মকবুল হোসেন ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানা আয়োজিত অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার সংক্রান্তে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ২৩ ডিসেম্বর বেলা ১ টায় প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি ড.মোঃ আশরাফুর রহমান,পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম উপস্থিত ছিলেন, কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলাম খান, ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম, ওসি (অপারেশন) নূর মোহাম্মদ, কোতোয়ালী থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই আনোয়ার হোসেন সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগন এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
রেঞ্জ ডিআইজি ড. আশরাফুর রহমান প্রেস ব্রিফিং কালে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের অভিযানের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন গত ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, ইনচার্জ ৩ নং পুলিশ ফাড়ির নেতৃত্বে এসআই মোঃ নাহিদ পারভেজ, এসআই মোঃ সোহেল রানা, এএসআই রাসেল ইয়ার খান, এটিএসআই কবিরুল হাসান, কনস্ট্রেবল শাহজাহান, আনিছুর রহমান, আরিক এবং ইয়াসমিন আক্তার থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান ডিউটি চলমানকালে রাত পৌনে ১ টায় ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানাধীন মাসকান্দা ফিসারী এলাকায় ময়মনসিংহ টু ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে আকস্মিক চেকপোষ্ট ডিউটি চলমানকালে ৩ জন মোটর সাইকেল আরোহী পুলিশের চেকপোষ্ট কর্তব্যরত দেখে মোটর সাইকেল রাস্তায় ফেলে মাসকান্দা মৎস বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের ওয়াল টপকাইয়া ভেতরে ঢুকে যায়।
এ ঘটনায় আভিযানিক পুলিশ দলের সন্দেহ হলে মাসকান্দা মৎস বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে ঢুকে তাদের অবস্থান নির্ণয় করাকালে মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের পূর্ব দক্ষিনে স্টাফদের থাকার রুম হতে ৪ জন ব্যক্তিকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখে ফেলেন।
তখন পার্শ্ববর্তী রুমের অস্থায়ী গার্ড হৃদয় এর স্ত্রী ফারজানা শান্তা (২২)কে আটক করা হয়। ঘটনাস্থলে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ধৃত আসামী ফারজানা শান্তা (২২) কে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে তার স্বামী হৃদয়,তন্ময়সহ আরো অজ্ঞাত নামা ১/২ জন মিলে স্টাফদের রুমে ঢুকে ছিল।
তখন ধৃত ফারজানা শান্তা (২২) কে সাথে নিয়ে স্টাফদের থাকার রুম এবং তার নিজের রুম তল্লাশী করে একটি 9MM বিদেশী পিঞ্জল, যার বডিতে M19911A U.S.ARMY এবং NO 87107, MADE IN JAPAN লেখা, একটি 32 কাঠের বাটযুক্ত বিদেশী পুরাতন পিস্তল এবং একটি পুরাতন ম্যাগজিন, যার বডিতে অস্পষ্ট লেখা, একটি NITRO NY200 Athena এয়ারগান, যাহার সিরিয়াল নং-BCO7461A1 সহ সীসা গুলি ১৩০ রাউন্ড, একটি টেলিস্কোপ, যাহার গায়ে Leveling position লেখা, একটি সামুরাই, যাহা কালো কভারযুক্ত লম্বায় ১৭ ইঞ্চি, একটি স্টীলের সুইচ গিয়ার চাকু, যাহা লম্বায় ১০ ইঞ্চি সহ বিভিন্ন সাইজের সর্ব মোট ০৬টি চাকু,০২টি কালো হলুদ রংয়ের বাটযুক্ত চাইনিজ কুড়াল, যা লম্বায় ১৪ ইঞ্চি, ০২টি কাঠের হাতলযুক্ত চাপাতি দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ১৫ ইঞ্চি ও ১২ ইঞ্চি, ১০ টি রামদা যা বাটসহ লম্বায় যথাক্রমে ৩৪,৩০,২৭,৩০,৩১,২৯,২৯,৪২,৩০ ও ২৬ ইঞ্চি, ০১টি বড় ছুরি যা বাটসহ লম্বায় ২৯ ইঞ্চি,একটি ঢেগার, যা লম্বায় ৩০ ইঞ্চি, ০৩ টি দেশীয় তৈরী চাইনিজ কুড়াল যা বাটসহ লম্বায় ২৩,২৬ ও ২৬ ইঞ্চি, ০৬টি IICE BARE ITALL VODKA প্রতিটি ৭৫০ মিলি, সর্ব মোট ৪৫০০ মিলি মূল্য অনুমান ৩০ হাজার টাকা, ০৪টি ROYAL STAG DELUXE WHISKY, যার প্রতিটি ৭৫০ মিলি সর্ব মোট ৩০০০ মিলি মূল্য অনুমান ১৬ হাজার টাকা, ০৭টি ROYAL STAG DELUXE WHISKY, যা প্রতিটি ৩৭৫ মিলি, সর্ব মোট ২৬২৫ মিলি,মূল্য অনুমান ১৪ হাজার টাকা, ০৮টি officer's choice BLUE PURE GRAN WHISKY যা প্রতিটি ৩৭৫ মিলি সর্ব মোট ৩০০০ মিলি মূল্য অনুমান ১৬ হাজার টাকা, ৩৫টি ROYAL STAG DELUXE WHISKY প্রতিটি ১৮০ মিলি সর্ব মোট ৬৩০০ মিলি মূল্য অনুমান ৩৫ হাজার টাকা, ০৫ পিস PHENSEDYL, যার গায়ে ইংরেজীতে Triprolidine Hydrochloride & codei phosphate Cough syrup লেখা যা প্রতিটি ১০০ মিলি, সর্ব মোট ৫০০ মিলি মূল্য অনুমান ১৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়।
যা সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিধি মোতাবেক ২৩ ডিসেম্বর দুপুর ১ টা ২৫ মিনিটে জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাদক দ্রব্যের সর্বমোট আনুমানিক মূল্য ১,২৬,০০০/-টাকা।
ধৃত ফারজানা শান্তা (২২)কে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় তার স্বামী পলাতক মোঃ হৃদয় মিয়া (২৪), পিতা-মোঃ কাজল মিয়া, মাতা-রানী বেগম, সাং-চর বাঘাদাইরা বেপারী বাড়ী, ডাকঘর-সেনবাড়ী, থানা-ত্রিশাল, হাল সাং-মাসকান্দা মৎস বীজ উৎপাদন কেন্দ্র, কোতোয়ালী, জেলা-ময়মনসিংহ এবং পলাতক মোঃ তন্ময় (২৫), পিতা-সোহরাব উদ্দিন, মাতা-রানী বেগম, সাং-বলাশপুর নয়াপাড়া কোতোয়ালী ময়মনসিংহকে এবং অজ্ঞাতনামা ১/২ জন আসামীদের নিয়ে মৎস খামারে চাকুরীর পাশাপাশি অস্ত্র ক্রয় বিক্রয়সহ নেশাজাতীয় মাদক দ্রব্য ক্রয় বিক্রয় করে থাকে।
ধৃত এবং পলাতক আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে অবৈধভাবে বিদেশী-দেশী আগ্নেয়াস্ত্র এবং সামুরাই সুইচগিয়ার চাকু, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, রামদা, ছুড়ি, ঢেগার, দেশীয় চাইনিজ কুড়াল হেফাজতে রেখে ১৮৭ সনের Arms Act এর 19-A/19-(F) ধারায় এবং অবৈধভাবে মাদক দ্রব্য হেফাজতে রেখে ২০১৮ সনের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ৩৬(১) এর ২৪ (খ)/১৪(খ)/৩৮/৪১ ধারায় অপরাধ করায় আসামীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা ২ টি তদন্তাধীন।