নুরুল ইসলাম, সাতকানিয়া চট্টগ্রাম সাংবাদদাতা।
ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করা ও পাওনাদারকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেওয়ায় এক পুলিশ কনস্টেবলের পিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে এক ভুক্তভোগী অসহায় পরিবার। ওই ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর রশিদেরঘোনা এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে রেজাউল করিম। অভিযুক্ত ব্যক্তি একই ওয়ার্ডের মৃত আব্দুস ছালাম ওরফে রাজাকার ছালামের ছেলে নুরুল আমিন। গত ১৭ অক্টোবর হাওলাতের টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে পুলিশ কনস্টেবল ও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় প্রভাবের নানারকম হুমকি-ধমকির শিকার হয়ে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বরাবর অভিযোগ এবং আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন দপ্তরে অনুলিপি প্রেরণ করেন ভুক্তভোগী রেজাউল করিম।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইজিপি-র কার্যালয় থেকে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নিতে উক্ত অভিযোগটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় প্রেরণ করা হয়। লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিযোগটি তদন্তের জন্য এস.আই জামাল হোসেনকে তদন্তভার অর্পণ করেন।
ভুক্তভোগী রেজাউল সাংবাদিকদের জানান, “বিগত ২০১৬ সালে আমি প্রবাসে থাকাবস্থায় অভিযুক্ত আমিন আমার প্রতিবেশী হওয়ায় তার ছেলেকে পুলিশ কনস্টেবলে যোগদানের জন্য বিশেষ টাকার প্রয়োজন হওয়ায় আমার নিকট সে টাকার জন্য শরণাপন্ন হলে আমি মানবিক বিবেচনায় আমার স্ত্রীর মাধ্যমে তাকে ১ লক্ষ টাকা হাওলাত প্রদান করি। তার ছেলে চাকরিতে যোগদানের ছয় মাসের মধ্যে আমাকে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। পরে আমি টাকাগুলো ফেরত চাইলে সে নানারকম তালবাহানা শুরু করে। এমনকি আমার বারংবার তাগাদায় আমাকে সে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধমকিমূলক আচরণ করে। তার ছেলে পুলিশ কনস্টেবল মাঈনুদ্দীন বর্তমানে বান্দবান পুলিশ লাইনে কর্মরত আছে।” তিনি আরও জানান, “হাওলাতের টাকার বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান সহ এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিরা অবগত আছেন।”
যোগাযোগ করা হলে অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জামাল হোসেন বলেন, “বিষয়টির ব্যাপারে তদন্ত চলমান আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা কর্তৃক দায়েরকৃত বিস্ফোরক মামলার অন্যতম আসামী। তাকে পাচ্ছি না। তবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।”
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নুরুল আমিন জানান, “টাকা হাওলাত নিয়েছি তা সত্য। কিন্তু তা ছেলের পুলিশের চাকরির ব্যাপারে নয়।”
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, নুরুল আমিন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অসদুপায়ে তার ছেলেকে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করায়। পরবর্তীতে দলীয় প্রভাব ও ছেলে পুলিশ কনস্টেবল হওয়ার প্রভাবে এলাকার ভোটকেন্দ্র দখল, জায়গাজমি আত্মসাৎ ও জবরদখল সহ নানারকম অনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল।