে গঠিত হয় ৫ নং কলাতলী ইউনিয়ন | আবার মূল ভূখণ্ড কলাতলী থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাল চর ও কাজীর চর | নতুন ইউনিয়নে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে মানুষ | কিন্তু আশায় গুড়ে বালি | দিনে দিনে মানুষ বাড়লেও নিশ্চিত হয়নি মানুষের মৌলিক অধিকার |
মানুষ বঞ্চিত অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে , অরক্ষিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয় | নেই কোন হাসপাতাল বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র , তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হলেও সেবা দিচ্ছে মাত্র একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, বাকি দুইটি বন্ধ | 8 টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬ টি নুরানী মাদ্রাসা ও একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, নেই কোন মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় | ঢালচরে ১ টি বেসরকারী কমিউনিটি ক্লিনিক ও ১ টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে , কাজীরচরে কোন স্কুল বা ক্লিনিক নেই। কলাতলীতে একটি মাত্র পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র |
CDSP (Char Development and Settlement Project) এর মাধ্যমে দুটি রাস্তা হলেও নির্মাণ হয়নি কোন বেড়িবাঁধ , ফলে বর্ষাকালে ডুবে থাকে প্রায় সব এলাকা | লবনাক্ত পানি ও অতি জোয়ারে নষ্ট হয় ফসল, ভেসে যায় মাছ | ২০ বছরেও তৈরী হয়নি চলাচলের উপযোগী কোন রাস্তা , সরু কিছু রাস্তা হয়েছে যার বেশীর ভাগই ভাঙ্গা , খানা-খঁন্দকে ভরা | যার ফলে নেই কোন রিক্সা বা যান্ত্রিক যানবাহন |
চরের প্রধান সড়ক অফিস খাল থেকে মনির বাজার পথেই রয়েছে ৬ টি সাঁকো | ফলে স্কুলে যাতায়াত ব্যহত হয় শিক্ষার্থীদের | এতে বৃদ্ধি পেয়েছে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা | ঝড়ে পড়া অল্প বয়সী ছেলেরা মৎস পেশায় জড়িয়ে যায় এবং মেয়েদের বাল্য বিবাহ হয়ে যায় এতে সামাজিক অবক্ষয় দেখা দেয় | যাতায়াতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ মানুষ, অসুস্থ বৃদ্ধ, ও শিশুরা | সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রসূতি মায়েদের | দ্রুত এই কষ্ট – দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ চান এলাকাবাসী |
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা অফিসখাল ব্যবসায়ী কমলেন্দু দাস (শ্রীকৃষ্ণ ) বলেন, রাস্তা অনেক ভাঙ্গা ও সাঁকো থাকার কারণে আমার ছেলে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না | পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নেওয়া যায় না | মনির বাজার সংলগ্ন বাসিন্দা গর্ভবতী মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমি ৮ মাসের গর্ভবতী দ্রুত ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন কিন্তু রাস্তা ভাঙ্গা এবং সাঁকো থাকার কারণে ডাক্তারের কাছে যেতে পারি না | দ্রুত এই কষ্ট- দুর্দশা থেকে পরিত্রাণ চান সবাই |
নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ ও চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ সহ দ্রুত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতির প্রত্যাশা এলাকাবাসীর