মোঃনাজমুল মোরেলগঞ্জঃ
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং নবায়নযোগ্য শক্তির প্রসারের দাবিতে বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জে জলবায়ু ধর্মঘট ও পদযাত্রা আয়োজন করেছে ইয়ুথনেট গ্লোবালের স্থানীয় তরুণ জলবায়ু কর্মীরা।
শুক্রবার সকাল ১০টায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি দুপুর ১২টায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। রঙিন ব্যানার, পোস্টার এবং স্লোগানে মুখরিত ছিল সমাবেশস্থল। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী তরুণরা “ভুয়া সমাধান নয়, নবায়নযোগ্য শক্তি চাই”—এমন স্লোগানের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “জ্বালানি নীতিতে নবায়নযোগ্য শক্তিকে অগ্রাধিকার না দিলে দেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে।” তারা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ও অর্থায়ন বন্ধ করে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ইয়ুথনেট গ্লোবাল বাগেরহাট জেলার জেলা সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল শিহাব ইমন বলেন, “বাংলাদেশের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য শক্তিকে ভিত্তি করে একটি ন্যায্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি পরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি।” তিনি আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনে উন্নত দেশসমূহের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে এখন সময় এসেছে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের।”
বক্তারা সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) সংশোধনের দাবিও জানান, কারণ এটি বাস্তবায়িত হলে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার আরও বাড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাদের মতে, এই পরিকল্পনা বর্তমান জলবায়ু লক্ষ্য ও পরিবেশ সংরক্ষণের সাথে সাংঘর্ষিক।
এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইয়ুথনেট গ্লোবালের খুলনা বিভাগীয় সহ-সমন্বয়কারী নাসরিন আক্তার, বাগেরহাট জেলা সহ-সমন্বয়কারী রাহাতুল ইসলাম, সদস্য মেহরাব আলম অপি, নুরুন্নাহার স্বর্ণা, জোসনা আক্তার প্রমুখ।
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, “জলবায়ু সংকট বিবেচনায় নিয়ে শক্তি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা আবশ্যক। আইইপিএমপিতে স্বচ্ছতা ও স্থানীয় বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটানো জরুরি, যাতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সুবিধা নয়, বরং দেশের পরিবেশ ও ভবিষ্যৎকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।”
তরুণ জলবায়ু কর্মীদের মতে, বাংলাদেশের মতো জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার দেশগুলোর উপর আরোপিত ঋণ অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে বাতিল করা উচিত—এটাই প্রকৃত ন্যায্যতা এবং জলবায়ু ন্যায়ের প্রতিফলন।