শাহবাগে ইবতেদায়ি শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ এবং জলকামানের ব্যবহার কেবল নিন্দনীয় নয়, এটি একধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। যাঁরা শিশুদের হাতে বই তুলে দিয়ে শিক্ষার আলো ছড়ান, তাঁরা যদি রাস্তায় হেনস্তা হন, তবে এই রাষ্ট্রের সভ্যতা আর মানবিকতার জায়গা কোথায়?
ইবতেদায়ি শিক্ষকরা কোনো অপরাধী নন। তাঁরা নিজেদের ন্যায্য অধিকার চেয়েছিলেন—বাঁচার মতো একটা বেতন, প্রাপ্য মর্যাদা আর ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা। এরা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত শিক্ষক। বছরের পর বছর তাঁরা অভাব-অনটনে জীবন কাটান, অথচ তাঁদের কণ্ঠরোধ করতে সরকারের এ বর্বর দমনপীড়ন!
লাঠির আঘাত আর জলকামানের বর্ষণে শিক্ষকদের নিপীড়ন এ দেশের লজ্জা। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা কি এভাবেই চলবে? শিক্ষকদের প্রতি এ ঘৃণ্য আচরণ শুধু তাঁদের মর্যাদা হরণ করে না, এটি গোটা জাতিকে অবমাননা করে। আজ যে শিক্ষকেরা রাস্তায় রক্তাক্ত, তাঁদের হাতেই গড়ে ওঠে একটি জাতির ভবিষ্যৎ। রাষ্ট্র কি এটা ভুলে গেছে?
এই অমানবিকতার প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি। শিক্ষকদের ওপর আঘাত মানে জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া। আমরা সরকারের কাছে স্পষ্ট দাবি জানাই—ইবতেদায়ি শিক্ষকদের অবিলম্বে তাদের অধিকার দিতে হবে। তাদের প্রতি করা এই অপমানের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং লাঠিচার্জের ঘটনায় দায়ীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
একটি জাতি তখনই উন্নতি করতে পারে, যখন সে তার শিক্ষকদের সম্মান দিতে শেখে। যদি রাষ্ট্র এ অবহেলা আর দমননীতি চালিয়ে যায়, তবে এ জাতি তার ভবিষ্যৎ হারাবে। শিক্ষকদের দাবি পূরণ না করলে রাস্তায় নেমে পুরো জাতি এর জবাব দেবে—এটাই হোক শেষ কথা।
মো: তানজিম হোসাইন
শিক্ষক ও সাংবাদিক