আজ ২৫শে ডিসেম্বর বুধবার, যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন এবং এই দিনটিকে বড়দিন হিসাবে পালিত হয় সারাদেশে, সকাল থেকে কলকাতার বিভিন্ন চার্চগুলি যেমন সুন্দর ভাবে সেজে উঠেছে, তেমনি সকাল থেকেই শুরু হয়েছে চার্চ গুলিতে প্রার্থনা সভা, সমস্ত খ্রীষ্টান ধর্মের মানুষেরা তাহাদের নিজ নিজ এলাকার চার্চ গুলিতে প্রার্থনার জন্য উপস্থিত হয়েছেন। তাহার সাথে সাথে বিভিন্ন ধর্মের মানুষজন সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছে চার্জগুলোতে দেখার জন্য, এবং খ্রিস্টীয় ধর্মের মানুষ থেকে শুরু করে অন্যান্যরাও মোমবাতি জ্বেলে যীশু খ্রীষ্টকে স্মরণ করছেন ও প্রার্থনা জানাচ্ছেন, এবং ২৫ সে ডিসেম্বর থেকে ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বিভিন্ন চার্চে বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
কলকাতার সেন্ট পলস ক্যাথিডাল চার্চ, অ্যালেন পার্ক চার্চ, সেন্ট থমাস চার্চ, থেকে শুরু করে অন্যান্য চার্চগুলিতে যেমন ভীড় জমিয়েছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষজন, তেমনি কলকাতার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানেও ভীড় জমিয়েছেন তারা বড়দিনের ছুটি কাটাতে, বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়ে সহ পরিবারদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন ভোর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে এবং এই দর্শনীয় স্থানগুলিতে।, ভিক্টোরিয়া , বিড়লা তারামণ্ডল ,রবীন্দ্র সদন, নন্দন ,চিড়িয়াখানা, কালীঘাট ,দক্ষিণেশ্বর, কোথাও এতটুকু ফাঁকা ছিল না, ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে তারা দর্শনীয় স্থানগুলি দেখার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয় দর্শকদের আনন্দ দিতে, মাঝে মাঝে দেখা যায় চার্লি চ্যাপলিন সেজে,, কোথাও শান্তা সেজে, আবার কোথাও গান গেয়ে মানুষদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করছেন শিল্পী থেকে হাস্য রসিকেরা।
দিন যত আস্তে আস্তে গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে আসছে, ভীড় ততো বেশি চোখে পড়তে দেখা যায়, প্রশাসনের অফিসার থেকে শুরু করে ভলেন্টিয়াররা হিমশিম খেতে থাকেন দর্শকদের সামলাতে, সমস্ত রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে দেওয়া হয় এবং দর্শনার্থীদের নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে যাওয়ার জন্য অফিসাররা অনুরোধ করতে থাকেন, এবং নির্দিষ্ট রাস্তার ক্রসিং দিয়ে পারাপার হতে বলেন, তেমনি ভিড় চোখে পরে মেট্রো থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাসে।
তবে প্রশাসনের তরফ থেকে রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়ায়, কিছু কিছু যাত্রী খোভ প্রকাশ করেন, তারা বলেন , একদিকে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে সময় বেঁধে দেওয়া হয়, আর প্রশাসন যেভাবে রাস্তা ঘুরিয়ে দিচ্ছেন, তাতে আমরা কিছুই দেখতে পায় না, যে উদ্দেশ্যে বাড়ির ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের এনেছি। তবু আমাদের কিছু করার নাই, চেষ্টা করছি ছেলেমেয়েদের কতটা ঘুরিয়ে আনন্দ দিতে পারি। এই সিটে কোন অন্ধকার থেকে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে বেরিয়েছি।
অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে সাড়া কলকাতা জুড়ে আলোর রসনায় ভেসে উঠে, সুন্দর আলোয় ভরে ওঠে চার্জগুলি থেকে শুরু করে রাস্তা ও ব্রিজগুলি, একদিকে যেমন সর্ব ধর্মের মানুষ মেতে উঠেছেন, তেমনি এই বড় দিনটিতে বাজারে বাজারে ভিড় জমিয়েছেন মানুষ কেক কেনার জন্য, বছরের এই দিনটিতে একটু কেক খাওয়ার জন্য, আর এই সময়ই বিভিন্ন কোম্পানীর বিভিন্ন রকমের কেক বাজারে সাজিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। আর ক্রেতারাও ভিড় জমান দোকানগুলিতে মনের মত একটি কেক কেনার জন্য। দাম যাই হোক। সব মিলিয়ে জমে উঠে সর্ব ধর্মের মানুষের বড়দিন। বাড়িতে বাড়িতে কেক খাওয়ার আনন্দ।
রিপোর্টার, সমরেশ রায় ও শম্পা দাস ,কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ)