শহিদুল্লাহ্ আল আজাদ. স্টাফ রিপোর্টারঃ
খুলনায় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তেলবাজি বন্ধ করতে হবে। কে ভবিষ্যতে আসবে সেদিকে খেয়াল রাখবেন না। সাদা পোশাকে কাউকে গ্রেপ্তার করা চলবে না। আইডি শো করতে হবে। সোমবার ৯ ডিসেম্বর দুপুরে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কোন রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুযোগ না দেয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোন নিরাপরাধ যেন শাস্তি না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দিত। এতে ১০ জনের নাম আর ২০০-৩০০ বেনামী। এখন পুলিশের থেকে চলে গেছে সিভিলে, ১০ জনের নাম বাকী ২০০-৩০০ বেনামী। যারা দোষী নয়, তাদের নাম দিয়ে আমাদের তদন্ত কাজ কঠিন করছেন এবং একজন কালপিটও কিন্তু বের হয়ে যাবে। অনেক ভুয়া মামলা হচ্ছে। সব ভুয়া মামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোন দোষীকেও ছাড় দেওয়া হবে না এবং নিরপরাধ কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। কিন্তু অভিযানে এখনও আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এই অস্ত্রগুলো যতো দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করতে হবে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের মধ্য দিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় মব জাস্টিসের সংখ্যা বেড়ে গেছে। অনেকে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। যে কারণে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। যদি কেউ অন্যায় করে তাহলে তাকে আইনের হাতে সোপার্দ করেন। এটা বন্ধে জোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে অনেক কিছু প্রচার করে। আপনারাই পারে সত্য ঘটনা প্রকাশ করে প্রতিবাদ করতে। সত্য ঘটনা প্রকাশ করে ওদের মুখে চুনকালি দিতে পারবেন। যেখানে যা ঘটেছে সত্যিটা প্রকাশ করেন, এতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সীমান্তে কোন রকমের ছাড় দিব না। তারা বহু সুবিধা নিয়েছে আমাদের কাছ থেকে। এরা এতো সুবিধা নিয়েছে যে এখন সুবিধা পাচ্ছে না বলেই তারা বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা করছে। এই সুবিধা আর দেওয়া যাবে না। সবকিছু লুট করে নিয়ে যারা ওপারে (ভারতে) চলে গেছে তারা খুব আরাশ আয়েশে আছে। তারা ওখান থেকে কিছু নির্দেশনা দিচ্ছে, আর আমাদের এখানে কিছু রয়ে গেছে তারা খুব লাফাচ্ছে। কিন্তু এই লাফানো খুব বেশিদিন বরদাস্ত করা হবে না। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা যেন বেশি বাড়াবাড়ি না করে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) মো. বাহারুল আলম বলেন, আমি কিছুদিন আগে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশের দায়িত্বগ্রহণ করেছি। আমি সকলের আন্তরিক সহযোগিতা চাই। আপনাদের সহযোগিতার বলে বলিয়ান হয়ে এদেশে, সমাজে একটি স্থিতাবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আশা করি আমার এই পথচলায় আপনারা সহযোগী হবেন। সকলের কল্যাণ কামনা করি। বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা নেভাল এরিয়া কামান্ডার রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, বিজিবি মহাপরিচালক জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ১০৫ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: জুলফিকার আলী হায়দার, ডিজিএফআই খুলনার কর্ণেল জিএস সৈয়দ আসাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক। সূচনা বক্তব্য রাখেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো: ফিরোজ সরকার।