মো: তানজিম হোসাইন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম মহানগরীতে রেজিস্ট্রেশনবিহীন ১৫ হাজারেরও বেশি সিএনজি টেক্সি অবাধে চলাচল করছে। পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈধ টেক্সির সংখ্যা ১৩ হাজার হলেও গ্রাম থেকে আসা এবং রেজিস্ট্রেশনবিহীন টেক্সি মিলিয়ে নগরীতে অন্তত ২৫ হাজার সিএনজি টেক্সি চলাচল করছে। এই বিশৃঙ্খলার ফলে সরকার বছরে প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
নগরীতে বৈধ সিএনজি টেক্সিতে মিটার সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালে। তবে নানা অনিয়মের কারণে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। ১৩ হাজার মিটার স্থাপনের নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেও একটি টেক্সিও মিটারে চালু হয়নি। পরবর্তী সময়ে মিটার সংযোজনের প্রচেষ্টা নেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। বর্তমানে কোনো সিএনজি টেক্সিতে মিটার নেই, ফলে চালকদের ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় চলছে।
নগরবাসীর অভিযোগ, কয়েক কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিতেও ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। মোহাম্মদ আলী রোডের এক শিক্ষার্থী জানান, ইউনিভার্সিটি থেকে খুলশী যেতে তাকে ১২০ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে এমন ভাড়া নৈরাজ্য প্রতিনিয়ত নগরবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম অটো রিকশা অটো টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ স্বীকার করেছেন যে, ভাড়া বেশি নেওয়া হয়। তবে তিনি এর জন্য মালিকদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, সরকার প্রতিদিনের জন্য ৯০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করলেও মালিকরা তা অমান্য করে চালকদের কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করেন। এতে চালকরা নিজেদের খরচ মেটাতে বেশি ভাড়া আদায় করতে বাধ্য হন।
নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, গ্রাম টেক্সি এবং রেজিস্ট্রেশনবিহীন গাড়ি শহরে চলাচল নিষিদ্ধ। কেউ চোরাগোপ্তা পথে প্রবেশ করলেও তাদের আটক করে মামলা দেওয়া হয়। তবে মিটার সংযোজন বা ভাড়া নির্ধারণে সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ছাড়া পুলিশের পক্ষে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।
চট্টগ্রামের সিএনজি টেক্সি খাতের বিশৃঙ্খলা এবং ভাড়া নৈরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে চলমান সমস্যা। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং অবৈধ টেক্সি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।