1. Jahidksb@gmail.com : Jahid Hasan : Jahid Hasan
ডুমুরিয়ায় পতিত জমিতে বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ - খবর সকাল বিকাল - Khobor Sokal Bikal    
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১২:২০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
আশেকানে হক ভাণ্ডারী, শোকর-এ মওলা মঞ্জিলের বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি সম্পন্ন বগুড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রানু ও সম্পাদক কালাম আজাদ হাইমচর উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে মাইজভাণ্ডারী মানব কল্যাণ সংস্থার নবগঠিত ৪র্থ কার্যকরী  পরিষদের অভিষেক  ও আলোচনা সভা দুমকী কৃষি অফিসের উদ্যোগে পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস অনুষ্ঠিত গোপালগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কিশোর গ্যাং এর ৮ সদস্য আটক ‌পানছড়িতে অসহায় ও দুঃস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ালো বিজিবি মুন্সিগঞ্জ আব্দুল্লাহপুরে মহা-উৎসব রথযাত্রা উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার আমরা রাজনীতির নামে ব্যাংক-বীমা খুলে আত্মীয়স্বজনের চাকরি ভাগিয়ে নেইনি- চন্দন চিংড়ি চাষে বিপ্লব আনতে পারে হরিণা চিংড়ি

ডুমুরিয়ায় পতিত জমিতে বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৪৪ বার পড়া হয়েছে

শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা গ্রামের শিক্ষক শেখ জাহিদুর রহমান,২০ শতাংশ বরাতিয়া গ্রামের ইসলাম বিশ্বাস ২০শতক মাহাবুবুর বিশ্বাস ১৪শতক মেহেদী হাসান ১০শতক আজিজুর মোড়ল ১০সহ আরো অনেকে পতিত জমিতে বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদসহ মোট সাড়ে ৩হেক্টর পতিত জমিতে বিলে চাষের মধ্য দিয়ে এ উপজেলায় রিলে চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিলে চাষ হচ্ছে যখন একটি জমিতে একটি ফসল সংগ্রহের পর পরই আরেকটি ফসলের বীজ বুনে বছরে দুই বা ততোধিক ফসল উৎপাদন করা যায়, তখন তাকে বলে পর্যায়ক্রমিক বা রিলে ফসল চাষ। দুই ফসলের জমিতে তিনটি ফসল চাষ করার অন্যতম উপায় এ রিলে পদ্ধতিতে চাষাবাদ। এ পদ্ধতিতে একটি ফসল জমিতে থাকাকালীন বিনা চাষে অন্য একটি ফসল রোগণ করা হয়। যার ফলে অর্থ ব্যয় ও পরিশ্রম অনেক কম হয়। রিলে পদ্ধতিতে যে ফসলগুলো আবাদ হয় তার মধ্যে অন্যতম হল ধানের সাথে সরিষার চাষ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রিলে পদ্ধতিতে চাষাবাদ এ উপজেলায় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ মন্ডল জানান এ পদ্ধতিতে একজন কৃষক সরিষার চাষ করে খরচ বাদে প্রতি হেক্টর জমিতে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভবান হতে পারবে। ৭০ ৭৫ দিনের মধ্যে কৃষক তার ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। এছাড়া আমন এবং এবং বোরো চাষের মাঝখানে যে সময়টুকু কৃষকের জমি খালি বা পতিত পড়ে
আবাদ একটি ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে কৃষকও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন এবং দেশের ফসল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, এ মৌসুমে আমন চাষ শেষ হয়ে রবি ফসলের কার্যক্রম চলছে। ডুমুরিয়া উপজেলায় এ বছর সাড়ে হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে এরমধ্যে সাড়ে ৩ শত হেক্টর জমিতে এ বছর সর্বপ্রথম রিলে চাষের মাধ্যমে আবাদ শুরু হয়েছে। আর এ উপজেলায় রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদের মধ্য দিয়ে একটা নতুন সম্ভাবনার জায়গা তৈরি হয়েছে। আমন মৌসুমে ধান আবাদের পরে যখন জমি পতিত থাকে তখন এ সময়টা আমরা কৃষকদের রিলে পদ্ধতিতে সরিষার চাষে উদ্বুদ্ধ করেছি। রিলে চাষের মাধ্যমে কৃষকরা এখন থেকে বছরে দুইটা ফসলের পরিবর্তে তিনটা ফসল পাবে। এই পদ্ধতি গ্রহণের মধ্য দিয়ে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। আমন মৌসুমে ৭৫ ও ৮৭ জাতের ধান যেগুলো স্বল্প জীবনকালীন সেই ধান কেটে নেওয়ার ১০ দিন আগে জমির রস বা জো থাকা অবস্থায় এ বছর কৃষকদের আমরা বিনামূল্যে বিন-৯ জাতের সরিষার বীজ দিয়েছি। সেগুলি কৃষকরা জমিতে ছিটিয়ে দেওয়ার পর ধানটা কেটে নেওয়ার পর সারা দেশের ন্যায় দেশের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলীয় এলাকায় ডুমুরিয়া উপজেলা জুড়ে এ বছর সরিষার ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি। এ বছর ডুমুরিয়া উপজেলায় সরিষার আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং ফলন বেশ ভাল হয়েছে। দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। সয়াবিন তেলের মূল্য নিয়ে চলছে তেলেসমাতি।
