(দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী'র বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ও কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলামসহ অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
শনিবার ৭ ডিসেম্বর'২৪ বিকালে বীরগঞ্জ প্রেসক্লাবে প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলামসহ শিক্ষক পরিবার লিখিত বক্তব্যে বলেন বীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী গত ০৪/১২/২০২৪ ইং তারিখ ফেসবুক ও গণমাধ্যমে এসএসসি ফরম পূরণ বিষয়ে বানোয়াট ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়াছেন, যা মোটেও কাম্য নয়।
যেহেতু কোন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরম পূরণ ফি বাড়ানোর বিষয় বা অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কোনো প্রকার কথাবার্তা বলেন নাই কিংবা সম্মতি নিতে আসেন নাই ।
তিনি এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন ভাবে শিক্ষক, ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগনকে নানা ভাবে হুমকি, অপমান ও হয়রানি করে আসছেন।
তিনি যে ভাবে শিক্ষকদের নির্যাতন ও হয়রানি করছেন তার কিছু বর্ননা নিচে তুলে ধরা হলো।
১। ঝাড়বাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কবিরাজহাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নীতিমালা না মেনে জোরপূর্বক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন।
২। নিজপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কে চরম অপমান করেন এবং
চাকুরিচ্যুত করার হুমকি প্রদান করেন।
৩। কবিরাজহাট আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন।
৪। সভাপতি হিসাবে বিলে স্বাক্ষর করার সময় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নেন।
৫। কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নামে আশি হাজার টাকা উত্তোলন বিষয়ে মিথ্যা অপবাদ প্রদান করেন।
৬। যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূণ্য পদ রয়েছে সেই প্রতিষ্ঠান প্রধান কে নিয়োগ বানিজ্যের উদ্দেশ্যে নিয়োগ প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
৭। সাহেবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও চৌধুরীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ২ জন সহকারী শিক্ষক কে অন্যায়ভাবে শোকজ করেন এবং হুমকি প্রদান করেন।
৮। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের ব্যবহার করে শিক্ষকদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ভুল পথে পরিচালিত করেন।
৯। চৌধুরীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব, আব্দুর রহমান কে তদন্ত চলাকলীন সময় ও ছুটিতে থাকা অবস্থায় অন্যায়ভাবে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
১০। ৫ই আগষ্টের পূর্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান হিসেবে নিজেকে জাহির করেছেন।
উল্লেখিত প্রেক্ষাপট ও কারন দৃষ্টে গত ০৪/১২/২০২৪ ইং বীরগঞ্জে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে স্বেচ্ছাচারী ইউএনও-কে প্রত্যাহারের জন্য শিক্ষক এবং জনতা মানববন্ধন করে।
উক্ত মানববন্ধনের ফলে প্রায় ৩ ঘন্টা পর দিনাজপুর থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসেন এবং শিক্ষক নেতৃবৃন্দসহ এলাকার কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তির সাথে আলোচনায় বসেন।
তিনি সকলের অভিযোগ মন দিয়ে শুনার পর আশ্বাস দেন অতিশীঘ্রই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফজলে এলাহী কে প্রত্যাহার করা হবে।
তারই প্রেক্ষিতে মানববন্ধন স্থগিত করা হয়।
আমরা আশা করি অতি শীঘ্রই এই উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে প্রত্যাহার করা হবে অন্যথায় ছাত্র শিক্ষক ও জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খামার খড়িকাদম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ কাদের।
সে সময় শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ও কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুল ইসলাম, আন্দোলনের অন্যতম নেতা পলাশবাড়ী ইউএসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফশিউল আলম চৌধুরী, আমতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান হাবিব, ঘোড়াবান্দ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, আত্রাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ এমদাদুল হক, প্রাণনগর আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম, আমিনা করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ কুমার সরকার, পলাশবাড়ী বি কে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহী মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, যে কেউ অভিযোগ করতে পারে।