শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার তাওয়াকুচা সরকারি বালু মহলটি বিজিবি'র অযাচিত হস্তক্ষেপে বন্ধ রাখায় বিপাকে পরেছে ওই বালু মহলের ইজাদার সহ বালু ঘাটের শতশত শ্রমিক। এই বিষয়ে ইজাদার মো. আক্তার হোসেন জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত আবেদন করেও মিলছেনা কোন প্রতিকার। এতে ব্যাপক ক্ষতির আশংকায় রয়েছে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকায় নেয়া বৈধ বালু মহালের ইজারাদার আক্তার হোসেন।জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৯ জুলাই শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকুচা এলাকার বিভিন্ন দাগের ৭ একর ২৭ শতাংশ জমি থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ১ বছর মেয়াদে ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমাদানপূর্বক মেসার্স শামীম বস্ত্রালয়ের মালিক মো. আক্তার হোসেন এর অনুকূলে ইজারা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। যার স্মারক নং-৩১.৪৫.৮৯০০.০১০.০৬.০২২.২৩.৫৫২ এবং শেষ মেয়াদ ২০২৫ সালের ১৩ এপ্রিল।তফসিল মোতাবেক স্থানীয় ভূমি অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসন উক্ত ইজারাদারকে উক্ত নদী থেকে বৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির জন্যে যৌথভাবে ঘাট বুঝিয়ে দেন। এর পরে থেকে ইজারাদার ওই বালু মহল থেকে বৈধভাবে বালু উত্তোলন সহ বিক্রি করে আসছে। এদিকে উক্ত বালু মহালে সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনিন্দিতা রানী ভৌমিক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল নিয়মিত তদারকি করে আসছেন। সেইসাথে কেউ যদি ইজারা বর্হিভুত নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকেন,সেক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে জেল, জরিমানা সহ নানা ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকেন। ফলে কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাহস পায়না। কিন্তু চলতি বছরের ২০ নভেম্বর ময়মনসিংহ সেক্টরের বিজিবি সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোস্তাফিজুর রহমান শান্তিপূর্ণ এই বৈধ বালু মহালটি বন্ধ করে দেন। সে সময়ে ওই কর্ণেলকে বালু মহাল বন্ধের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি ইজারাদারের লোক জনকে জানান,জেলা প্রশাসক ম্যাজিস্টেট,আমিও ম্যাজিেস্টট। তিনি ইজারা প্রদান করেছেন, আমি বন্ধ করে দিয়ে গেলাম। শুধু তাই নয়,এই বালু মহাল পূণরায় মাপতে হবে,এরপর চালু হবে। এরপর ওই কর্ণেলের কথামতো গেলো ২৭ নভেম্বর
ভূমি অফিস কর্তৃক উক্ত বালু মহালটি তাওয়াকুচা বিজিবি'র ক্যাম্প কমান্ডার,স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বালুমহালটি পূণরায় পরিমাপ করা হয়। এতে তফসীল বহিভূর্ত অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু বিজিবি'র অযাচিত হস্তক্ষেপ বালু মহালটি অদ্যবধি বন্ধ থাকায় একদিকে শতশত শ্রমিক অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। অপরদিকে ইজারাদার ঋণ করে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখন নিঃস্ব হওয়ার পথে।
উপরোক্ত সুষ্ট পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে চলতি মাসের ১ তারিখে জেলা প্রশাসন বরাবরে আবেদন জানিয়েও কোন সুফল পাইনি ইজারাদার। এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম রাসেল জানান,বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুযায়ী জেলা প্রশাসক,শেরপুর কর্তৃক বালু মহালটি ইজারা প্রদান করেছেন। এখানে বিজিবি'র অযাচিত হস্তক্ষেপ ঠিক হয়নি।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান,উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় ফরিদুল,মামুন,ফরহাদ সহ আরো অনেকে জানান,এই বৈধ বালু মহালটি বন্ধ থাকায় এলাকার শতশত শ্রমিক মানবেতর ভাবে জীবিকা নির্বাহ করছে। আমরা এর দ্রুত নিষ্পত্তি চাই।এদিকে বৈধ বালু মহালের ইজারাদার মো. আক্তার হোসেন জানান,আমি বৈধভাবে সরকারের কোষাগারে প্রায় দেড় কোটি টাকা জমা দিয়ে ইজারা নিয়েছি। প্রশাসন কর্তৃক হয় আমার নেয়া বালু মহাল খোলে দেয়া হউক,নতুবা আমার প্রদানকৃত টাকা আমাকে ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করুক। আমি বিজিবি আর প্রশাসনের কাঁদা ছোড়াছুড়ি দেখতে চাইনা।