স ম জিয়াউর রহমান :
‘১৯৭১’ বাঙালির সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। সে সময় স্বাধীনতাবিরোধীদের একটা অংশ সুনির্দিষ্টভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধ করে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের বিরোধিতা করে। ইতিহাসের সেই দায় শোধ করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)-এ মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন। যে ট্রাইব্যুনালে ঘৃণ্য মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, তার প্রতিশোধ নিতে সেই ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের প্রহসনমূলক বিচারের আয়োজন করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনাল গঠন ও তাতে প্রহসনমূলক বিচারের আয়োজন সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। বর্তমান তথাকথিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। অগণতান্ত্রিক এই সরকারের প্রতি জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই। ক্ষমতা দখল এবং সেটা টেকসই করার জন্যে সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষার্থী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট নেতাকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ বুদ্ধিজীবী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায় ও জাতি গোষ্ঠীর মানুষদের হত্যা করা হয়। যা গণহত্যার শামিল। গণহত্যাকারীদের মদদদাতারা আবার বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের দায়ভার বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাসহ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তাদের উপর চাপিয়ে প্রহসনমূলক বিচারের নাটক মঞ্চায়নের অপচেষ্টা করছে। যে সরকারের প্রতি জনগণের কোনো ম্যান্ডেট নেই সেই সরকারের একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর বিচার করার কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই। এক দিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আড়াই শতাধিক হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরবর্তীতে দেখা গেছে, মৃতদের অনেকেই জীবিত আছে এবং এ থেকে বোঝা যায়, শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বাছবিচারহীনভাবে হত্যা মামলা সাজানো হয়েছে। অন্যদিকে, এসব ভিত্তিহীন হত্যা মামলার কয়েকটি আবার অবৈধভাবে পুনর্গঠিত আইসিটি ট্রাইব্যুনালে নিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে একটি রাজনৈতিক মতাদর্শকে কোণঠাসা করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। একই ধরনের অপরাধে দুই ধরনের বিচারের অপপ্রয়াসেই জাতির কাছে আজ স্পষ্ট যে, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশপ্রণোদিত হয়ে অবৈধ সরকার প্রহসনমূলক বিচারের মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মানবাধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পন্থী ও প্রগতিশীলধারার রাজনীতির পথকে রুদ্ধ করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অবৈধ ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকারের হীন অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং বিশ্বাস করি, সচেতন দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর দাঁতভাঙা জবাব দেবে, ইনশাল্লাহ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।