স ম জিয়াউর রহমান, চট্টগ্রাম থেকে :
আজ বৃহস্পতিবার সকালেই ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়নের। কিন্তু মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুন লাগার খবরে ডাক পড়ে তারও। কিন্তু আগুন নেভাতে গিয়ে জীবন প্রদীপ নিভে গেছে বেপরোয়া ট্রাক চাপায়। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে নয়নের মৃত্যুতে মধ্যবিত্ত পরিবারটির কী হবে, সেই ভাবনাই এখন বেশি ভাবাচ্ছে স্বজনদের। পুরো পরিবার এখন শোকে স্তব্দ।
গত ২৬ ডিসেম্বর বুধবার দিবাগত রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নামে।
দায়িত্ব পালনে তেজগাঁও থেকে ছুটে গিয়েছিলেন স্পেশাল ইউনিটের এই সদস্যও। যুক্ত হয়েছিলেন আগুন নেভানোর কাজে। পানির পাইপ সংযোগ দিতে সচিবালয়ের রাস্তার উল্টো পাশে যাওয়ার সময় বেপরোয়া গতির একটি ট্রাক ধাক্কা দেয় তাকে। মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলেও বাঁচানো যায়নি সোয়ানুরকে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন তাকে।
সহকর্মীরা জানিয়েছেন, আজ ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালেই ছুটিতে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল নিহত সোয়ানুরের। রাতেই বাড়িতে যাওয়ার জন্য ব্যাগ গুছিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু মাঝরাতে ডাক পড়ায় ঘুম থেকে উঠেই যোগ দিয়েছিলেন পেশাগত দায়িত্ব পালনে। সেখানে প্রাণ হারিয়ে এখন বাড়ি ফিরছে তার নিথর দেহ। দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সোয়ানুরের মরদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়।
এদিকে, এই ফায়ার ফাইটারের মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ভেঙে পড়েছেন সোয়ানুরের বৃদ্ধ মা। ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে যেন পুরো বাড়ির আশপাশ।
সোয়ানুরের ভাতিজা জানান, তার চাচা চাকরির প্রতি দায়িত্বশীল ছিলেন। আগুনের ঘটনায় রাস্তায় পুলিশ ব্যারিকেড দিলে হয়তো এমনটা ঘটতো না। চাচা সোয়ানুরের পরিবারের পাশে যেন সরকার এগিয়ে এটাই তার চাওয়া।