1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
একটি হত্যাকান্ডে দুটি মামলা, জানে না নিহতের পরিবার - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
বুধবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
নতুন বছর উপলক্ষে দেশবাসীকে অগ্রিম শুভেচ্ছা, শ্রী মিশুক চন্দ্র ভুঁইয়া ছৈয়দুর রহমান-আনোয়ারা বেগম ফাউন্ডেশনের শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ “শিশু কানন আমার স্বপ্নের ঠিকানা” এর প্রতিটি শিক্ষার্থী আমার সন্তান : পরিচালক রুহুল আমিন শ্যামনগরে সড়ক দখল এখন মোটরসাইকেল পার্কিংয়ে নোয়াখালীতে সৌদি প্রবাসীকে মিথ্যা মামলা জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায় পুলিশ প্রধানের কাছ থেকে সাভার থানার ওসি জুয়েল মিঞা সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে স্মৃতি পুরস্কার ২০২৪ পেলেন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্প ২০২৪ কে বিদায় জানাতে এবং ২০২৫ কে বরণ করে নিতে মানুষের ঢল কলকাতা জুড়ে ৭৩ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার ও ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ৫ পীরগঞ্জে মোটর শ্রমিকের মৃত্যুর অনুদান প্রদান

একটি হত্যাকান্ডে দুটি মামলা, জানে না নিহতের পরিবার

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

 