এ জন্য কৃষক এবার সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছে। উপজেলা ব্যাপী টরি সরিষা -৭, বারি সরিষা- ১৪, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৯, বিনা সরিষা-৪, বিনা সরিষা-৯ সহ বিভিন্ন জাতের সরিষা আবাদ অনেক বেশি হয়েছে, ফলনও ভাল হয়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার সিংহভাগই আমদানিনির্ভর। আমদানিতে এগিয়ে সয়াবিন ও পাম অয়েল। এতে বছরে অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে সরকারের। তবে সরিষার উৎপাদন বাড়িয়ে এ ব্যয় অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। দেশে উৎপাদিত তেলের মধ্যে সরিষা শীর্ষে। এছাড়া সয়াবিন, সূর্যমুখীসহ দু’-একটি অপ্রচলিত তেলবীজের চাষ হয় সামান্য। দেশের ভোজ্যতেলের প্রায় ৬০ ভাগ আসে সরিষার তেল থেকে এবং এটিই আমাদের ভোজ্যতেলের প্রধান ফসল। বিভিন্ন জাতের সরিষা বীজে ৩৮ থেকে ৪৫ শতাংশ তেল থাকে আর বাকিটা খৈল। এই খৈলে ৪০ শতাংশ থাকে আমিষ। এই খৈল গৃহপালিত পশুর জন্য পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে প্রতি হেক্টরে সরিষার ফলন হয় ১০০০ থেকে ১৫০০ কেজি। আমন ও বোরো চাষের মাঝের সময়ে বড় অংশ জমি পতিত থাকে। এ পতিত জমি ব্যবহার করে দেশে তেলবীজের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা অর্ধেকে আনতে ৩ বছর মেয়াদি রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছে সরকার। রোডম্যাপ বাস্তবায়নে এরই মধ্যে বেশ কিছু তেলজাতীয় ফসলের সঙ্গে সরিষার আবাদ ব্যাপকভাবে বাড়ানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। আর তাতে সুফলও মিলতে শুরু করেছে। এ বছর সারাদেশের ন্যায় ডুমুরিয়া উপজেলায়ও ব্যাপকভাবে বেড়েছে সরিষার চাষাবাদ। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতার কারণে দেশে ভোজ্যতেলের বাজারও গত বছর থেকে বেশি অস্থিতিশীল। ভোক্তারা তেল কিনেছেন রেকর্ড দামে। সেটার একটি প্রভাব পড়েছে সরিষা চাষে। গত এক বছরের তুলনায় সরিষা বীজের দাম প্রতি মণে বেড়েছে প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। সে কারণেও চাষিরা সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। সয়াবিন ও পাম তেলের দাম দ্রুত বাড়ায় দেশে সরিষার তেলের চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সচেতন অনেক মানুষ এখন সরিষার তেল বেছে নিচ্ছেন। এখন সয়াবিনের দাম যে ভাবে বাড়ছে তাতে আবারও মানুষ সরিষার তেলের প্রতি ঝুঁকছে। যদি সরিষার উৎপাদন বাড়ানো যায় তাহলে আগের মতো মানুষ আবার সরিষার তেলই খাবে। সরিষা চাষে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাতের সরিষা চাষ করে ফলন যেমন বেশি হচ্ছে তেমনি দামও ভাল পাচ্ছে কৃষক। বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধি, সরিষার ভালো দাম পাওয়া, উন্নত জাতের কারণে স্বল্পসময়ে অধিক ফলন, কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে ফসল পাওয়ায় এখন সরিষা চাষে দেশের কৃষক বেশ আগ্রহী হচ্ছে। উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে আমন ও বোরো চাষ হয়। দুই ধান চাষের মাঝখানের মৌসুমে প্রায় দুই মাস জমি পতিত থেকে যায়। এ বছর এ দুই ফসলের মধ্যে প্রচুর এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে সরিষা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন হলুদ রঙের সরিষা ফুলের সমারোহ। সরিষা আবাদের পাশেই মৌ চাষের প্রচলনও বেড়েছে। মাঠের পাশে বাক্স বসিয়ে মৌ চাষিরা মধুও সংগ্রহ করছেন। ফলে সরিষা চাষি ও মৌচাষি উভয়ই লাভবান হওয়ায় সরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। বাজার ফেরত ক্রেতাদের মতে দেশে তেল উৎপাদন বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট, ভোজ্যতেলের সিন্ডিকেটের কারণে যে নিয়ন্ত্রণহীন বাজার তাও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে নিজের উৎপাদিত তেলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, বিনা চাষে উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সাড়ে ৩ শত হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। তিনি আরো জানান এবং চলতি মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। তিনি বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষক যেন অধিক ফলন পেতে পারে এ ব্যাপারে সার্বক্ষনিক কৃষকের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। আশা করছি এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষা চাষে বাম্পার ফলন পাবে চাষিরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© ২০২৪  সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত 
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি