শ্রী মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া
পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি।
পটুয়াখালী জেলা কুয়াকাটা মহিপুর থানার খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব বড়দিন, যা প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর পালন করা হয়।
এটি যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে পরিচিত, যিনি খ্রিস্টধর্মের প্রতিষ্ঠাতা এবং খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুযায়ী ঈশ্বরের পুত্র।
বড়দিনের সঙ্গে জড়িত আছে ধর্মীয়, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য, যা এই উৎসবকে সারাবিশ্বে বিশেষ মর্যাদা দেয়।যিশুখ্রিস্টের জন্মের তাৎপর্য, ২৫ ডিসেম্বর তারিখ নির্বাচন। বড়দিন উদযাপনের ঐতিহ্য
বড়দিনের সর্বজনীনতা
বড়দিনের মূল বার্তা।
যিশুখ্রিস্টের জন্মের তাৎপর্য
বাইবেলের নিউ টেস্টামেন্ট অনুযায়ী, যিশুখ্রিস্ট বেথলেহেম শহরে কুমারী মেরির গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।
খ্রিস্টান বিশ্বাস অনুযায়ী, যিশু মানবজাতির পাপের মুক্তির জন্য ঈশ্বরের পাঠানো ত্রাণকর্তা।
তাঁর জন্ম সাধারণ মানুষ ও ঈশ্বরের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। যদিও যিশুর প্রকৃত জন্ম তারিখ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, চতুর্থ শতাব্দীতে রোমান ক্যাথলিক চার্চ ২৫ ডিসেম্বরকে তাঁর জন্মদিন হিসেবে নির্ধারণ করে।
২৫ ডিসেম্বরকে- যিশুর জন্মদিন হিসেবে নির্ধারণের পিছনে ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক কারণ রয়েছে। রোমান সাম্রাজ্যে শীতকালীন অয়নকালের, কাছাকাছি সময়ে “সোলইনভিকটাস” (অপরাজেয় সূর্য) উৎসব পালিত হতো।
এই উৎসবের সঙ্গে নতুন আলো ও জীবনের ধারণা জড়িত ছিল।
যিশুকে “জগতের আলো” হিসেবে বিবেচনা করে এই তারিখে তাঁর জন্মদিন উদযাপন শুরু হয়।
বড়দিন উদযাপনেরঃ ঐতিহ্য।
বড়দিন মূলত একটি ধর্মীয় উৎসব হলেও এর সঙ্গে বহু সংস্কৃতিগত অনুষঙ্গ যুক্ত হয়েছে।
বড়দিনের দিন খ্রিস্টানরা গির্জায় প্রার্থনা করে, বাইবেল পাঠ করে এবং যিশুর জন্মকাহিনি স্মরণ করে। এছাড়া ঘর সাজানো, ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন, উপহার বিনিময় এবং বিশেষ খাবার তৈরির মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়।
বড়দিনের সর্বজনীনতা
যদিও বড়দিন খ্রিস্টধর্মীয় উৎসব, এটি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য আনন্দ ও উদযাপনের উপলক্ষ হয়ে উঠেছে।
বিশ্বের অনেক দেশে এটি সরকারি ছুটির দিন এবং পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বিশেষ সুযোগ হিসেবে দেখা হয়।
বড়দিনের মূল বার্তা
বড়দিন মূলত ভালোবাসা, শান্তি, এবং মানবতার বার্তা বহন করে।
যিশুর জীবনের মাধ্যমে মানুষকে ক্ষমা, দয়া এবং আত্মত্যাগের শিক্ষা দেওয়া হয়।
এই উৎসব একদিকে ধর্মীয় তাৎপর্য বহন করে, অন্যদিকে এটি সবাইকে একত্রিত হওয়ার এবং সুখ-শান্তির বার্তা দেওয়ার অনন্য উদাহরণ।
২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উদযাপন যিশুখ্রিস্টের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম।
এই উৎসবের গুরুত্ব শুধুমাত্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-বরং এটি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, ঐক্য এবং আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ।
বড়দিনের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঘরে সাজসজ্জা, ক্রিসমাস ট্রি, রঙিন আলো, এবং উপহারের আদান-প্রদান শুরু হয়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এক আনন্দময় উষ্ণতার ছোঁয়া। এই উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য হল মানবজাতির প্রতি করুণা, ত্যাগ ও বন্ধনের মূল্যবোধকে উদযাপন করা। তাই বড়দিনের আগমন প্রতিটি হৃদয়ে নতুন আশা ও ভালোবাসার দিগন্ত উন্মোচিত করে।বড়দিনের আনন্দ, জীবনে নিত্য নতুন রঙ বয়ে আনুক।এই বড়দিনে জীবন হোক সুখ, শান্তি ও ভালোবাসায় ভরপুর”।বড়দিনের উষ্ণতায় ভরে উঠুক,হৃদয়।”জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে থাকুক খ্রিস্টের আশীর্বাদ।”
“এই উৎসব, মনকে আনন্দ এবং আশায় পরিপূর্ণ করুক”।পরিবারের উষ্ণতায় বড়দিনের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়।সবাইকে শুভ বড়দিন।
“এই বড়দিনে আপনার চারপাশ আনন্দ, ভালোবাসা আর সুখে ভরে উঠুক। শুভেচ্ছা জানাই!”
“শুভ বড়দিন।
খ্রীস্টান ধর্ম অনুসারীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব বড়দিনে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ।আগামী ২৫ ডিসেম্বর শুভ বড়দিন উপলক্ষে নিরাপত্তা নিশ্চতকল্পে গতকাল পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার জনাব,, আনোয়ার জাহিদ। পটুয়াখালী জেলা, এলাকাধীন শান্তি রাণী গীর্জা পরিদর্শন করে গীর্জার ফাদার ও গীর্জা পরিচালনাকারীদের, তিনি জানান শুভ বড়দিন উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কৌশলগত স্থানে স্ট্যাটিক ফোর্স, মোবাইল টহল টিম ও সাদা পেশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। শুভ বড়দিন কে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গুজব প্রতিরোধে সাইবার মনিটরিং ও সাইবার পেট্রোলিং জোরদার করা হবে।
পটুয়াখালী জেলা প্রতিটি গীর্জাসমূহের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আয়োজকদেরকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ, গির্জাসমূহে পর্যাপ্ত আলো, স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর বা চার্জার লাইট ও সিসি টিভির ব্যবস্থা রাখতে অনুরোধ জানানো হয়।জীবনের প্রতিটি বাঁকে যিশুর করুণা আর ভালোবাসা সঙ্গে থাকুক।আনন্দে ভরে উঠুক মন,বড়দিনে ফুটুক সুখের ফুলগন্ধন।
শুভ বড়দিন।