রাসেদ বিল্লাহ চিশতীঃ নোয়াখালী সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে (২২) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মো. আবদুর রহমান (৩২) নামে স্থানীয় এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত মামলা রুজু করেনি।
এর আগে শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী বাদি হয়ে চরজব্বর থানায় ওই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মো. আবদুর রহমান চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. খুরশিদ আলমের ছেলে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন।
বাদির অভিযোগ, আমার স্বামী চট্টগ্রাম থাকে। আমি দুই বছরের ছেলে সন্তান নিয়ে ঘরে একা থাকি। আবদুর রহমান প্রায় সময় নানান যৌন হেনস্তামূলক কথা বলে। গত ১০ ডিসেম্বর সে আমাকে রান্না ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় আমি পাশের ঘরে পালিয়ে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করি।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমার স্বামী চট্টগ্রাম থেকে বাড়ি এসে মামলা করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালীরা সালিশ বৈঠক করে সমাধান করবে বলে টালবাহানা করেন। এক পর্যায়ে সালিশ বসিয়ে কোনো বিচার না করে সময় দিয়ে বিচারকরা চলে যান। পরে আমি থানায় অভিযোগ করি। এখন আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীর ভাসুর জানান, আসামি যুবদলের নেতা হওয়ায় এ ঘটনার সঠিক বিচার হচ্ছে না। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার চাই। আসামি যেই হোক তার শাস্তি চাই।
স্থানীয় সালিশদার মো. সেলিম মেম্বার বলেন, সালিশ বৈঠকে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। আসামি আবদুর রহমান ওই নারীকে শ্লীলতাহানি করেছে বলে বাদী দাবি করেছেন। এখানে একজন স্বাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় পরবর্তী তারিখ দিয়ে আমরা চলে আসি। সালিশে চরওয়াফদা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আমিনও উপস্থিত ছিলেন।
অভিযুক্ত আবদুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, পূর্বের সম্পত্তির বিরোধ থাকায় আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কার সঙ্গে সম্পত্তির বিরোধ জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সূবর্ণচর উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি বেলাল হোসেন সুমন অভিযুক্ত আবদুর রহমান চর আমান উল্যাহ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সহ-সভাপতি বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আমার কাছে আসার পর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করতে বলা হয়েছে।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া বলেন, ভুক্তভোগী নারীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ৫ আগস্টের পর দিন বদলে গেছে। আসামি কোন দল করে তা এখন দেখার সুযোগ নেই। অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ভুক্তভোগীকে আইনগত সহায়তা দেওয়া হবে।