স ম জিয়াউর রহমান :
জাতীয় পতাকা অবমাননা’র কথিত ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন আদালত নামঞ্জুর করায় নিন্দা জানাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ।
গত ২৫ নভেম্বর,২০২৪, সোমবার বিকালে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) রাজধানী ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করেন।
উল্লেখ্য,গত ৩০ অক্টোবর রাতে চট্রগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখিত, রাষ্ট্রদ্রো’হ মা’মলা রাষ্ট্র করবে, ব্যক্তির করার বিধান নেই। যেখানে মামলাটিই মিথ্যা, বানোয়াট, ষড়যন্ত্রমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত সেখানে গ্রেফতার অপ্রাসঙ্গিক বলে যুবলীগ মনে করে।
গত ২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম আদালতে শুনানি শেষে এক আদেশ দেন। যদিও শুনানিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর পক্ষে অংশ নেওয়া ১১ আইনজীবী প্যানেল জানিয়েছে এই মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চিন্ময় দাসকে জড়ানো হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আদালত চাইলে জামিন দিতে পারতো, জামিন দেওয়ার মতো যথেষ্ট ভিত্তি ছিলো। যেটিকে জাতীয় পতাকা বলে দাবি করা হচ্ছে সেটিতে ‘চাঁদ তারা’ ছিল। বাংলাদেশের পতাকা ‘লাল সবুজ’। তাই চট্টগ্রামের বহিষ্কৃত ওয়ার্ড বিএনপির নেতার করা মামলায় সংগঠনের মুখপাত্রকে আটকে রেখে সনাতনী সমাজের ‘৮ দফা ‘যৌক্তিক দাবী’কে অস্বীকার করার প্রয়াস চালাচ্ছে বর্তমান অবৈধ সরকার।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আর মনে করে, সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ এর কারনে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। দীর্ঘদিন সঠিক তদন্ত ব্যতিরেকে একজন ধর্মীয় গুরুকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার মাধ্যমে এই সরকার যে ফ্যাসিবাদী চরিত্রের তা জাতির সামনে মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। একইসাথে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা মামলাটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছে।
পক্ষান্তরে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ৭২ সালে আমাদের একটি সংবিধান বানাইছে, এটা স্রেফ একটা গার্বেজ। যা রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে মামলা হওয়া উচিত কিন্তু সরকার তা না করে রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দিকে উৎসাহিত করছে।
আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বর্তমান অবৈধ সরকার সকল মানুষের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক মতের পাশাপাশি ধর্মীয় বিশ্বাস ও মতপ্রকাশ এবং আচার-অনুষ্ঠানের উপর এক অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কোনো সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন আজ বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। সর্বত্র সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে। এই সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে সনাতনী ধর্মাবলম্বীসহ সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, ভূমি দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস সহ নানাবিধ জীবননাশী অপকর্মকাণ্ড আজও অব্যাহত রেখেছে। অবিলম্বে যুবলীগ এ-হেন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি করছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাঁর পক্ষে আদালতে শুনানি করতে পারেন এমন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদেরকেও হয়রানিমূলক মামলার আসামি করা হচ্ছে। ফলে মামলায় অন্য আসামিদের জামিনের পক্ষে যেসব আইনজীবী ওকালতনামা দিতে যাচ্ছেন তারাই এক ধরনের চাপ ও হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। যা মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লংঘন। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু।