বিশেষ প্রতিনিধি :
উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আগাম আলু তোলা শুরু করেছেন চাষিরা। এসব আলু যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কৃষকরা বলছেন, আগাম আলুতে ফলন কম হলেও ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি বিঘায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ করছেন কৃষকরা। এতে খুশি আলুচাষিরা।
১৩ ডিসেম্বর) উপজেলার ভানোর চাইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে।
আলুচাষি মাসুদ জানান, দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন তিনি। এতে দুই বিঘা জমিতে আলু মিলেছে ৮৬ মণ। প্রতি কেজি আলু বিক্রি করেছেন ৭১ কেজি টাকা দরে। দুই বিঘা জমির আলুর মূল্য ২ লাখ ৪১ হাজার টাকা। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ হবে তার।
আলুচাষি ফারুক হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে আশানুরূপ আলুর ফলন পাচ্ছে না কৃষকরা। প্রতি বিঘা জমিতে ৭০ থেকে ১০০ মণ আলু ফলন হওয়ার কথা। অনেকেই দাবি করছেন দামের আশায় পরিপূর্ণ বয়স না হতেই আলু তোলায় ওজন কম এবং ফলন কম হচ্ছে।
ইউটিউবে ভাগ্য বদল, গ্রামে থেকেও মাসে আয় দুই লাখ টাকা
সাবাজপুর গ্রামের আলুচাষি মনসুর আলী জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষাবাদে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে ২০ হাজার টাকা বেশি। আলু বীজের অতিরিক্ত দাম না বাড়লে এই অতিরিক্ত খরচ কৃষকদের গুনতে হতো না।
স্থানীয় আলু ব্যবসায়ী আলী বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে উঁচু জমির আলু তোলা শুরু করেছেন আলুচাষিরা। এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা সর্বনিম্ন ৬১ টাকা প্রতি কেজি আলু ক্ষেত থেকে কিনেছেন তিনি। প্রতিদিন দুই থেকে তিন ট্রাক আলু কিনে তিনি কিনে ঢাকার বাজারে পাঠাচ্ছেন।
এদিকে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তা বাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন হাট বাজারগুলোয় নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা জানান, দাম বেশি হওয়ার কারণে এখনো পুরোনো আলু বেশি বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ২০২২ সালে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ২ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। পরের বছর ২০২৩ সালে ৩শ হেক্টর কমে ২ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। তবে গত বছরের দাম পেয়ে চলতি বছর আবারও ২ হাজার ৭শ হেক্টর জমিতে আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ বেড়েছে আরও ৩শ হেক্টর। এসব জমি থেকে পায় ৬১ হাজার ২৩০ মেট্রিক টন আলুর আশা করছে কৃষি অধিদপ্তর।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন সোহেল জানান, উপজেলায় সেভেন, গেনুলা ও স্টিক জাতের আলু আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। আগাম জাতের সেভেন আলু তোলা শুরু করেছেন কৃষক। এতে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক। আমরা আশা করছি, গতবারের মতো কৃষকরা আলুর দাম পাবেন এবং বাম্পার ফলন হবে।