মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয়েছিল জগন্নাথপুর উপজেলা এ উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে আনন্দ র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল কাইয়ুম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, সাবেক কমান্ডার হাজী আব্দুল কাদির, বর্তমান কমান্ডার আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি শাহ সিরাজ কুতুবী।
উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আছলম উল্লা, ধীরেন্দ্র কুমার দাস, নরেন্দ্র কুমার দাস, কবিন্দ্র দাস, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের শাহ কামাল, শাহ জামাল, শাহ আফজল, রাসেল মিয়া, গোপাল ঘোপ, খোকন ঘোপ, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, উপজেলার শ্রীরামশ্রী ৩১ আগস্ট ও ১ লা সেপ্টেম্বর রাণীগঞ্জ বাজারে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাক হানাদাররা। যা আজও এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে উঠে। এরপর ৪ ঠা ডিসেম্বর ভোরে এসে জগন্নাথপুর পৌঁছায় রাজাকার ও পাক হানাদার বাহিনী। জগন্নাথপুর থানাকে মূল ঘাটি হিসেবে চিহ্নিত করে। এ সময় মুক্তিবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরাও যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়।
জগন্নাথপুর বাজারের মির্জা ব্যারিস্টার আব্দুল মতিন মিয়ার বাড়ির দক্ষিণ নিকটে যুদ্ধের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করলে পাক-হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিবাহিনীকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। ওই যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর পরে মুক্তি বাহিনী পিছু হটে।
৯ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর থানাকে শত্রুমুক্ত ঘোষণা করেন। সাহসী যুদ্ধাদের কাছে রাজাকার, পাকসেনারা সেদিন আত্মসমর্পণ করে। জগন্নাথপুর থানায় প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার মরহুম মির্জা আব্দুল মতিন। মুক্তিযুদ্ধে এ থানায় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে মুক্ত হয় জগন্নাথপুর থানা।
হাওরের নৌপথে ও সড়কপথে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানে জগন্নাথপুর শত্রুমুক্ত হওয়ায় স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় দিন অতিবাহিত করা জনতা রাস্তায় নেমে এসে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানান। জয় বাংলা স্লোগানে তখন মুখর হয়ে ওঠে জগন্নাথপুর উপজেলা।