আজ ২২শে ডিসেম্বর রবিবার, ঠিক সকাল সাতটায়,সপরিবারে ৫০ জনকে নিয়ে রওনা দেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের, বড় শিমুলিয়া , হরে কৃষ্ণপুর গ্রামে শ্রী শ্রী রাধা মাধব মন্দিরের উদ্দেশ্যে মানত শোধের জন্য, রাধা মাধব মন্দিরে পুজো দিয়ে বহু দিনের আশা পূর্ণ করলেন বাহাদুর পরিবার, প্রায় তিনশর বেশি এলাকার মানুষকে বসিয়ে ভোগ খাওয়ানোরও আয়োজন করেন সন্তোষ বাহাদুর ও প্রতিমা বাহাদুর। কোন কিছুর ত্রুটি রাখেননি, পুজো থেকে অন্য খাওয়ানো পর্যন্ত। এমনকি বাতাসা দিয়ে হরিলুটো দেন। এলাকার অগণিত ভক্ত উপস্থিত হন মন্দিরের মধ্যে।
উপস্থিত ছিলেন বাহাদুর পরিবারের মানত দাতা সন্তোষ বাহাদুর, প্রতিমা বাহাদুর, হীরা বাহাদুর, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিবারের মল্লিকা বাহাদুর, মৌসুমী বাহাদুর ,পিংকি বাহাদুর, পূজা বাহাদুর, আরাধ্যা বাহাদুর, সহ পার্বতী বিষই, সুকুমার বিষই, দীপক বিষই, মন্দিরের সভাপতি কাজল সামন্ত ও সেক্রেটারী বাপি সামন্ত সহ অন্যান্য প্রতিবেশীরা। উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের পুরোহিত পতিতপাবন অধিকারী গোস্বামী, যিনি ১৩ বছর ধরে এই মন্দিরে পুজোপাঠ করে চলেছেন, শুধু রাধামাধব মন্দিরে নয় , বিভিন্ন প্রান্তে যেমন দিল্লী, রাজপুত, মুম্বাই ও মায়াপুর সমস্ত জায়গায় তিনি পুজোর পূজা করেন। এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ বছর আগে।
কলকাতা থেকে দেড়শো কিলোমিটার দূরে রাধামাধব মন্দিরে প্রবেশ করার পর জানা যায়, এরকম একটি গ্রামের মধ্যে কিভাবে মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, এবং সেই মন্দিরে ভক্তদের সমাগম কেন হয়, শুধু তাই নয়, মন্দিরে প্রতিদিন চার টাইম ভোগের আয়োজন ও হয়ে থাকে। এবং প্রতিবছর চৈত্র মাসে এই মন্দিরে বাৎসরিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন হয়। দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে ভিড় জমান মন্দিরের সামনে। একসময় মন্দিরটি পরিচালন করার মতো লোক বলও পাওয়া যেত না, কিন্তু আজ গ্রামের মানুষেরা একত্রিত হয়ে এই মন্দিরের ভার নেন, এবং আস্তে আস্তে মন্দিরটি রূপ আরো পেতে থাকে, বিভিন্ন দেশ থেকে ভক্তরা এসেই মন্দিরে পুজো দেন এবং তাদের মানত শোধ করেন।
তেমনি বাহাদুর পরিবারের গৃহকর্তা সন্তোষ বাহাদুর ও গৃহকর্ত্রী প্রতিমা বাহাদুর বহুদিন পূর্বে এই মন্দিরে মানত করেছিলেন , কিন্তু তারা কোন কারণে সেই মানত শোধ করতে পারছিলেন না, তাই সকলকে সঙ্গে নিয়ে দিনক্ষণ দেখে, ভোরেই রওনা দেন এই রাধা মাধব মন্দিরে মানত শোধ করার জন্য, পুরোহিতের উপস্থিতিতে এবং মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে তিনি মানত শোধ করেন এবং এলাকার ভক্ত বৃন্দদেরকে বসিয়ে ভোগ খাওয়ানোর আয়োজন করেন।
তিনি বলেন আমি আজ খুশি হয়েছি এই কারণে, আমার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সবাই উপস্থিত হয়েছেন, এবং সুন্দরভাবে আমি সব কিছু সম্পন্ন করতে পেরেছি, আমি এলাকার ও মন্দিরের ভক্তবৃন্দ ও সদস্যদের কাছে কৃতজ্ঞ। যেভাবে আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমি এই মন্দিরের ইতিবৃত্ত জানতে পেরে কোন এক কারণে মানত করেছিলাম, আর এই সেই মানত আজ সম্পূর্ণ করতে পেরে ধন্য হয়েছি, এই মন্দিরে আমার পরিবারেরা এসে আনন্দিত আপ্লুত। শ্রী শ্রী রাধা মাধব জি কে শতকোটি প্রণাম। আমি আজ সার্থক।
রিপোর্টার সমরেশ রায় ও শম্পা দাস ,পশ্চিমবঙ্গ