মোঃনাজমুল মোরেলগঞ্জ সংবাদদাতাঃ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী কালাচাঁদ আউলিয়ার ২১০তম মেলা।২০০ বছরের বিটিশ শাসন আমলের ইতিহাসে বাংলার ঐতিহ্য সম্বলিত এক রহস্যময় কালাচাঁদের কাহিনী লোকমুখে ছড়ানো বিভিন্ন অলৌকিকতার নিদর্শন সত্যিই আবাক করার মতো, স্থানীয় বৃদ্ধদের থেকে শোনা কাহিনী আজও লোকমনে সৃষ্টি করে কল্পনার কেউ কেউ আবার বলে থাকেন ছোট অবস্থায় কালাচাঁদ আউলিয়া পানগুছি নদীতে ভেসে এসেছিল এবং বারইখালী নদীরপাড় ঘেষা কাজী বাড়ি এলাকায় আস্থানা গেড়েছিলেন তিনি। লোকমুখে রয়েছে তার বিভিন্ন ধরনের অলৌকিক কাহিনী।তাইতো মোরেলগঞ্জ সদরের বারইখালী এলাকায় পীর কালাচাঁদ আউলিয়ার মাজারকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর কালা চাঁদ ফকিরের মৃত্যুদিবস উপলক্ষে বাংলা সনের ২৫ অগ্রহায়ণ থেকেই শুরু হয় এই মেলা।প্রথম দিকে এখানে শুধু মাত্র ১ রাতের জন্য ফকিরদের জমায়েত ঘটতো।পর্যায়ক্রমে তা মেলায় রূপ নেয়।লোকমুখে শোনা যায় ৯০’র দশকেও এখানে ১ দিন স্থায়ী হতো এ মেলা।পরে ২০১০সাল থেকে বেড়ে যায় এর পরিধি ও স্থায়ীত্ব।এবারের মেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই জমে উঠেছে বেশ,সোমবার সরেজমিনে মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে,নারী পুরুষ ছোট বড় নানা ধরনের ক্রেতার সমাগম।প্রতি দোকানে ১ লাখ টাকারও বেশি বিক্রির আশা করছেন দোকানীরা।এবারের মেলায় লোকসমাগম বেশি হবে বলেও আশা করছেন তারা।পান বিক্রেতা ছোবাহান হাওলাদার, মুড়ির মোয়া বিক্রিতা আব্দুল লতিফ, দেলোয়ার হোসেন, আচার বিক্রেতা জুবায়ের আল মাহমুদ বলেন,কালাচাঁদ মেলার মাঠে প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে দোকান নিয়ে আসছি । গত কয়েক বছর করোনার জন্য মেলা হয়নি। তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম । এবার লোকসমাগম হলে বিগত বছরগুলোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।দাফতারিক কাগজপত্র অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে মেলা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটি।এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি স্টল বসেছে মেলায়। রয়েছে নাগরদোলা, চরকা, রকমারি খাবারের দোকান, শিশু খেলনা,ফার্নিচারসহ বহু রকমের কসমেটিকসের স্টল।কাঁলাচাদ আউলিয়ার মাজার খাদেম মোঃ মাসুম খান চুন্নু জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কালাচাঁদের হাজার হাজার ভক্ত ও দরবেশরা কালাচাঁদের মাজারের পাশে অবস্থান করে তাদের নিজ নিজ আচার ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রার্থনায় মগ্ন থাকেন। বহু লোক মনস্কাম পূরণে মাজারে মানতের টাকা দান করেন। রাতভর চলে ওরস, মুর্শিদী ও মাইজভান্ডারী গান।এছাড়াও ভক্তরা কালাচাদঁ আউলিয়ার মাজারে আগরবাতি আর মোমবাতি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। মেলা চলাকালীন সময়ে সর্বসাধারণের জন্য থাকছে মহিষ ও খাসির খিচুড়ি। মেলা ভাঙার পরও কিছু কিছু দোকান টানা ১ মাস এখানে থেকে যাবে বলে জানিয়েছেন মেলা পরিচালনা কমিটি।এছাড়াও মেলার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা নিরাপত্তায় প্রসাশনের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান মেলা কমিটির সদস্যরা।,