শাহিন হাওলাদার /বরিশাল প্রতিনিধ
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে বাড়ি ঘরে ঢুকে রান্না করা খাবারের সঙ্গে কখনো ঘরের মধ্যে থাকা খাবার পানিতে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে দিয়ে এক একটি পরিবারের সবাইকে অচেতন করে চুরি, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার ২৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কালাম শরীফের স্ত্রী মরিয়মের বাড়িতে খাবারের সঙ্গে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে দুই সন্তান রাব্বি শরীফ ও সাব্বির শরিফ সহ সবাইকে অচেতন করে নগর টাকা পয়সার স্বর্ণালংকার সহ ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
বাকেরগঞ্জে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে চুরির ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কেউ থানায় অভিযোগ করছেন আবার কেউ নিরবে সহ্য করছেন। সন্ধ্যা গড়াতেই যেন চুরির আতঙ্ক বিরাজ করে এলাবাসীর মধ্যে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চুরির হিড়িক পড়লেও চুরি ঠেকাতে তেমন কোনো অগ্রণী ভূমিকা নেই পুলিশের এমনটাই দাবী ভূক্তভোগীদের।
অনুসন্ধান জানা যায়, গত ২৪ অক্টোবর রাতে পৌরসভা ১ নং ওয়ার্ডের হাওলাদার বাড়ির রুস্তম আলী হাওলাদারের বাসায় ও মৌজা আলী হাওলাদার এর বাসায় চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে চুরির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা ওই পরিবারের সদস্যদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
গত সেপ্টেম্বর ও চলতি অক্টোবর এই দুই মাসে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড রুনশি সুমন ডাকুয়ার বাড়িতে চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে পরিবারের সবাইকে অচেতন করে চুরির ঘটনা ঘটে। এর আগে কলসকাঠি ইউনিয়নের আব্দুল আল মিনি ও ইমান আলী হাওলাদার এর বাড়িতে একইভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গারুড়িয়া, কলসকাঠী, রঙ্গশ্রী, পাদ্রীশিবপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় শতাধিক বাড়িতে এই অভিনব পদ্ধতিতে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাসে বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় শতাধিক পরিবার অচেতন অবস্থায় অসুস্থ হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শফিকুল বলেন, চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে অনেকদিন ধরেই একটি সিন্ডিকেট চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে। অনেক পরিবার চুরি শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে। তাই আমরা এই মূল চক্রটাকে ধরার জন্য তদন্ত চালাচ্ছি