মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
শুরু হলো বিজয়ের ও গৌরবের মাস ডিসেস্বর। স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই মাসের ১৬ তারিখে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।
এই বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে রচিত হয় সবচেয়ে বড় গৌরবের অধ্যায়। গৌরবের এই বিজয়ের ৫৪ বছর ইতোমধ্যে পার হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়। বাঙালি জাতি হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির লক্ষ্যে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে আসে।
আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ শাসন, শোষণ ও নির্যাতন থেকে মুক্তির পর পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসন, শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলনই এক পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয়।
স্বাধীনতার জন্য ধারাবাহিকভাবে চলে আসা এই আন্দোলন-সংগ্রাম ১৯৭১ এর মার্চে এসে স্ফুলিঙ্গে রূপ নেয়।
স্বাধীনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিতে থাকে পাকিস্তানি জান্তারা। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বর্বরোচিতভাবে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এর পরই ২৬ মার্চে স্বাধীনতার ঘোষণা হয়। শুরু হয় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরতায় বাঙালি নিধন অভিযান।
তবে পাকিস্তানের এই বর্বরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলার সর্বস্তরের মানুষ। হাতে তুলে নেয় অস্ত্র, শুরু হয় রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে চলে বাঙালির মরণপণ যুদ্ধ। বীরত্বপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালি বিজয়ের দিকে ধাবিত হতে থাকে। ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধ চুড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছায়। এক পর্যায়ে বাঙালির বীরত্বের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে বাধ্য হয় আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত জোরালো হয়ে ওঠে।
মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ মরণপণ যুদ্ধের কাছে টিকতে না পেরে এবং বিশ্ব জনমতের চাপে পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসর্পণ করতে বাধ্য হয়। এই প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মসমর্পণ করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। রক্তক্ষয়ী এই মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।