বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) থেকে গুমের অভিযোগে দ্বিতীয়বার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তবে এই পরোয়ানার বিশ্বাসযোগ্যতা ও আইনি সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি। তিনি এই অভিযোগের যথার্থতা এবং প্রমাণের অভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সাবেক এই হাইকমিশনার উল্লেখ করেছেন যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএন হিউম্যান রাইটস কমিশন এই বিষয়ে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পায়নি।
এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বীণা সিক্রি বলেন, “শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এটি দ্বিতীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, যা গুমের অভিযোগে জারি করা হয়েছে। প্রথমটি ছিল তথাকথিত ও সাজানো গণহত্যার অভিযোগে, তবে সেসময়ও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা তথ্য দেওয়া হয়নি। ইউএন হিউম্যান রাইটস কমিশনকে যখন জুলাই-আগস্টে গুম হওয়া মানুষদের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়, তারা জানায়, কোনো এফআইআর বা প্রমাণ তাদের কাছে জমা দেওয়া হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “প্রত্যর্পণের আবেদন একটি দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া। এ ধরনের অভিযোগের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রমাণ প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান মামলায় কেবল কিছু নাম উল্লেখ করে বলা হচ্ছে যে তারা গুম হয়েছেন। র্যাবকে এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে।”
র্যাব গঠনের প্রসঙ্গে বীণা সিক্রি বলেন, “র্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়, এবং তখন থেকেই তাদের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ ওঠে। এটি দীর্ঘদিন ধরে একটি রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে রয়েছে। কিন্তু এখন হঠাৎ করে মামলা তৈরি করা এবং ১২ জনকে অভিযুক্ত করা অযৌক্তিক বলে মনে হয়।”
এর আগে গত সোমবার শেখ হাসিনা, তার সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন এবং এরপর থেকে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।