ফাতেমা আক্তার :-
ছাত্র- জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর উল্লাসে মেতে ছিল সারাদেশ। রাজধানীর বাড্ডায় আনন্দ মিছিলে ছিলেন যুবক আল-আমিন। সেখানে এক সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে, এক পর্যায়ে রাতে আল-আমিনের শরীর ফুঁড়ে বেরিয়ে যায় একটি গুলি। প্রত্যাক্ষদর্শী হুসাইন আল-আমিনকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য মুকদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। ICU তে নেওয়ার ৫/১০ মিনিটের মধ্যে আল-আমিন মারা যায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের তালিকায় নাম রয়েছে আল-আমিনের। তাঁর পরিবার সরকার থেকে আর্থিক সুবিধা না পেলেও এই মৃত্যুকে পুঁজি করে অনেকেই নিতে চাইছেন সুবিধা। আল- আমিন হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে দুটি, বাদীও আলাদা। দুটি মামলার এজাহারে ঘটনাস্থলেরও মিল নেই, অনেক আসামির নামও ভিন্ন। যার হত্যাকান্ডে দুটি মামলা সেই আল-আমিনের পরিবার ও প্রত্যাক্ষদর্শী হুসাইন-ই জানত না মোকদ্দমার খবর, এমনকি একজন বাদীকে চেনেনই না তাঁরা। ৩৫ বছরের আল-আমিনের বাসা আফতাব নগর সংলগ্ন দক্ষিণ আনন্দ নগরে। মেরুল বাড্ডায় ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো পাশে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার পর গুলিবিদ্ধ হন আল-আমিন। এ ঘটনায় একটি মামলার বাদী আল-আমিনের দূরসম্পর্কের চাচা রহমান মাল এবং অন্যটির বাদী মোঃ মোজারুল নামের এক ব্যক্তি। আল- আমিনের দূরসম্পর্কের চাচা রহমান মাল বাদী হয়ে গত ২০ নভেম্ব ২০২৪ তারিখ ঢাকার আদালতে সি,আর মামলা দায়ের করেন যাহার নং- সি,আর ৬৬১/২৪।মহামান্য আদালত আল- আমিন হত্যাকান্ডে অন্য কোথাও মামলা দায়ের হয়েছে কিনা তদন্তের জন্য ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জকে আদেশ প্রদান করেন। আল- আমিন হত্যাকান্ডের ঘটনায় পূর্বে হাতিরঝিল থানায় মামলা হয়েছে বাদী রহমান মাল সেটা জনতো বিধায় কয়েক দিন পর মামলাটি প্রত্যাহার করেন। রহমান মাল বাদী হয়ে, আবার ১ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ আদালতে মামলা করেন। ২৭অক্টোবর ২০২৪ তারিখ হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন মোজারুল। রহমান মালের করা মামলাটির খবর গত ২০ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ জানতে পারেন নিহতের পরিবার। হাতিরঝিল থানায় মামলার খবর জেনেছেন এক আসামী ও পুলিশের কাছ থেকে, তাও অনেক পরে। আল-আমিনের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, আমার স্বামী নিহত হওয়ার পর সরকারের কাছে দেওয়ার কথা বলে অনেকেই বাসায় এসে মৃত্যু সংক্রান্ত কাগজ, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও ছবি নিয়ে গিয়েছিল। পরে কেউ আর দেখা করেনি, এখন শুনতেছি, দুটি মামলা হয়েছে। অন্যরা কেন মামলা করবে নিশ্চয়ই তাদের কোন স্বার্থ আছে। আল-আমিনের ভাই মোঃ পারভেজও একই অভিযোগ করেন। মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে রহমান মাল বলেন মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। নিহত আল-আমিনের ভাই মোঃ পারভেজ রহমান মালকে মামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, রহমান মাল তাঁকেও সদুত্তর না দিয়ে এ ব্যাপারে চুপ থাকতে বলেছেন। প্রত্যাক্ষদর্শী হুসাইন বলেন, গুলিবিদ্ধ আল-আমীনকে আমি নিয়ে গিয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আমার মোবাইল নাম্বার হাসপাতালে ভর্তির টিকিটে উল্লেখ রয়েছে যাহার নং- 01851605044। আমি হচ্ছি ঘটনার প্রধান সাক্ষী কিন্তু আমাকে মামলার বিষয়ে কেহ কিছুই জানায়নি। তিনি আরো বলেন, পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আল-আমিন নিহত হয়েছে, মিথ্যা ভাবে আসামি করে কাউকে হয়রানি করা যাবেনা। একটি মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনাস্থল বিটিভির বিপরীত পাশে হাতিরঝিলের মোল্লা টাওয়ারের সামনে আল-আমিন গুলিতে মারা যান। অন্য মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ভাটারার ১০০ ফুট সড়কে আল-আমিন নিহত হয়েছেন। নিহত আল-আমিনের স্ত্রী সুমি আক্তার, ভাই পারভেজ ও প্রত্যাক্ষদর্শী হুসাইন জানান, মেরুল বাড্ডা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আল-আমিন পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং এ বিষয়ে তথ্য প্রমান তাদের কাছে আছে। রহমান মালের দায়ের কৃত মামলায় আসামি তালিকায় থাকা ১/ আফরোজা আক্তার লাইজু পিতা আবুল হোসেন ফরাজী সাং- খানবাড়ী পশ্চিম চর বাঘড়ী থানা- রাজাপুর জেলা-ঝালকাঠী কে ৮৩ নং। ২/ হারুন অর রশিদ পিতা-মৃত জুলফিকার আলী মাস্টার সাং- চল্লিশ কাহনিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৪৯ নং। ৩/ কামরুল ইসলাম মৃধা পিতা-মৃত আতাহার আলী সাং- চল্লিশ কাহনিয়া থানা-রাজাপুর জেলা-ঝালকাঠী কে ১৫০ নং। ৪/ ফজলে হক খান পিতা-মৃত গোলাপ খান সাং- চল্লিশ কাহনিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৫১ নং। ৫/ মোঃ দেলোয়ার হাওলাদার পিতা- আলফাজ উদ্দিন সাং- চল্লিশ কাহনিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৫২ নং। ৬/ গোলাম মোস্তফা মহারাজ পিতা-মৃত মোবাশ্বের আলী কে ১৫৩ নং। ৭/ আব্দুল কুদ্দুস ওরফে রুহুল কুদ্দুস পিতা-মৃত মুনসের আলী পেদা সাং- পশ্চিম বাদুর তলা থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৫৪ নং। ৮/ কাশেম পিতা-মৃত শামসের আলী মুন্সী গ্রাম- মধ্য উত্তমপুর থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৫৭নং। ৯/ সাহাবুদ্দিন শুরু পিতা-মৃত আব্দুল গনি মিয়া সাং- নিজামিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠি কে ১৫৯ নং। ১০/ দুলাল হাওলাদার পিতা-মৃত মুনসের হাওলাদার সাং- চল্লিশ কাহনিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৬০ নং। ১১/ নুরুল হক পিতা – ফজলে হক সাং- মধ্য উত্তমপুর থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৬১ নং। ১২/ কালু মোল্লা পিতা- ছন্দু মোল্লা সাং-চল্লিশ কাহনিয়া থানা- রাজাপুর জেলা- ঝালকাঠী কে ১৬৩ নং আসামী করা হয়। উপরোক্ত ব্যক্তিদের দাবি ছাত্র- জনতার আন্দোলন চলাকালে তাঁরা একবারের জন্যও ঢাকায় আসেননি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরোধীতাও করেননি। অন্যের প্রভোচনায় বিনা অপরাধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ভাবে আমাদেরকে আসামির তালিকায় আনা হয়েছে। উপরোক্ত ব্যক্তিদের অভিযোগ কোন চক্র হয়রানি করতে কিংবা কারো ব্যক্তিগত প্রতিশোধ নিতে আসমির তালিকায় আনা হয়েছে। বাদী আমাদেরকে চিনেনা আমরাও বাদীকে চিনিনা। নিহত আল-আমিনের ভাই পারভেজ বলেন, আমার ভাই ঘটনাস্থল থেকে সংঘর্ষের ভিডিও আপলোড করে ফেইসবুকে ষ্ট্যাটাস দিয়েছেন। রাত সাড়ে ১২টায় শেষ ষ্ট্যাটাস দেন ফেইসবুকে, অর্থ্যাৎ তখনও আল- আমিন অক্ষত ছিলেন। আনুমানিক রাত আড়াইটার দিকে বাড্ডা থানা থেকে একদল পুলিশ বের হয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ডিআইটি প্রজেক্ট হয়ে রামপুরা ব্রীজের দিকে চলে যায়। তখন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে রাস্তায় আল- আমিন গুলিবিদ্ধ হন। আনুমানিক রাত ৩টার দিকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আল- আমিনের মোবাইল ফোনে থাকা ডায়াল নম্বর থেকে প্রত্যাক্ষদর্শী হুসাইন আল-আমিনের ভায়রা ভাই রফিকুল ইসলামকে ফোন করে জানান এই ফোনের মালিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মুকদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। খবর পেয়েই স্বজনরা মুকদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান। ততক্ষণে আল- আমিনের মৃত্যু হয়। তিনি আরো বলেন, পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আল-আমিন মারা গেলেও এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন মামলা করা হয়নি। ১ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ ১৮৭ জনকে আসামি করে ঢাকার বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি,আর মামলা দায়ের করেন আল- আমিনের দূরসম্পর্কের চাচা রহমান মাল। আদালতের আদেশে গত ২১ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখ ভাটারা থানা জি,আর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেন। আসামির তালিকায় রয়েছেন শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী, এমপি ছাড়াও সাধারণ মানুষ। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় ভাটারার ১০০ ফুট সড়কে গুলিতে আল- আমিনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে আল- আমিন নিহতের ঘটনায় মোজারুল ঢাকার আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে গত ২৭অক্টোবর ২০২৪ তারিখ হাতিরঝিল থানা মামলাটি নথিভুক্ত করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ আসামি করা হয়েছে ১৯৫ জনকে। এ মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাদী মোজারুলের দায়ের কৃত মামলার ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে পশ্চিম রামপুরা।

আইন বিশেষজ্ঞের মতে, দুটি হত্যা মামলায় ভুক্তভোগী একই হওয়ায় এটি আদালতেকে জানাতে হবে। দুটি মামলায় ঘটনাস্থল আলাদা আলাদা দেখানো হয়েছে। মামলায় ঘটনাস্থল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, ঘটনাস্থল প্রমান করা না গেলে মামলা টিকানো খুবই কষ্টকর।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি