মোঃ মুকিম উদ্দিন জগন্নাথপুর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় ২০ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এই হাওরের কৃষি পরিবারের সারা বছরের স্বপ্ন বোরো ফসল। এখন দুদিনের বৃষ্টি ও ঝড়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এখন ভারী বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর।
কৃষকের শ্রমে-ঘামে হাওরে ফলানো ধান গোলায় ওঠার কথা বৈশাখে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাস শুরু। এ সময় হাওরে বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যার আশঙ্কা থাকে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে কৃষকের সর্বনাশ।
জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরপাড়ের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। ধান প্রায় পেকে আসছে মাত্র—এ অবস্থায় ভারি বৃষ্টি হলে সর্বনাশ। বুঝতে পারছি না এবার কী হবে।’ অন্য এক কৃষক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিনের পরিস্থিতিতে কৃষকদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ভরা বর্ষার মতো বৃষ্টি হয়েছে। এখনো সব স্থানে ধান পুরোপুরি পাকেনি। তার আগেই যদি হাওরে পানি আসে, তাহলে কপাল পুড়বে কৃষকের।’
ধানগাছে ফুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি উপকারী। এতে পুষ্ট হয় চাল। ফসল রক্ষা বাঁধগুলোকেও দুর্বল করে। এতে হাওরের ফসল ঝুঁকিতে পড়বে। এদিকে বৃহস্পতিবার দিনে ঝড় ও ব্যাপক বৃষ্টি হয়। জগন্নাথপুরের এক জন কৃষক জানালেন, যেভাবে ঝড়বৃষ্টি পড়েছে, তাতে ফসলের বেশ ক্ষতি হবে। ভারতের উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় আগাম বন্যা পাহাড়ি ঢলের আশংন্কায় দ্রুত হাওরের পাকা ধান কাটতে কৃষকদের অনুরোধ জানিয়েছেন প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। এসময় জেলা প্রশাসক গণমাধ্যমকে জানান, আমরা আবহাওয়া পূর্বাভাস ও বন্যা সতর্কিকরন কেন্দ্রের একটি তথ্য পেয়েছি ১৮ এপ্রিল থেকে ভারতের মেঘালয় চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি সুনামগঞ্জের অভ্যন্তরে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদ নদীর পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি হাওরের অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে আতঙ্কিত না হয়ে আমরা কৃষকদের বলবো হাওরে পাকা ধান যেনো কাল বিলম্ব না করে কেটে ফেলেন। ধান কাটতে গেলে শ্রমিকদের সংকট দেখা দিলে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি জানিয়েছে তারা তথ্য পেলে সহযোগিতা করবেন। এছাড়াও কৃষি বিভাগ কৃষকদের সেবায় সার্বক্ষনিক সচেষ্ট রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ফসল রক্ষা বাঁধে নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট পিআইসিদের নির্দেশনা দেয়া আছে। সমস্যা হলে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করা হব। বোরো ধান ঘরে তুলার আগ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।